হঠাৎ ঢাকায় কেন মিন্নি?

  22-09-2019 11:17AM

পিএনএস ডেস্ক: বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি চিকিৎসা ও আইনি পরামর্শের জন্য ঢাকায় এসেছেন। গতকাল শনিবার মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের সঙ্গে বরগুনা থেকে লঞ্চ যোগে ঢাকায় আসেন। সঙ্গে তার এক নানা ও এক আত্মীয়ও রয়েছেন।

তবে হাইকোর্ট কর্তৃক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার নিষেধাজ্ঞা থাকায় গতকাল সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলেননি মিন্নি।

পরে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সাংবাদিকদের জানান, ‘মিন্নি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। শরীরে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি।’

মিন্নির বাবার অভিযোগ, তার মেয়েকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ নির্যাতন করেছে। মিন্নির দুই হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা। পাশাপাশি রিফাত শরীফ হত্যায় জড়িয়ে পুলিশ চার্জশিট দেয়ায় দুশ্চিন্তা ও হতাশায় ভুগছে মিন্নি।

ঢাকায় উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করা আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাবেন। একইসঙ্গে মিন্নির প্রধান আইনজীবী জেড আই খান পান্নার সঙ্গে অভিযোগপত্রের ব্যাপারে পরামর্শ করবেন বলেও জানান মিন্নির বাবা।

চলতি বছরের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে নিহতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে প্রথমে ১২ জনের নাম ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ্য করে বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর মিন্নির সঙ্গে খুনি নয়ন বন্ডের বিভিন্ন ভিডিও, অডিও ও ছবি ভাইরাল হলে তাকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ১৬ জুলাই সকালে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯ টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখন স্বামী রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

এর পর গত ২৯ আগস্ট শর্তসাপেক্ষে মিন্নির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। ৩ সেপ্টেম্বর জামিনের আদেশের কপি বরগুনার আদালতে পৌঁছালে ওইদিনই বিকেলে কারামুক্ত হন মিন্নি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন