বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যসংকট চরমে

  16-07-2019 04:09PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : বন্যা ঝেঁকে বসেছে। দেশে বর্তমানে বন্যাকবলিত জেলার সংখ্যা ১৫টি। প্রতি মুহূর্তে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা বিরাজ করছে। বন্যার্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষের দুর্ভোগ চরমে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

টানা প্রবল বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির স্তর বেড়েই চলেছে। যে কারণে প্রতি মুহূর্তে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এর মধ্যেই চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় জনমনে উদ্বেগ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। পাহাড় ধসে ইতিমধ্যে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

এদিকে আগামী ৭২ ঘণ্টায় যমুনা ও পদ্মার পানি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। নদী ও বাঁধ ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি রূপ নেওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে।

শুরুতে বন্যা কবলিত জেলার সংখ্যা ছিল দুটি। পরে এ সংখ্যা আটে গিয়ে ঠেকে। এরপর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০টিতে। বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে ১৫টি হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ বিপাকে পড়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মতে, এ সংখ্যা ১৫ লাখ। এদিকে সোমবার কুড়িগ্রাম এবং জামালপুরে পানিতে ডুবে ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

অতি বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরে যেতে বলা হচ্ছে। রাঙামাটির চন্দ্রঘোনায় পাহাড়ধসে প্রাণ গেছে দুজনের। প্রশাসন নিজেও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিচ্ছে। আপাততত তাদের সাইক্লোন শেল্টারে রাখা হয়েছে।

বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যাকবলিত এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বিরাজ করছে।বানভাসি মানুষ নিরুপায় হয়ে বন্যার পানি ব্যবহার করছে। এতে পেটের পীড়া, ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ নানা ধরনের রোগের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব এলাকায় মেডিক্যাল টিম কাজ করলেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগজীবাণু নিয়ে তারাও উদ্বিগ্ন।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির চরম অননতি ঘটেছে। এসব এলাকার নদ-নদীর পানি এখনো বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ১৫টির মধ্যে ১৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। যমুনা, তিস্তা ও সুরমাসহ বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। পানিবন্দি আছে লাখ লাখ মানুষ। অনেকে ঘরের চালে অবস্থান করছে। পানিবন্দী প্রায় ২০ লাখ মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও তীব্র খাবার সংকটে দিশেহারা।

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন