নতুন কমিটিকে বিএনপির অভিনন্দন

  24-10-2016 07:41AM


পিএনএস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সাংবাদিকদের চিরকুট পেয়েছি। জাতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর পেয়েছি। আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হাসিনা আবার সভাপতি হয়েছেন এবং ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আমি তাদেরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আবারো এই প্রত্যাশা করছি, জাতির আশা-আকাঙক্ষার গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ করবেন। চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব চাষী নজরুল ইসলামের ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা ভবন মিলনায়তনে ‘জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট’ আয়োজিত আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ বড় একটি উৎসব করেছে। এই উৎসবে তারা আলোকসজ্জা, উৎসবের সরঞ্জামের আয়োজন নিখুঁতভাবে হয়েছে। বিদেশি বন্ধুরা এসেছিলেন তারাও কথা বলেছেন। কিন্তু জনগণের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের যে চাহিদা তার জন্য তারা কি করেছেন? এই সম্মেলনে সেই মূল বিষয়টিই নেই। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রধান সংকট হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা কি করবেন, তারা তা বলেননি। মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করার জন্য কি করবেন, তা তারা বলেননি। যে ভোটের অধিকার তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন, সেই ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে দিতে কি করবেন তা তারা বলেননি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই কাউন্সিলের আগে আমি বলেছিলাম, এই কাউন্সিল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথনির্দেশনা দেখতে পাবো। আশা করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসবেন, একটি সংলাপের ব্যবস্থা করবেন। কিভাবে বিরোধী দলের সঙ্গে একটি সমঝোতা করা যায় সে ব্যাপারে কথা বলবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটি পাইনি। জাতি অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল, অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে গেছে। এই অনিশ্চয়তা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের কথা ভুলে যাইনি।

সেখানে শতকরা ৫ ভাগ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ১৫৩ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হয়েছে। যে বিরোধী দল করা হয়েছে সেই বিরোধী দলকে কেউ গুরুত্ব তো দেয় না, সরকারও গুরুত্ব দেয় না। তাদের তিনজন সদস্য সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য। সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা বলে বিরোধী দলের নামে অদ্ভুত জিনিস জাতির সামনে হাজির করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি হচ্ছে জাতির সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রতারণা। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে এক হাজার কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৫০০’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পঙ্গু হয়েছে। মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ মানুষ আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এই যে বিভাজনের রাজনীতি, ত্রাসের রাজনীতি; বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি ফ্যাসিবাদ জন্ম দিয়েছে। সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারছে না। তাই অধিকারের কথা বলা এখন অপরাধ। যারা এই ধরনের কথা বলে তাদের চিহ্নিত করা হয়, হুমকি দেয়া হয়, এমনকি গুম-খুন করে দেয়া হয়।

মির্জা আলমগীর বলেন, সারা দেশ এখন কারাগারে পরিণত হয়েছে। মানুষের কথা বলার, সংগঠন করার অধিকার হরণ করা হয়েছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারের কথা মতো কাজ না করলে গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় তিনি অধিকার রক্ষায় দেশের মানুষকে ভয়কে দূর করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি সত্য কথা বলতে ভয় পেতেন না। সাংস্কৃৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। তিনি এমন সময় চলে গেলেন যখন তাকে খুব দরকার ছিল।

চাষী নজরুলের স্ত্রী জ্যোৎস্না কাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁঁইয়া ও জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মনির খান বক্তব্য দেন। পরে প্রয়াত চলচ্চিত্রকারের জীবন-কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।




পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন