তৃণমূলে বিএনপির টার্গেট ডিসেম্বর

  21-10-2016 11:01AM

পিএনএস ডেস্ক: খাতা-কলমে না হলেও রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্তে এখন অনেকটাই কোণঠাসা। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল থাকায় ব্যর্থতাই ছিল কয়েক দফা আন্দোলনের শেষ পরিণতি। ব্যর্থতার তকমা থেকে বের হতে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে এবার কিছুটা ভিন্ন কৌশলে এগুচ্ছে বিএনপি। তাই কাঙ্ক্ষিত টার্গেট বাস্তবায়নে ফের তৃণমূলে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। উদ্দেশ্য, ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করার দাবি থেকে এখনো সরে আসেনি বিএনপি। বরং দাবি আদায়ে এবার তৃণমূল পুনর্গঠনে কোনো প্রকার ছাড় দিতে রাজি নন খালেদা জিয়া। তাই শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে স্বল্প পরিসরে জেলা কাউন্সিল বা কর্মীসভা করার মাধ্যমে তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

বর্তমানে মামলার বেড়াজালে জর্জরিত বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে তৃণমূল ইউনিটের নেতা পর্যন্ত সবাই মামলার জালে বন্দি। কেউ জেলে, কেউবা মামলার ঘানি কাঁধে নিয়ে বেড়াচ্ছেন পালিয়ে। জামিন পেতে আদালতের দরজায় বহু নেতাকর্মী। জামিন হওয়া- না হওয়ার শঙ্কায় আত্মগোপন থেকেও বের হতে পারছেন না অনেকেই।
ফলে মামলা সামাল দেবেন, দল গোছাবেন, নাকি দাবি আদায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করবেন-এই প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপি প্রধান। কারণ একের পর এক মামলার জালে যেভাবে নেতা-কর্মীদের ঘিরে ফেলা হচ্ছে তা সামাল দিতেই এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে বিএনপিকে। রয়েছে ‘সাজা’ আতঙ্কও। সেখানে তৃণমূল পুনর্গঠন কতটা কার্যকর হবে তা ভেবে পাচ্ছেন না দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি নয়, এবার বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামের ডেডলাইন হবে আগামী ডিসেম্বর। সেই টার্গেট পূরণে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সারাদেশের মেয়াদোত্তীর্ণ সব জেলা বা মহানগর কমিটি গঠন করতে চলছে দলের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের কাজ। তবে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, তৃণমূল পুনর্গঠনে জেলায় কাউন্সিল বা কর্মী-সভার মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন তারা। কিন্তু পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। তাছাড়া এবার লবিং করে কেউ কোনো পদ পাবে না। নেতা-কর্মীরা যাদের চাইবে তাদেরই নেতৃত্বে আনা হবে। আর এটাই দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও চান। পাশাপাশি দলে তৃণমূল পুনর্গঠনে ‘এক নেতার এক পদ’ রাখার বিধান বাস্তবায়নে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো কৌশলই কাজে দেবে না। লাভ হবে না।

বিগত দিনে তৃণমূলে আন্দোলন চাঙ্গা হলেও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আন্দোলন ধরে রাখতে হিমশিম খেয়েছে বিএনপি। ফলে সংগঠনের স্বার্থে এবার কিছুটা নীরবেই পূনর্গঠন চালাছে দলটি। উৎসবের আমেজ নেই। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের নতুন নেতৃত্বের উদ্দীপনায় আগের চেয়ে বেশি উজ্জীবিত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ এ ব্যাপারে দলটির প্রধান খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় রয়েছে গ্রেফতার এড়িয়ে সর্বদা-সর্তক থেকে এ তৃণমূলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসা। যাতে করে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলনে পরিণত করা যায়। যার ধারাবাহিকতায়ই কমিটি নিয়ে জেলা পর্যায়ের নানামুখী সমস্যা নিরসনে শিগগিরই মাঠে নামছে বিএনপির ১৪টি কেন্দ্রীয় টিম।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত ওই সব টিম স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মতামতের ভিত্তিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করবেন। ব্যর্থ হলে হাই কমান্ডকে অবহিত করা হবে। তাছাড়া কমিটি নিয়ে বিরোধপূর্ণ বেশকয়েকটি জেলার নেতাদেরকে ইতোমধ্যে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। প্রয়োজনে সমস্যা সমাধানে এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে।

গত ১৯ মার্চ কাউন্সিলের আগে তৃণমূল পুনর্গঠনে বিএনপিতে ব্যাপক তোড়জোড় করে। তখন কয়েকটি জেলা পুনর্গঠনের পর হঠাৎ সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি ঘোষণার পর আবারও পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া। তার নির্দেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান পুনর্গঠনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে সাংগঠনিক টিমগুলোর অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। টিমে রয়েছেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু প্রমুখ।

বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, একাধিক পদ ছাড়তে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত লিখিত ও মৌখিকভাবে নেতাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই এখনো একাধিক পদ ছাড়েননি। তাই দলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত না মানায়, এসব নেতার ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ দলের হাইকমান্ড। সপ্তাহ খানিকের মধ্যে কোন কোন নেতাকে জেলায় আবার কোন নেতাকে কেন্দ্রে রাখা হবে সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন কমিটিতে ৬১ জন নেতা ছিলেন এক সঙ্গে একাধিক পদধারী। তারা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পদের বাইরে জেলা-উপজেলা কমিটি বা বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনেরও পদধারী নেতা। এর মধ্যে ৩০ জন একটি পদ রেখে অন্য পদ ছেড়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জন নেতা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা লিখিতভাবে দলকে জানিয়েছেন। বাকিরা কেন্দ্রীয় কমিটির পদ রেখে অন্য পদ ছেড়েছেন। বাকি ৩১ জন কোন পদে থাকতে চান, তা এখনও জানাননি। যাদের তাদের বেশির ভাগই দলে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত।

এদিকে তৃণমূল বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বিএনপির নেতাদের অনেকের কাছে কেন্দ্রের চেয়ে জেলা-উপজেলার রাজনীতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর সঙ্গে স্থানীয়ভাবে মহানগর, জেলা-উপজেলার রাজনীতিতে প্রভাব ধরে রাখার বিষয় জড়িত। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ও জড়িত। তাছাড়া তারা মনে করেন মাঠ পর্যায়ের পদ ছেড়ে দিলে স্থানীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভালো পদ পেয়েও স্থানীয় কমিটির পদ ছাড়তে গড়িমসি করছেন অনেকে। তবে এটাও টিক আবার অনেকে কেন্দ্রীয় পদ ছেড়ে স্থানীয় কমিটির পদ রাখছেন।

জানা গেছে, পুনর্গঠনের তোড়জোড়ে তৃণমূল নেতারা জেলা বা মহানগরে কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে বা স্বপদে বহাল থাকতে এবং অনুগতদের পদ পাইয়ে দিতে লবিং তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতারা নিজ জেলা বা মহানগর ছেড়ে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। এসব নেতা ঘনঘন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি সুযোগ পেলে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি খালেদা জিয়া দলের দুই যুগ্ম মহাসচিবকে ডেকে একাধিক পদ ছাড়তে বলার পরও তারা একাধিক পদে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আর তখনই ওই দুই নেতার ওপর রেগে যান তিনি। ফলে এখন কোনো কোনো নেতা একাধিক পদে থাকার জন্য জোর লবিং করেও হালে পানি পাচ্ছেন না।

বৃহস্পতিবার সকালে (২০ অক্টোবর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। ঘুরে
দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে এবং ফিনিক্স পাখির মতো ঘুরে দাঁড়াবে। এক পদ রেখে অন্য পদ ছাড়তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশ মানতে নারাজ হলে তাদের দলে রাখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘দল করতে হলে দলের কমান্ড মানতে হবে। অন্যথায় তৃণমূলের পুনর্গঠন করার যে উদ্দেশ্য তা কখনো পূরণ হবে না।’

তৃণমূলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহজাহান ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডিকে বলেন, সরকারের বিরূপ আচরণের শিকার হচ্ছে বিএনপির সারাদেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। বাধ্য হয়ে ঘরোয়া পরিবেশে নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে তৃণমূল পূনর্গঠনের কাজ করছেন। তবে আগামী ৭ নভেম্বরের পর থেকে পর্যায়ক্রমে জেলা সম্মেলনও শেষ করা হবে। প্রত্যাশা চলতি বছরেই সারাদেশে দলের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও মহানগর কমিটি পুনর্গঠন সম্পন্ন হয়ে যাবে। পুনর্গঠনের সর্বশেষ টার্গেট ডিসেম্বর। অর্থাৎ নতুন বছরে সারাদেশে নতুন নেতৃত্ব পাবে বিএনপি। যা পরবর্তী আন্দোলন–সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠন না করায় দলের কর্মীরা দিন দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। প্রতিনিয়তই সাংগঠনিকভাবে ঐক্য হারাচ্ছেন। এমনকি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করায় ভেঙে গেছে অঙ্গ-দল গুলোর সাংগঠনিক কাঠামো। তাই খালেদা জিয়া নিজ হাতে তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজ পরিচালনা না করলে কোনো লাভ হবে না। কারণ পদ পদবীর লড়াইয়ে দলীয় কোন্দল সংকটে ফেলেছে বিএনপিকে।

তবে দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, বিএনপিকে নেতৃত্ব সংকটে ফেলতে তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের নামে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। তড়িঘড়ি চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। একাধিক মামলা নিষ্পত্তির দিকে এগুচ্ছে সরকার। বাদ যাচ্ছেন না চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাও। ফলে এই কঠিন মুহূর্তে আন্দোলন নয়, রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দলকে গোছানোর তাগিদ থাকলেও তাতে পিছিয়ে পড়ছে বিএনপি। তাই আগামী দিনে রাজনৈতিক মাঠে বিএনপির জন্য ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন নেতারা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, দলের কোনো কর্মসূচি নেই। অথচ নেতা-কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, সরকার বিএনপিকে মামলা-অস্ত্র প্রয়োগ করে ঘায়েল করতে চায়। সিনিয়র নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য করতে দ্রুত চার্জশিট দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
জানা গেছে, সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ২০ হাজারেরও বেশি। এতে আসামি রয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ লাখ। খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও মামলার খড়গ ঝুলছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও এ পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত মামলা করা হয়েছে। একইভাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ৮৩টি মামলার আসামি।

দলীয় সূত্র জানায়, মামলার ঘানি টানতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নাভিশ্বাস উঠছে এখন। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা নিঃস্ব প্রায়। দল থেকেও কর্মীরা তেমন সহায়তা, বিশেষ করে আইনি সহায়তা পাচ্ছে না বললেই চলে। সার্বিকভাবে এর প্রভাব পড়ছে সাংগঠনিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডিকে জানান, সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন যাতে গড়ে উঠতে না পারে সে জন্য বিএনপিতে ভাঙন সৃষ্টির পাঁয়তারাও চলছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে একাধিকবার এ চেষ্টা চালানো হয়। একইভাবে ২০ দলীয় জোটের মধ্যেও সন্দেহ-অবিশ্বাস সৃষ্টি করতেও ক্ষমতাসীনদের পক্ষে অপকৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিচারের মুখোমুখি। বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বিএনপির এ কঠিন সময় থাকবে না। প্রয়োজন শুধু সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। প্রয়োজন শুধু সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা।’
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অভিযোগ, জিয়া পরিবারসহ নেতাদের আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে সরকার নানা ফাঁদ তৈরি করছে। জিয়ার আদর্শকে নির্মূল করতে নেতাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ অন্য নেতাদের সাজা দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ব্যস্ত রাখতেই প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন মামলায় জড়াচ্ছে। রাজনৈতিক হীন উদ্দেশে চেয়ারপারসনসহ সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেওয়া হচ্ছে। যাতে জিয়া পরিবারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেই কৌশলই নিচ্ছে সরকার। কিন্তু তাদের এ উদ্দেশ্য সফল হবে না।’

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন