না.গঞ্জে ‘ডিফেন্ডার’ শামীমকে পাশে চান না ‘স্ট্রাইকার’ আইভী!

  01-12-2016 03:01PM


পিএনএস, নারায়ণগঞ্জ: আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষ্যমতে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেলিনা হায়াত আইভী ‘স্ট্রাইকার’ হলে দলের জন্য শামীম ওসমান ক্রান্তিকালীন ডিফেন্স প্লেয়ার বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতৃবৃন্দরা।

আর তাই আসন্ন নাসিক নির্বাচনে নৌকার জয় নিশ্চিতকরণে স্ট্রাইকার আইভীর পাশে দক্ষ ডিফেন্ডার হিসেবে শামীম ওসমানের থাকাটা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা।

তবে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক অতীতের দ্বন্দ বিভেদ ভুলে সিটি নির্বাচনে তৃণমূলের ভাষ্যমতে ‘ডিফেন্ডার’ হিসেবে শামীম ওসমান নৌকার পক্ষে কাজ করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও, তাতে এখনো সাড়া দেয়নি দলীয় মেয়র প্রার্থী ‘স্ট্রাইকার’ সেলিনা হায়াত আইভী।

বরং স্ট্রাইকার আইভী ‘নাসিক নির্বাচনে শামীম ওসমান থাকলে ভালো, না থাকলে আরো ভালো’ মন্তব্য করে দলকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিমত নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের।

দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে অবসরে যাবার পর নতুন নেতৃত্বকে দাড় করাতে অনেক স্ট্রাগল করতে হবে। সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় হায়ার করা স্ট্রাইকার নয়, প্রয়োজন হবে জান বাজি করে লড়াই করা ডিফেন্ডার।

সারাদেশে বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলীয় প্রতীকে। তাই এই নির্বাচন প্রতিটা দলের কাছেই প্রেষ্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্যও এই নির্বাচন অগ্নি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের তৃণমূলের মতামত ছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্ষিয়ান নেতা আনোয়ার হোসেনকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হোক। কিন্তু দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেন সেলিনা হায়াত আইভীকে।

গণভবনে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের ডেকে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে বিবাদমান দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেন। আর দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সাংসদ শামীম ওসমান তখন মেয়র প্রার্থী আইভীকে বলেছিলেন, ছোট বোন, তুমি নিশ্চিন্তে বাড়ী যাও। আমি তোমার নির্বাচনের সব কাজ করে দেবো। শামীম ওসমানের মুখে এই কথা শোনার পর আশায় বুক বেঁধেছিলেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ভোটাররা।

তাদের কাছে মনে হচ্ছিল ঐক্যের সু-বাতাস বুঝি বইতে শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে। এবার হয়তো বন্ধ হবে নিজেদের মাঝে সৃষ্ট হওয়া মেরুকরণ। কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীদের সেই ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে গেলো আইভীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও বক্তব্যে।

রবিবার ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আইভী বলেন, শামীম ওসমান নির্বাচনে সক্রিয় হলে ভালো, নিষ্ক্রীয় থাকলে আরো ভালো। ওসমান পরিবারের সদস্যরা ছাড়া শামীম ওসমানের লোকেরাও আমার পক্ষে কাজ করবেন। তবে কেউ গোপনে, কেউ প্রকাশ্যে থাকবে।

আইভীর এই বক্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে। শামীম ওসমান যখন সকল বিভেদ ভুলে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে আইভীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন, তখন তার এই বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বহুল প্রতিক্ষিত ঐক্য আবারো প্রশ্নের মুখে পড়লো বলে মনে করছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

আর এ কারণে যদি নাসিক নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়, তাহলে এর দায় পুরোপুরি গিয়ে পড়বে আইভীর কাঁধে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন