শেষমেশ ওবায়দুল কাদেরই

  23-10-2016 02:15PM


পিএনএস: আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান পদ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগের সূত্র। গত রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের একটি বৈঠকে বিষয়টি নিশ্চিত হয় বলে জানিয়েছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, দলে সক্রিয় বিবেচনায় ওবায়দুল কাদেরকে এই পদে পছন্দ করা হয়েছে। আশরাফ দলের ভেতর জনপ্রিয় এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির হলেও নেতারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না বলে অভিযোগ আছে। তাছাড়া তরুণ নেতাদেরও পছন্দ ওবায়দুল কাদের।

গত রাতে গণভবনের ওই বৈঠকে নতুন কমিটিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেও সম্মানজনক পদ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। নতুন কমিটিতে কে কে থাকবেন- এ বিষয়েও আশরাফের মত নেয়া হয় বলেও জানিয়েছে গণভবনের সূত্র।

নেতা বাছাইয়ের আনুষ্ঠানিকতা অবশ্য চূড়ান্ত হবে আজকে জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে। সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সভাপতি শেখ হাসিনার পরিচালনায় চলছে এই অধিবেশন। সাংগঠনিক জেলার নেতাদের বক্তব্য উপস্থাপনের পর দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রে সংশোধন অনুমোদন করা হবে।

এরপর দলের বর্তমান কমিটি ভেঙে দেয়ার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন হবে। রীতি অনুযায়ী কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে নাম উত্থাপন এবং তা সমর্থন করার পর এই প্রক্রিয়া শুরু করবে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন।

একজন মাত্র প্রার্থী থাকলে তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আর একাধিক প্রার্থী থাকলে ভোট হবে। সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ব্যালটবাক্সে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করবেন কাউন্সিলররা।

শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শুরুর দুই দিন আগে থেকেই ওবায়দুল কাদেরের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার গুঞ্জন শুরু হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী নিজে তার ঘনিষ্ঠজনদের এও বলেছেন, প্র্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এরপর ওবায়দুল কাদেরের অনুসারীরা ফেইসবুকে তাকে অভিনন্দন জানানো শুরু করেন। মিষ্টি বিতরণও হয় সমর্থকদের মধ্যে।

জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের জটিল সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন। সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর যথাক্রমে জিল্লুর রহমান এবং সৈয়দ আশরাফ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর ২০০৯ সালের জাতীয় সম্মেলনে প্রথমবারের মত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের জাতীয় সম্মেলনেও তিনি এই পদে পুনঃনির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চার দফা সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। তবে বঙ্গবন্ধু টানা চার বার এবং জিল্লুর রহমান দুটি ভিন্ন সময়ে দুই বার করে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আর জাতীয় সেনা তাজউদ্দীন আহমেদ তিন বার হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক। আর আবদুর রাজ্জাক ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন দুইবার করে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন