তৃণমূল পুনর্গঠনে আবার দল পাঠাচ্ছে বিএনপি

  20-10-2016 08:56PM

পিএনএস: এর আগে বেশ কবার চেষ্টা করেছে তৃণমূলে সম্মেলন করে নতুন নেতৃত্ব আনতে। কিন্তু তাতে সফল হয়নি বর্তমানে রাজনীতির মাঠে বিপর্যস্ত বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে টিম বানিয়ে একাধিকবার সফরে পাঠানো হলেও গতি আসেনি তৃণমূলে। অবশ্য এ জন্য প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন আবার জেলা কমিটিতেও আছেন এমন নেতাদের অসহযোগিতাকে।
যেসব জেলায় কমিটি গঠনে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দূর করে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আবার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিম গঠন করেছে বিএনপি। খুব শিগগির ১৪ জনের টিম মাঠে নামবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব টিমের অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সাংগঠনিক টিমে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু প্রমুখ।
সম্প্রতি সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক পর্যায়ের নেতাদের এক বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সব জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের তাগিদ দেন। সে অনুযায়ী কাজ করতে নতুন করে টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তৃণমূলের কমিটি করতে যেসব জায়গায় সমস্যা হচ্ছে, সেখানে কেন্দ্র থেকে নেতাদের পাঠানোর চিন্তা করা হচ্ছে। টিমের সদস্যরা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে দ্রুত কমিটি করা যায়, সেই পথ বের করবেন। আশা করি, এবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব কমিটি করা সম্ভব হবে।’
জানা গেছে, ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে গত দেড় বছরের চেষ্টায় মাত্র ১৩ জেলায় কমিটি দিতে পেরেছে বিএনপি। তাই এবার আটগাঁট বেঁধে নামতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। এর আগে তৃণমূলে কমিটি করতে যেসব নেতা বাধার সৃষ্টি করেছেন, তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চান বিএনপির চেয়ারপারসন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যেসব নেতা এখনো কেন্দ্র ও জেলার পদ আঁকড়ে আছেন, তাদের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলতে পারেন খালেদা জিয়া। এরপরও তারা ‘এক নেতা এক পদ’ নীতি না মানলে তিনি নিজেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
গত মার্চে অনুষ্ঠিত বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়।
এদিকে প্রশাসনের অসহযোগিতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ বিভিন্ন কারণে স্থানীয়ভাবে বড় পরিসরে সম্মেলন করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে কৈফিয়ত দিচ্ছেন বিএনপির নেতারা। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে ছোট্ট পরিসরে সম্মেলন বা কর্মী সভা করে পরে ঢাকায় বসে কমিটি ঘোষণার চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিরোধ ও পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নাশকতার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পয্যায়ে অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। এসব মামলায় তারা অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ছাড়া বিএনপির সভা-সমাবেশে সরকারের বাধারও অভিযোগ আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ কারণে সম্প্রতি এমন কয়েকটি জেলার নেতাদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগের বাকি জেলার নেতাদেরও ঢাকায় ডেকে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এসব বৈঠকে সংশ্লিষ্ট জেলার শীর্ষ পাঁচ নেতা, থানা বা উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিএনপি-সমর্থিত পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানরা থাকবেন।
আর তৃণমূল সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, ‘জেলা, মহানগরসহ মেয়াদোত্তীর্ণ সব জায়গায় কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব জায়গায় কমিটি করার কাজ চলছে। শিগগিরই সাংগঠনিক টিমের নেতারা সংশ্লিষ্ট এলাকায় যাবেন। নেতাকর্মীদের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তারাই নেতৃত্বে আসবেন।’

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন