দোহারে কিশোরীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ

  06-07-2020 04:50PM

পিএনএস ডেস্ক : ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাসপুরে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অপরাধে সুমা (৩০) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে দোহার থানা পুলিশ। আর এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিকশা চালক সুমন ও তার স্ত্রী এবং ১৩ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে। গত তিন মাস পূর্বে একই এলাকার সেলিম চোকদারের মেয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে ওই কিশোরীর। সেই সুবাদে মাঝে মধ্যেই রাতে সেলিম চোকদারের মেয়ের সাথে বাড়িতে থাকতো ওই কিশোরী। জানা যায়, কিছুদিন আগে রাতে সেলিম চোকদারের মেয়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিলো ওই কিশোরী। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ করেই সেলিম চোকদার (৪৫) এসে ওই কিশোরীকে মুখ চেপে ধরে বাড়ির পার্শ¦বর্তী একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের এ ঘটনা কাউকে না জানাতে মেয়েটিকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায় সেলিম চোকদার। এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি সে। এরপর প্রতিবেশী বন্ধু কিয়ামউদ্দিন হাওলাদার (৪৯)ও ইদ্রিস মোল্লা (৪৮)কে নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধর্ষণ করে সেলিম চোকদার। আর এ কাজে সহযোগিতা করে ধর্ষিত কিশোরীর বাড়িওয়ালার মেয়ে সুমা (৩০) এবং আরেক প্রতিবেশী মুদি দোকানদার তারা মিয়া (৪৭)। ওই কিশোরী আরো জানায়, ধর্ষণের সময় ধর্ষকরা এ ঘটনা কাউকে না জানাতে দা, বঁটি দেখিয়ে তাকে হত্যার ভয় দেখাতো। শুধু তাই নয় ধর্ষকদের সহযোগী মুদি দোকানি তারা মিয়া কিশোরীর বাবার কাছে টাকা পাবে এ কথা বলে কিশোরীকে সুযোগ বুঝে দোকানে নিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতো।

সম্প্রতি এ ঘটনা নাটকীয়ভাবে জানাজানি হয় একটি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে। গত শুক্রবার বিলাসপুর ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় রাধানগর গ্রামসহ আশ পাশের অন্ত্যান্ত তিনটি গ্রামের ৫ শতাধিক লোকের সমাবেশ ঘটিয়ে কিশোরীর উপস্থিতিতে এ ঘটনার বিচারের মাধ্যমে সমোঝতার চেষ্টা করা হয়। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা সালিশে উপস্থিত না হওয়ায় এবং ঘটনাটি আনুমানিক আড়াই মাস আগে হওয়ায় মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হতে পারে বলে তা সমঝোতার বাধার কারণ হয়। এ সময় বিচারে থাকা সমাজপতিরা দোহার থানা পুলিশকে এ বিষয়টি অবগত করেন।

এ ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে সালিশ বসার একদিন পর অদৃশ্য কারণে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী চুপ হয়ে যায়। পরে সাংবাদিক ও বাস্তব মাইগ্রেশন দোহার প্রজেক্ট অফিসার মাকছুদা রহমান সহ তাদের একটি টিমের হস্তক্ষেপে বিষয়টি আমলে নিয়ে নারী ও শিশু নিযার্তন আইনে পৃথক তিনটি মামলা নেন দোহার থানা পুলিশ। ধর্ষণের শিকার কিশোরীটির রিকশা চালক পিতা জানান, অভিযুক্তরা তাকে প্রথমে টাকা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে পৃথক তিনটি মামলা করেছে। এ ঘটনায় ধর্ষণের কাজে সহযোগী সুমা নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন