ভোগান্তি আর বিড়ম্বনায় ভরা ঈদ

  17-08-2019 06:00PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ভোগান্তি কমেনি ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা যাত্রীসাধারণের। আবারও তারা ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের শিকারে পরিণত হন। আজও যশোর খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের বেশির ভাগ ট্রেনই নির্দিষ্ট সময়ের ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকায় পৌঁছে। এতে ট্রেন যাত্রীদের বিড়ম্বনা ছিল চরমে। ঈদ ঘরে ফেরা যে বিড়ম্বনা দিয়ে শুরু, শেষেও একই বিড়ম্বনা পোহাতে হয় যাত্রী সাধারণের।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তি পোহান ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থল ঢাকায় ফেরা মানুষজন। কমলাপুর স্টেশন, রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, গাবতলী-মহাখালী-সায়েদাবাদ-গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালগুলো ঢাকায় ফেরা মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল। ঈদের খুশিতে নাড়ীর টানে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ করতে যাওয়া মানুষগুলো যেতে যেমন দুর্ভোগ পোহান আসতেও তেমনটির সম্মুখীন হন।দুর্ভোগ-ভোগান্তি যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না।

ঈদের পর সরকারি অফিস খোলা হয় ১৪ আগস্ট। সেদিন সচিবালয়সহ ঢাকার অফিসগুলো ছিল অনেকটা ফাঁকা। উপস্থিতি ছিল খুবই কম। পরদিন ১৫ আগস্ট সরকারি ছুটি থাকায় এবং এর পরের দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি অনেকেই সে সুযোগ নেন। সপ্তাহখানেক টানা ছুটি কাটিয়ে বাঁধভাঙা জোয়ারে মতো ঢাকার কর্মস্থলে ছুটছেন সরকারি কর্মজীবীরা। পাশাপাশি অন্যরাও।

এবারের ঈদে বাড়ি যাওয়ার পথে ভোগান্তি পড়েন ট্রেন ও বাসের যাত্রীরা। ট্রেনের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। নির্দিষ্ট সময়ের ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত দেরিতে ট্রেন ছেড়ে যায়। এমনকি শেষ পর্যন্ত ট্রেনের যাতায়াত বাতিল করা হয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে, আরিচা ও মাওয়া ফেরিঘাটে যানজটে পড়ে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহান। তবে ভাগ্য ভালো ছিল, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও সিলেটের যাত্রী সাধাণের। তারা এবার যানজটহীনভাবে যাতায়াতে সক্ষম হন।

দক্ষিণাঞ্চলের কিছু লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। আর নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক ঘন্টা বিলম্বের কারণে ভোগান্তিতে পড়া ট্রেনযাত্রীরা ক্ষোভ জানান। একইভাবে ফিরতি পথে বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগও পাওয়া গেছে। ভেতরে মোড়া দিয়ে বসিয়ে এবং দাঁড়িয়েও যাত্রী বহন করা হয়।

ঈদে বাড়ি যাতায়াতে যেমন ট্রেনের রেকর্ড শিডিউল বিপর্যয় ঘটে, তেমনি কোরবানির চামড়ার দামের ক্ষেত্রেও ঘটে মারাত্মক বিপর্যয়। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে একই কথা বলা যায়। ডাক্তাদেরও ঈদের খুশি ও ছুটি মাটি হয় ডেঙ্গু রোগীদের সেবায়। কোরবানির চামড়ার সঠিক দাম না পেয়ে এতিম-মিসকিনসহ গরিব মানুষগুলোর ভাগ্যে যেমন বিপর্যয় নামে, সিন্ডিকেটের কারণে তেমনি বিপর্যয়ে পড়েন চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

ঈদের সরকারি অফিস খোলার প্রথম দিনও উপস্থিতির ক্ষেত্রে বিপর্যয় ঘটেছে বলে মনে করে পর্যবেক্ষক মহল। প্রায় সব ক্ষেত্রে বিপর্য দিয়ে শুরু এবং শেষ হয় এ ঈদ-উল আযহার পর্বগুলো। আর যেন এমনটা না ঘটে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আগাম সতর্ককতা অবলম্বন সময়ের দাবি বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন