আমরা যেভাবে মামলাটি করতে চেয়েছি, পুলিশ সেভাবে মামলাটি নেয়নি: আনুশকার মা

  13-01-2021 06:12PM

পিএনএস ডেস্ক:রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে মামলাটি করতে চেয়েছি, পুলিশ সেভাবে মামলাটি নেয়নি। একটি মহল দিহান ও তার সঙ্গীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে এবং আমার মেয়ের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। বলা হচ্ছে, আমার মেয়ের সঙ্গে দিহানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এটি একদমই ঠিক না। কিছু কর্মকর্তা সাক্ষাতকার বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি প্রচার করা হয়েছে।’

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তিনি।

চার দফা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত বিচার আইনে দিহান ও তার সঙ্গীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সরকার যেন তদন্তে আমাদের সহযোগিতা করে। স্বচ্ছ ও সঠিক ডিএনএ পরীক্ষা করা হোক। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক। আমার নিষ্পাপ মেয়েকে বিকৃতভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আপনি একজন মা। আমি আমার মেয়েকে হত্যার স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচার চাই।

সেদিনের ঘটনা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীর মা বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দিহান ও তার সঙ্গীরা আমার মেয়েকে অপহরণ করে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমার মেয়েকে অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যার পর আমাকে ফোন করা হয়। দিহান আমাকে ফোন করে জানায়, ‘সে (শিক্ষার্থী) সেন্সলেস হয়ে গেছে।’ আমি হসপিটালে এসে দেখি, দিহানসহ তার তিন সঙ্গী বসে আছে। তারা আমার পা জড়িয়ে ধরে বলে ‘আন্টি আমাদের বাঁচান।’ পরে দিহানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করি, আমার মেয়েকে তোমরা কোথায় পেলে, কেন মারা গেলো? তখন সে আমাকে বলে- ‘আমরা চার জন ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাই এবং সেখানে সে সেন্সলেস হয়ে যায়।’ তখন আবার জিজ্ঞেস করি, বাসায় আর কোনো মেয়ে ফ্রেন্ড ছিল না, বা তোমার বাবা মা ছিল না? তখন বলে, ‘না, আমরা চার জনই তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম।’ এরপর আমার বুঝতে বাকি থাকে না, সেখানে কী হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ওই শিক্ষর্থীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে প্রতিটা মুহূর্তে আমি আমার মায়ের মতো করে রাখছি। আমার পারমিশন ছাড়া, অথবা আমার সঙ্গে কথা না বলে সে কোথাও কিছু করতো না। তিনি বলেন, আমার একটাই চাওয়া— আমি যেটা হারিয়েছি, এটা যেন আর কোনো বাবা-মা কখনও না হারান।’

সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী প্রযুক্তির অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। প্রযুক্তির অপব্যবহারে শিশু ও কিশোরী ধর্ষণ ক্রমাগত বাড়ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্ত দিহানের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ, ঢাকা মহানগরের আন্দোলন সম্পাদক জেবুন্নেসা প্রমুখ।


পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন