আমরা উন্নয়ন করেছি দুর্নীতিতে : সুলতানা কামাল

  09-10-2019 06:10PM

পিএনএস ডেস্ক : ‘দুর্নীতিতে আমরা উন্নয়ন করেছি’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘যেটার কিছু কিছু নমুনা এখন বের হয়ে আসছে। শুধু ক্যাসিনোকেন্দ্রিক শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। ক্ষমতা দেখিয়ে মানুষের ওপরে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, ব্যাংক লুট করা হচ্ছে, শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি হচ্ছে।’

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩: বাস্তবায়ন, বিদ্যমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ।


সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা যে মুখে বলি একটা সমতার দেশ তৈরি করেছি, উন্নয়নের এক্কেবারে মহাসড়কে চলে গেছি, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে গেছে, সবকিছু হয়ে গেছে। কিন্তু এই উন্নয়নের সঙ্গে আমরা কী মানবিকতাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি? উন্নয়নের সঙ্গে সভ্যতার তাল মিলিয়ে চলতে পেরেছি?’

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘উন্নয়ন বলতে আমরা কী বুঝতে পারছি? উন্নয়ন বলতে রাস্তাঘাট, সেতু-ইমারত, বড় প্রকল্প যেখানে বালিশ কিনতে লাগে ১৪ হাজার টাকা, বালিশ তুলতে লাগবে আরও ৪ হাজার টাকা। তাহলে আমরা প্রচণ্ড উন্নয়ন করেছি দুর্নীতিতে। যেটার কিছু কিছু নমুনা এখন বের হয়ে আসছে। শুধু ক্যাসিনোকেন্দ্রিক শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। ক্ষমতা দেখিয়ে মানুষের ওপরে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, ব্যাংক লুট করা হচ্ছে, শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি হচ্ছে। এগুলো নিয়ে কিন্তু আমরা মাথাব্যথা করি না।’

সভাপতির বক্তব্যে প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাসিমা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশে বাজেটে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, বিশেষ বাজেট ও উপকরণ নেই। আমরা যারা কাজ করি প্রতিবন্ধী মানুষদের নিয়ে, তারাও সরকারের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে পৌঁছাতে পারি না। তাই এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে।’

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ সালে করা হয়। কিন্তু আইন থাকলেও এর প্রয়োগ নেই। আমরা ক্রমে ক্রমে মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেখি। বিশেষ করে নারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বেশি হতে দেখি। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।’

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী আমাদের প্রত্যাশা ছিল, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষাসংক্রান্ত জেলা কমিটি হবে এবং বছরে কমপক্ষে চারটি সভা হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম ব্যতীত অন্যান্য জেলায় ২০১৮ সালের আগে কোনো কমিটির কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। খোদ ঢাকায় গঠিত কমিটি গত ছয় বছরে একটি সভাও আয়োজন করেনি।’

সাজেদা আক্তারের অভিযোগ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা মাসিক ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা কোনোভাবেই জীবনধারণের জন্য যথেষ্ট নয়। এই ভাতা নেওয়ার সময় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ভাতা কার্ড দেওয়ার ‘সম্মানী’ হিসেবে প্রথম ছয় মাসের টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) গবেষণা উপদেষ্টা তাজুল ইসলাম, ব্লু ল ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. রেজাউল করিম সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

‘দুর্নীতিতে আমরা উন্নয়ন করেছি’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘যেটার কিছু কিছু নমুনা এখন বের হয়ে আসছে। শুধু ক্যাসিনোকেন্দ্রিক শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন