এই ‘পালসার বাবু’র ক্রেতা পাবেন পালসার বাইক উপহার!

  10-07-2019 02:48AM

পিএনএস ডেস্ক : মণিরামপুরের ইত্যা গ্রামের ক্ষুদ্র গরু ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া মোল্লা। গরু ব্যবসার পাশাপাশি শখের বসে একটি করে ষাঁড় পোষেন তিনি। গত তিন বছর ধরে তার পোষা ষাড়টির এখন দাম ১২ লাখ টাকা। তিনি ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন ‘পালসার বাবু’। ওই নামেই বাড়ির সবাই ডাকেন তাকে। এবারের কোরবানিতে গরুটি বিক্রি করতে চান তিনি। ক্রেতাকে গরুর সাথে পালসার উপহার দেওয়ার ঘোষণাও তার।

তবে, ইয়াহিয়া নিজে ষাঁড়টির যত্ন নিতে পারেন না। সবসময় সন্তানের মত ষাঁড়টিকে আগলে রেখেছেন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। এই কাজে নেননি প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কোন পরামর্শ। অভাবের সংসারে এই ষাঁড়টি মনোয়ারার একমাত্র সম্বল।

এদিকে গরুর দাম ১২ লাখ টাকা, লোকমুখে এমন কথা শুনে ‘পালসার বাবু’কে দেখতে ইয়াহিয়ার বাড়িতে পড়ছে উৎসুক জনতার ভিড়। প্রতিনিয়ত খুলনা, পাইকগাছা, শার্শা, ঝিনাইদহ, যশোরসহ উপজেলার দূরদূরন্ত থেকে শতশত নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর-কিশোরীরা ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে মোবাইলে ধারণ করছেন ষাঁড়টির ছবি। আবার বাড়িতে আসা উৎসুক জনগণকে সাধ্যমত আপ্যায়নও করেন ইয়াহিয়া।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে সরেজমিন ইয়াহিয়ার বাড়িতে গিয়ে উৎসুক মানুষের ভিড় দেখা যায়।

এসময় কথা হয় উপজেলার ঘুঘুরাইল গ্রামের ইনতাজ আলীর সাথে। তিনি বলেন, লোকমুখে ১০ লাখ টাকার গরুর কথা শুনে আইছি। এতবড় গরু জীবনে প্রথম দেখলাম।

কথা হয় গাবুখালী গ্রামের সুনিতা হাওলাদারের সাথে। তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে দুই লাখ টাকার একটা ষাঁড় দেখিলাম। ১০ লাখ টাকা গরুর দাম! এমন কথা শুনে দেখতি আইছি। কৃষ্ণবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধা সুকৃতা মণ্ডল বলেন, গতকাল আমার শ্বাশুড়ি ও জারা মিলে গরু দেখতি আইল। তাগের (তাদের) মুখে শুইনে এখন আইছি। এবার গরু জীবনে চোহি (চোখে) পড়িনি।

ঘুঘুরাইল গ্রামের ইদ্রিস আলী বলেন, ১২ লাখ কেন ১৫ লাখেও এই গরু বিক্রি হতে পারে। মানুষ দাম দেখবে না, চেহারা দেখে এই গরু কিনবে। মনোয়ারা বেগম বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে গরু দেখতে বাড়িতে লোকজন আশা শুরু করেছে। গত দশ দিন ধরে মানুষের ভিড় বেড়েছে। বিকেল হলে উঠনে লোক ভরে যায়।

ইয়াহিয়া বলেন, আমি ক্ষুদ্র গরুর ব্যবসায়ী। ১৯৯৬ সাল থেকে একটা করে বড়ান জাতের (শংকর) গরু পুষে আসছি। ৪৫ হাজার টাকায় তিন বছর আগে ‘হলেস্টিয়ান’ জাতের এই গরুটা কেনা। শখ করে ওর নাম দিছি ‘পালসার বাবুু’। গত বছর সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দাম হইল। বিক্রি করিনি। ঢাকার একটা পার্টি (গরু ব্যবসায়ী) সাড়ে আট লাখ দাম বলেছে। গরুর গায় বিশ মণ মাংশ আছে। এবার গরুর দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা। ওই দামে গরু বিক্রি করতে পারলে ক্রেতাকে খুশি হয়ে পালসার মোটরসাইকেল উপহার দেব।

ইয়াহিয়া বলেন, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কোন পরামর্শ ছাড়াই গরুটা আমি পুষছি। ছয় কাঠা জমিতে ঘাস লাগানো আছে। সেই ঘাস আর খইল ও ভুষি খাওয়াইয়ে গরু এত বড় করেছি।

ফ্যানের বাতাস ছাড়াতো বড় গরু পোষা যায়না শুনেছি। আমি কিন্তু একদিনের জন্যও গরুরে ফ্যানের বাতাস খাওয়াইনি। মণিরামপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আবুজার সিদ্দিকী বলেন, কাশিমনগর ইউনিয়নে একটা বড় গরু আছে শুনেছি। কিন্তু আমি সেই গরু কোন দিন দেখিনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন