ইসি গঠনে খেলাফত মজলিশের ৭ দফা

  18-01-2017 07:59AM

পিএনএস ডেস্ক: নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন ইস্যুতে নির্বাচনকালীন সময়ে সংবিধানের ভেতর থেকে একটি সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠনসহ সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে খেলাফত মজলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে দলের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদেরসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই প্রস্তাব দেয়। এছাড়াও মঙ্গলবার সংলাপে অংশ নেয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল।
খেলাফত মজলিশের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে বিকাল ৫টায় বঙ্গভবনে প্রবেশ করে। বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে এসে পৌনে ৬টায় দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, তার দল রাষ্ট্রপতিকে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
সাত দফা প্রস্তাবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে সে বিষয়ে আইন করা, সংবিধানের ভেতর থেকে একটি সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠন এবং সে ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন, বিদায়ী সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৫টি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে আলোচনার জন্য বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হয় ১৮ ডিসেম্বর রবিবার। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এ আলোচনা শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি এ পর্যন্ত ২৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
বিএনপি বৈঠকে নতুন ইসি গঠনে একটি সার্চ কমিটি গঠন এবং ইসিকে শক্তিশালী করতে জন প্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর প্রস্তাব দেয়।
ইসি গঠনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতিকে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
জাতীয় পার্টি (এরশাদ) পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাবে নতুন ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
লিবারাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছে, নতুন আইন করা ছাড়া এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (কেএসজেএল) একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ইসি গঠনের প্রস্তাব করেছে। নতুন ইসিতে নারী প্রতিনিধি রাখারও তারা প্রস্তাব করেছে।
ওয়াকার্স পার্টি একটি সার্চ কমিটি ও ইসি গঠনে আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে। তারা ইসিতে কমপক্ষে দু’জন নারী রাখারও প্রস্তাব করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ দিতে প্রস্তাব করেছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ইসির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পর্যায়ক্রমে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
ইসলামী ঐক্যজোট বর্তমানের পাঁচ সদস্যের পরিবর্তে আট সদস্যের ইসি গঠন এবং যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যাক্তিদের নিয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে।
জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ইসিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পর্যায়ক্রমে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী লোকদের নিয়ে একটি সার্চ কমিটি ও ইসি গঠনে ১৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। তারা নির্বাচন কমিশানর নিয়োগ দিতে সংবিধানের আলোকে একটি নতুন আইন প্রণয়নের ও প্রস্তাব করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) একটি সার্চ কমিটি ও নতুন ইসি গঠনে পাঁচ দফা প্রস্তাব করেছে।
নতুন ইসি গঠনের জন্য বাংলাদেশ সাম্যবাদি দল (বিএসডি) রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাবের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দলীয় নেতা ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সমন্বয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছে।
বাংলাদেশের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (এনএপি) নতুন ইসি গঠনে ৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এতে নতুন আইন প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কোন আলোচনা না করেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নতুন আইন প্রনয়নসহ সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ইসি গঠনে একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য নতুন আইন প্রণয়নসহ তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
নতুন ইসি গঠনে গণফোরাম ৯ দফা প্রস্তাব, গণতান্ত্রিক পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন আট দফা করে প্রস্তাব দিয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ পাঁচ দফা, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ তিন দফা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন