ঝুলে গেল যুবদল

  28-10-2016 08:52AM


পিএনএস: আবারো অপেক্ষা বাড়লো যুবদলের পদ প্রত্যাশীদের। গুঞ্জন ছিল,সবকিছু চূড়ান্ত।যে কোনো সময় ঘোষণা করা হবে সংগঠনটির নতুন কমিটি।এজন্য পদ প্রত্যাশী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছিলো উত্তেজনা।কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু যেন থমকে গেলো।

কারণ যেখানে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি হওয়ার কথা কিন্তু সেটা না করে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদের অনুমোদন দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বুধবার রাতে সংগঠনটির সহ-সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টাকে দায়িত্ব দেয়ার ঘোষণায় যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

তারা বলছেন,ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুবদলের কমিটি ঝুলে গেলো। আবার কখন এই কমিটি আলোর মুখ দেখবে তা বলা মুশকিল।

আবার কেউ বলছেন,কমিটি নিয়ে মূল দলের বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্খা করা হয়েছিল। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য যৌক্তিক কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।তবে কেন্দ্রীয় ও তৃনমূলের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই চূড়ান্ত হওয়ার পরও কমিটি ঘোষণা না করায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

সংগঠনটির নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ ছিলো সংগঠনের ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।দল চাইলে কমিটি দিয়ে নেতাকর্মীদের উপহার দিতে পারতো।কিন্তু যা হলো এটা কেউ প্রত্যাশা করেনি।ফলে কমিটি যে আবার আটকে গেল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’

২০১০ সালের ১ মার্চ সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সভাপতি এবং সাইফুল আলম নীরবকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।একই সঙ্গে মামুন হাসানকে সভাপতি ও এস এম জাহাঙ্গীরকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যবিশিষ্ট ঢাকা মহানগর উত্তর এবং হামিদুর রহমান হামিদকে সভাপতি ও রফিকুল আলম মজনুকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট নগর দক্ষিণের কমিটিও ঘোষণা করা হয়।

একই বছর ৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ২১১ সদস্যের যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন। বর্তমান কমিটির সদস্য সংখ্যা ২৭১ জন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ি যুবদলের কমিটির মেয়াদ তিন বছর। কিন্তু ছয় বছরেরও অধিক সময় ধরে সংগঠনটির বর্তমান কমিটি (কেন্দ্রীয় ও মহানগর উত্তর-দক্ষিণ) বহাল রয়েছে।

গত মার্চে জাতীয় কাউন্সিলের কয়েকমাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।এরপর দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়,দ্রুত সময়ের মধ্যে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি করা হবে।কিন্তু এ পর্যন্ত দুটি সংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির নতুন কমিটিতে যুগ্ম মহাসচিবের পদ পাওয়ার পর মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এক নেতার এক পদের সিদ্ধান্তের কারণে কিছুদিন আগে সভাপতির পদ পদত্যাগ করেন।

অন্যদিকে দলের ঘোষণা মতে যেসব সংগঠনের কমিটি দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছিলো তার মধ্যে আলোচনায় শীর্ষে ছিলো যুবদলের কথা।কিন্তু সম্প্রতি ঘোষণা করা হয় মহিলা দলের কমিটি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য আ স ম হান্নান শাহর মৃত্যুর দিনে মহিলা দলের কমিটি ঘোষণা করায় এ নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

সবশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোষণা করা হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি।

দক্ষিণাঞ্চলের একটি জেলা যুবদলের সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কমিটির বয়স অনেক দিন হয়ে গেছে। নতুন কমিটি হবে আমাদের মধ্যে এমন আকাঙ্খা ছিল,চাহিদাও ছিল। কিন্তু যখন কমিটি যে কোনো সময় ঘোষণা হবে এমন খবর তারমধ্যে হঠাৎ করে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির হাতে দায়িত্ব দেয়ায় ঘটনা প্রমাণ করে কমিটি আবারো বিলম্ব হয়ে গেলো। আমরা হতাশ।’

আলোচনা আছেন যারা
যুবদলের কমিটিতে কারা আসতে পারেন তা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। তবে জোরালো শোনা যাচ্ছে সভাপতি হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর নাম।

তবে সভাপতির পদ পেতে চেষ্টা করছেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, মাহবুবুল হাসান পিংকু। আর সাধারণ সম্পাদকের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন যুবদলের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক।

যুবদলের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের জন্য এস এম জাহাঙ্গীর, যুবদলের সাংগঠনিক পদের জন্য রফিকুল ইসলাম মজনু ও হাবিবুর রশিদ হাবিব চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে। মজনুর জন্য স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী একজন সদস্য শীর্ষ দুই পদের একটির জন্য চেষ্টা করছেন বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,‘ইতিমধ্যে দুটি অঙ্গ সংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলোর কমিটিও দ্রুত সময়ে দেয়া হবে বলে আশা করি। তবে যারা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলেন তারাই নেতৃত্বে আসবেন।’

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন