করোনা আক্রান্ত বাবাকে নিয়েও প্রতারণা করেন সাহেদ!

  11-07-2020 08:14PM

পিএনএস ডেস্ক : করোনাভাইরাসের টেস্ট না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়া ও চিকিৎসার নামে প্রতারণার অভিযোগে আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের বিরুদ্ধে বাবার অসুস্থতা নিয়েও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। করোনা আক্রান্ত বাবাকে নেগেটিভ সনদ দেখিয়ে নিজের হাসপাতাল রেখে ভর্তি করিয়েছিলেন অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অবশেষে সেখানেও সাহেদের বাবার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং এক পর্যায়ে মারা যান।

করোনা আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে সাহেদের প্রতারণার কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

তিনি জানান, গত ৪ জুলাই সিরাজুল করিমকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন সাহেদ। সিরাজুল করিমের বয়স ছিল প্রায় ৭০ বছর। ভর্তি করার সময় সাহেদ জানান তার বাবার কোভিড-১৯ সংক্রমণ নেই। পরে সাহেদের বাবার করোনা পজেটিভ আসলে তাকে আমরা ফোন দেই। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু আপনার হাসপাতাল কোভিড রোগীদের জন্য সেখানে আপনার বাবাকে নিয়ে যান। কিন্তু সাহেদ অপারগতা প্রকাশ করেন। বলেন তার ওখানে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।

ভর্তির পর প্রথম দুই দিন সাহেদ তার বাবাকে দেখতে এসেছিলেন। তবে ৬ জুলাইয়ের পর থেকে এখানে তাদের আর কেউ আসেননি বলেও জানান ইউনিভার্সেলের এমডি।

বাবার করোনা পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেয়ার কথা জানিয়ে ডা. আশীষ জানান, ‘আমাদের বলা হয়েছিল, এর আগে তিনটি পরীক্ষায় সিরাজুল করিমের কোভিড-১৯ নেগেটিভ আসে। তিনটি সনদও দেখানো হয়। কিন্তু তার লক্ষণ দেখেই মনে হয়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত। আমাদের এখানে পরীক্ষায় তার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।’

তিনি বলেন, ‘তার ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। অবস্থা খারাপ হলে দুই দিন আগে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি।’

জানা গেছে, সাহেদ বাবাকে দেখতে আসা বন্ধ করলেও তার সঙ্গে আসা লোকজন পরেও হাসাপাতালে এসেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তার বাবা মারা যাওয়ার পরে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি ইউনিভার্সেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে থানায় জিডি করে তারা। সাহেদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়ায় পরে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালের লোকজন। পরে শুক্রবার সকালে সাহেদের কেয়ারটেকার এসে লাশ বুঝে নেয়। সকালেই আজিমপুর কবরস্থানে সাহেদের বাবাকে দাফন করা হয়।

প্রসঙ্গত, পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অন্তত ছয় হাজার ভুয়া করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়ার প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

একদিন পর গত মঙ্গলবার (৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন