কাউন্সিলরের ছেলে-মেয়ের নামে গরিবের ওএমএস কার্ড!

  24-05-2020 06:34PM

পিএনএস ডেস্ক: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় গরিবের ওএমএস কার্ডে ভাগ বসিয়েছেন পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আ.লীগ নেতা গোলাম হায়দার চৌধুরী। নিজের ছেলে তানবির হায়দার ও মেয়ে ফারজানা আক্তারের নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিশেষ ওএমএস এর কার্ড পেয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সচেতন মহলসহ সোশ্যাল মিডিয়ায়। বর্তমান কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন রাসেল ১০ টাকা কেজি দরে সরকারিভাবে এই কার্ড তাদের নামে পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ভিক্ষুক ও ভবঘুরেসহ হতদরিদ্র এবং নিম্নআয়ের মানুষ, যারা কোনও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্তর্ভুক্ত নয়; তাদের জন্য বিশেষ ওএমএস সুবিধা চালু করা হয়েছে। এই সুবিধায় একজন ওএমএস কার্ডধারী প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ২০ কেজি করে চাল পাবেন। সেজন্য রায়পুর পৌরসভা এলাকায় ২ হাজার ৪০০ জনকে দেয়া হচ্ছে ওএমএস কার্ড।

ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এ তালিকা তৈরি ও কার্ড বিতরণ করা হয়। বিতরণের শুরুতেই পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের তালিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। ৯ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন রাসেল সাবেক কাউন্সিলর গোলাম হায়দারের এক ছেলে ও এক মেয়ের পেশা একজন বেকার উল্লেখ করে ১০৯ ও ৩১৯ নম্বর দু’টি কার্ড বিতরণ করেন।

৯ নং ওয়ার্ডের একাধিক গরিব বাসিন্দারা বলেন, সাবেক কাউন্সিলর গোলাম হায়দারের রায়পুর পৌরশহরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, তারপর তারা গরিবের চাল খাবে? আমাদের মত গরিবের নাম বাদ দিয়ে ওএমএস কার্ডে সাবেক কাউন্সিলরের ছেলে-মেয়ের নাম তোলা হয়েছে। যে দু’জনের নাম দিয়েছেন তারাইতো হাজার হাজার লোককে ত্রাণ দিতে পারবে।

জানতে চাইলে কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন রাসেল বলেন, তাদের অবস্থা আগে ভালো ছিলো, এখন নেই। এছাড়াও তারা কার্ড নিতে ইচ্ছা পোষণ করায় আমি দিয়েছি।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, ৯ নং ওয়ার্ডর সাবেক কাউন্সিলরের ছেলে ও মেয়েকে এরকম সুবিধা পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে বিষয়টি আমি জেনেছি। এ কার্ড বাতিল করা হবে। বর্তমান কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন রাসেল সাবেক কাউন্সিলরের ছেলে ও মেয়েকে বিশেষ ওএমএসের কার্ড করে দিয়েছেন। বিষয়টি দুঃখজনক! আরও অনেকেই হয়ত এ রকম করেছেন। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, সরকারের এই বিশেষ ওএমএস এর কার্ড দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাওয়ার কথা। কিন্তু পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডে ওএমএস কার্ডের তালিকায় সামর্থ্যবানদের নাম ওঠার বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। ওই দু’টি কার্ড ইতোমধ্যে চিহ্নিত করে তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন