মহাসড়কে বাস আছে, নেই স্ট্যান্ডে, টিকেটের হাহাকার!

  31-07-2020 05:21PM

পিএনএস ডেস্ক: পুরোপুরি একদিনও বাকি নেই ঈদুল আজহার। এ সময় বাড়িমুখী যাত্রীদের ঢল নামে সব ধরনের গণপরিবহনের টিকেট কাউন্টারে। ব্যস্ত থাকে সড়ক। এবারো একই রকম মহাসড়ক। কিন্তু পাল্টে গেছে টিকেট কাউন্টারের চিত্র। মহাসড়কে বাস আছে, নেই স্ট্যান্ডে। তাই কাউন্টারে যাত্রীদের ভীড় জমছে। এমন অবস্থায় কন্ডাকটরদের ভাষ্য- বাস নেই, টিকেট নেই।

টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ এলাকায় হাজারো বাস যানজটে আটকা পড়েছে। ঈদের যাত্রী নিয়ে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়া বাসগুলো ঢাকায় ফেরার পথে এই যানজটে আটকা পড়েছে। বাস আটকা পড়ায় ফাঁকা হয়ে গেছে রাজধানীর গাবতলীর বাসস্ট্যান্ডের অধিকাংশ কাউন্টার। বাস ঢাকায় না আসায় টিকেট বিক্রি থেকে বিরত রয়েছেন তারা। ফলে ঈদের আগের দিন বাস কাউন্টারে আসা যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে।

শুক্রবার সরেজমিনে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করে দেখা যায়, ঈদ করতে গ্রামে যাওয়ার জন্য অনেক মানুষ বাসস্ট্যান্ডে ভিড় করছেন। কিন্তু বাস না থাকায় অধিকাংশই টিকিট পাচ্ছেন না। তারা বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। আর বাস ঢাকায় না আসায় অধিকাংশ কাউন্টারের কার্যক্রম বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। ফলে অল্প যে দু-একটা বাস ছেড়ে যাচ্ছে, সেগুলোর টিকিটের দামও প্রায় দ্বিগুণ।

এ বিষয়ে মো. রুবেল মাহমুদ নামে এক যাত্রী বলেন, রাজবাড়ীতে যাবো। বাস পাইনি। দেড় ঘণ্টা হলো বাস পাইনি। কারণ, যত বাস গেছে, সেগুলো আসতে পারছে না। সব কাউন্টার বন্ধ করে দিয়েছে। গাড়ি থাকলে তো অবশ্যই টিকেট পাবো। আমাদের রাজবাড়ীর গাড়ি মূলত আটকে আছে ফেরি পারাপারের জন্য।

বাবা-মা, ভাইকে নিয়ে লালমনিরহাটে যাবেন মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জে থাকি। সেখানে লালমনিরহাটের বাস পাইনি। তাই গাবতলী এসেছি। এখানেও লালমনিরহাটের টিকিট পাওয়া যায়নি। এখন রংপুরের টিকিট কাটলাম। আগে রংপুর যাবো, তারপরে লালমনিরহাট। টিকেট বিক্রি থেকে বিরত ছিলেন সালমা পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার মো. ফরহাদ। তিনি বলেন, যানজটের জন্য ঢাকায় গাড়ি ঢুকছে না। রাস্তায় প্রচুর যানজট।

ঈদে ঘর ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে। যানবাহনের চাপে ঘাটে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার যানবাহন।

পাটুরিয়া ঘাট থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লেগেছে যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিাঞ্চরের ১৯ জেলার হাজার হাজার মানুষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় রওনা দিয়েও শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনেকে ঘরে ফিরতে পারেনি। প্রায় ১৫ ঘণ্টা যানজটে পড়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

পাটুরিয়া ঘাট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ঈদে ঘরমুখী মানুষ ও যাত্রীবাহী বাসের চাপ বেড়ে যায়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। ফেরিতে আগে ওঠার প্রতিযোগিতায় রাত ২টার পর থেকে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এতে ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তা পন্টুন আটকে যায়। এ কারণে রাত আড়াইটা থেকে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। এতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যানজট লাগে। এখন ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট লেগেছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের মির্জাপুরের গোড়াই থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত শুক্রবার ভোর থেকে ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কে পশুবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা ৮৯ মিনিট বন্ধ থাকার কারণে মহাসড়কে থেমে থেমে এই যানজট বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিস্থান পরিবহনের কনডাক্টর বেলাল হোসেন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন। রিজার্ভে যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে যাওয়া। এখন শুক্রবার বেলা ১১টা বাজে, আটকে আছি টাঙ্গাইল আশেকপুর বাইপাসে। সিরাজগঞ্জ পৌঁছাতে আর কত সময় লাগবে বোঝা যাচ্ছে না।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন