৫ই জানুয়ারির পুনরাবৃত্তি না করার দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চরমোনাই পীরের ৭ দফা প্রস্তাব

  10-01-2017 07:34AM


পিএনএস : ৫ই জানুয়ারির মত একতরফা নির্বাচন দেশবাসি চায় না বলে মন্তব্য করেছেন, ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই)। তিনি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানান।
সোমবার নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে তিনি এ দাবি করেন।
বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে চরমোনাই পীর রাষ্ট্রপতিকে বলেন, আপনি শুধু দেশের রাষ্ট্রপতি নন বরং দেশের প্রবীণতম রাজনীতিবিদ। আপনার রয়েছে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্য। অনেক জাতীয় সঙ্কটকালে দৃঢ়তার সঙ্গে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা আপনার আছে।
তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ফলে জাতীয় রাজনীতিতে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সে সঙ্কট সমাধানে জাতির অভিভাবক হিসেবে আপনার গঠনমূলক উদ্যোগ সবচেয়ে ফলপ্রসু হবে বলে আমরা মনে করি।
নির্বাচন কমিশন গঠনে দলটির দেয়া সাত দফা প্রস্তাব হলো:
১. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত সব দলের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন এবং পেশিশক্তি, কালো টাকা, দলীয় প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন পদ্ধতির নিমিত্তে একটি আইনি কাঠামো প্রণয়ন।
২. পরীক্ষিত প্রশাসনিক দক্ষতা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও নীতির প্রশ্নে আপসহীন, নিরপেক্ষতাসহ জবাবদিহিতায় যারা আল্লাহ, দেশের জনগণ ও নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ।
৩. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কার্যকর সংসদ ও জাতীয় সংহতি প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত হলো কালো টাকা, পেশিশক্তি ও দলীয় প্রভাবমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নির্বাচন পদ্ধতির মতো এ দেশেও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য আইন প্রণয়ন।
৪. নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ন দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন এবং শক্তিশালী করা এবং নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে কিংবা সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যর্থ হলে এবং নির্বাচনকালীন পক্ষপাতদুষ্ট প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় এনে জবাবদিহিতার জন্য আইনি কাঠামো প্রণয়ন।
৫. অবসরপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দান না করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কারণ, অবসরপ্রাপ্তদের শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তা অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল হয়, যার বাস্তবতা বিগত দিনে দেশবাসী লক্ষ্য করেছে। যার কারণে বারবার নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত হয়েছে।
৬. জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের আলাদা সচিবালয় গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
৭. নির্বাচন কমিশন কোনো দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনসমূহের অধিকাংশ নেতা এবং কর্মীরা যদি দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ও মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয় এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তাদের যেন দলীয় নিবন্ধন বাতিল করতে পারে সেজন্য আইন প্রণয়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাইর নেতৃত্বে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য, অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন