গরুর মাংসের দোকানে ব্যাপক ভিড়

  09-04-2020 03:36PM

পিএনএস ডেস্ক : মুগদা বাজারে ঢুকার আগে বাশার টাওয়ার চৌরাস্তায় আব্দুস সালামের মাংসের দোকান। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই দেখা হলে জানতে চাই- ব্যবসা কেমন? উত্তর একই থাকে, ভালা নাই ভাই। সপ্তাহের শুরুতেও এ ব্যবসায়ী জানিয়েছিলেন, পুরা বাজার মিলে টেনেটুনে দুইটা গরু শেষ করা যায়।

আজ বৃহস্পতিবার তার দোকানে চিত্র ভিন্ন। সকাল সাড়ে ১১টায় দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার ভিড়, চারজন কর্মচারী মিলে দোকান সামলাচ্ছে। মাংস মাপতে মাপতে কথা হয় তার সঙ্গে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ দুইটা জবাই করেছি। আমি ৫৮০ টাকা কেজিই রাখছি। তবে কোথাও ৬০০ টাকাও বেঁচে।

তিনি বলেন, আইজকাতো সবেবরাত। গতবছর এই দিনে আমি ৮টা গরু বিক্রি করেচিলাম। সে হিসেবে ব্যবসা তেমন বালানা। বাজারের সময় ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে আসাকেই এর কারণ হিসেবে মনে করছেন এই ব্যবসায়ী।

বাজারের আরো চারটি মাংসের দোকান রয়েছে। সেগুলোতে মাংসের দাম ৬০০ টাকা করে। মাছ পট্টিতে ঢোকার গলিতে মাংসের দোকানে দেখা গেল বাশ দিয়ে ক্রেতা দাঁড়ানোর জায়গা করা হয়েছে।

তবে একেবারেই ভিন্ন চিত্র মুরগির দোকানগুলোতে। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগির ব্যাপারীরা ব্যবসায় লোকসান গুনে গুনে মুষরে পড়েছেন। তারা বলছেন, যা এতোদিন হয়নি তাই হয়েছে। শবেবরাতের আগে সবপন্যের দামই বাড়ে, মুরগির বাজার এর বাইরে নয়। কিন্তু এবার শবেবরাত চলে যাচ্ছে, মুরগির দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে আরো কমেছে। বাজারে দেশি সোনালী জাতের মুরগি পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজির দরে বিক্রি করলেও খুচরা পর্যায়ে তা পিস হিসেবেই বিক্রি করেন ব্যাপারীরা।

এতে ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের মুরগি স্বাভাবিক সময়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু আজ শবেবরাতের আগের দিন একই ওজনের সোনালী বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা পিস। পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। অবস্থা আরো খারাপ ব্রয়লার মুরগির ব্যবসায়ীদের। দাম তলানিতেও নামিয়েও কাস্টমার পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।

গতকালও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েচ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। এই দাম একেবারেই খুচরা পর্যায়ে। পাইকারিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। খামারি পর্যায়ে তা আরো কম। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) হিসাবে গত বছর এই একই সময়ে ব্রয়রার মুরগির দাম ছিল ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি। সে হিসেবে দাম কমেছে ২৫ টাকার উপরে।

মানিকনগর বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী কাওসার বলেন, যে মুরগির জোরা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় আজ বিক্রি করেছি তা বাজার ভালো হলে সাড়ে ৪০০ টাকার উপরে হতো। কি করমু, সময় খারাপ। বাজার ভর্তি মানুষ। কিন্তু মুরগির কাস্টমার নাই।

মাছের বাজারেও আজ ব্যাপক ভিড় ছিল। তবে দাম তেমন বাড়েনি। মাঝারি মানের রুই মাছ ৩০০ টাকা কেজি, ইলিশ পাওয়া গেছে ৭০০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।

এছাড়া সব ধরনের চালের দাম রয়েছে বাড়তি। বিশেষ করে মোটা চালের দাম কমছেই না। বাজারগুলোতে ৪২ টাকার নিচে কোন চালই মিলছে না এখন। বড় দানার মশুর ডাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। ছোলা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। চিনি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। খোলা সয়াবিন ৯৬ টাকা থেকে ৯৮ টাকা লিটার।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন