চলতি মাসেই রেলে যুক্ত হচ্ছে ২৬ মিটারগেজ কোচ

  20-07-2019 07:55PM

পিএনএস ডেস্ক : বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৫০ কোচ আমদানি প্রকল্পের অধীনে এবার প্রথমবারের মতো আসছে ২৬টি মিটারগেজ কোচ। চলতি মাসের মধ্যে এসব কোচ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে।
কোচগুলো আসার পর জিআইবিআর ইন্সপেকশন ও ট্রায়াল রানের পর রেলওয়ের বিভিন্ন ট্রেনে যুক্ত করা হবে। তাছাড়া আমদানি করা মিটারগেজ কোচগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো থাকবে উন্নতমানের বায়ো টয়লেট সুবিধাও।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধাপে ৫০টি ব্রডগেজ কোচ এসেছে এবং পর্যায়ক্রমে অন্য কোচগুলো আগামী বছরের জুনের মধ্যেই দেশে পৌঁছাবে বলে জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. শামছুজ্জামান।

তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম চালানে ১৫টি ব্রডগেজ কোচ বাংলাদেশে আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। এরপর একমাসের বিরতিতে ফেব্রুয়ারিতে ১৮টি কোচ এবং তৃতীয় চালানে ১৭টি ব্রডগেজ কোচ দেশে আসে।

এবার চলতি মাসেই মিটারগেজ কোচ আসবে দেশে। এরপর আরও ৮ দফায় আগামী বছরের জুনের মধ্যে সবগুলো মিটারগেজ কোচ দেশে পৌঁছাবে। এর আগে আসা ৫০টি ব্রডগেজ কোচও বায়ু টয়লেট যুক্ত ছিল। তবে ব্রডগেজ কোচের পর মিটারগেজ কোচগুলো দেশে পৌঁছালে বাংলাদেশ রেলওয়ের কোচ সংকট অনেকাংশে কমে আসবে বলে জানান তিনি।

এদিকে আমদানির বহরে থাকা ২০০ মিটারগেজ ও আমদানি হওয়া ৫০ ব্রডগেজ কোচের রেক সাজাতে এরই মধ্যে একটি প্রস্তাব দিয়েছে রেলের পরিবহন বিভাগ। পূর্বতন কোচগুলোর সাথে সমন্বয় করে এমজি কোচগুলো আমদানি করায় পূর্বাঞ্চল রেলের বেশকিছু আন্তঃনগর ট্রেনে নতুন কোচ সংযোজনের পরিকল্পনা করছে রেলওয়ে।

এর মধ্যে বিজয় এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা, উদয়ন, উপকূল, সূবর্ণ, চট্টলা, যমুনা, উপবন, জয়ন্তিকা ট্রেনের রেকগুলো নতুন কোচ দিয়ে সাজানো হবে। বর্তমানে চট্টলাসহ রেলের বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন দ্বিতীয় শ্রেণির কোচ দিয়ে চলাচল করে। চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট রুটের ট্রেনগুলোর কোচও পুরোনো। নতুন ক্রয় করা কোচ দিয়ে পুরোনো রেক নতুন করে সাজানো হবে বলে জানিয়েছে রেলের পরিবহন বিভাগ।

রেলের ২৫০ কোচ আমদানি প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (উন্নয়ন) আলহাজ্ব হারুন-অর-রশীদ বলেন, প্রকল্পের অধীনে জানুয়ারি থেকেই নতুন কোচগুলো বাংলাদেশে আসা শুরু হয়। আগামী ২৩ জুলাই ইন্দোনেশিয়ান কোম্পানি পিটিইনকার কারখানা থেকে কোচগুলো জাহাজে উত্তোলন করবে বাংলাদেশের উদ্দেশে। আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্টের মধ্যে কোচগুলো কমিশনিং করা হবে। কোচগুলোর মধ্যে ৬টি ডব্লিউজেসি, ৪টি ডব্লিউজেসিসি, ১৩টিডব্লিউইসি, ২টি ডব্লিউইসিডিআর এবং ১টি কোচ ডব্লিউপিসি।

সম্প্রতি আমদানিকৃত কোচগুলোর জিআইবিআর (গভর্মেন্ট ইন্সপেকটর অব বাংলাদেশ রেলওয়ে) অনুমোদনের ব্যবস্থা গ্রহণে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তবে রেলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমদানিকৃত এসব কোচে বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের চেয়েও কিছুটা বিলম্বে কোচগুলো বাংলাদেশে আসছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কোচগুলো তৈরির কাজ শেষ হলে ২০১৮ সালের শেষ দিকে প্রকল্পের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উৎপাদনকারী ইন্দোনেশিয়ান কোম্পানি পিটিইনকার কারখানায় পরিদর্শন করে। ৮ দিনের ওই সফরে বিভিন্ন টাইপের কোচের নকশা ও প্রস্তুতকৃত একটি করে কোচ পরীক্ষা করে দেখে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। অর্ডার দেওয়ার সময় যে ধরনের সুবিধা চাওয়া হয়েছিল সে ভাবেই কোচগুলো তৈরি হচ্ছে কিনা পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন প্রদানের পরই বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য বাণিজ্যিক ভাবে কোচ তৈরির কাজ শুরু করে কোম্পানিটি।

শুরুতে সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৫টি এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ব্রডগেজ কোচগুলো বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিবেচনায় একমাস বিলম্বে এসব কোচ বাংলাদেশে সরবরাহ শুরু করে। তবে শেষ দিকে বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় আরও কয়েক মাস পিছিয়ে যায় কোচ সরবরাহ।

২৫০ কোচ আমদানিতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) দিচ্ছে ১ হাজার কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে ৩৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি কোচ আমদানিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের খরচ হচ্ছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। তবে বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করায় কোচ প্রতি ব্যয় আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন