এমপি লিটনের আসনে উপ-নির্বাচন ২২ মার্চ

  19-01-2017 11:02AM


পিএনএস: দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত গাইবান্ধা-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটনের শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের জন্য প্রাথমিকভাবে আগামী ২২ মার্চ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশন বিদায়ের আগে এই আসনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনের উপ-নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আয়োজন করতে যাচ্ছে ইসি। প্রার্থিতা ফিরে পেতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর করা আপিল সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়ায় ইসি প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও তিন নির্বাচন কমিশনার এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি আরেক নির্বাচন কমিশনারের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। নতুন কমিশনকে দায়িত্ব গ্রহণ করেই বিদায়ী ইসি ঘোষিত তফসিলে ভোটের আয়োজন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে ভোটের বাধ্যবাধকতা থাকায় এ উপ-নির্বাচনসহ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বিদায়ী কমিশনকে দেয়ার পক্ষে প্রস্তাবনা দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ইতিমধ্যে গাইবান্ধা-১ আসনে উপ-নির্বাচন নিয়ে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, বর্তমান ইসি বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের পর আর কোনো নির্বাচন তারা করতে চাইছে না। কিন্তু গাইবান্ধা-১ আসন ও টাঙ্গাইল-৪ আসনে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনি জটিলতা কেটে যাওয়ায় এখন নির্বাচন আয়োজন করতে বাধা নেই।

নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী জানান, গাইবান্ধা-১ আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট সংসদ সচিবালয় থেকে ইসিতে পৌঁছেছে। সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে এ আসনে উপ-নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এদিকে, জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনের উপ-নির্বাচন বর্তমান কমিশন সম্পন্ন করে যেতে চায়। কারণ এই নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দও সম্পন্ন হয়েছে। শুধু বাকি রয়েছে নির্বাচন আয়োজনের। ফলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন। পরে তাকে বহিষ্কার করে তার দল আওয়ামী লীগ। মন্ত্রিসভা থেকেও তাকে অপসারণ করা হয়। সংসদ সদস্য পদ থেকে স্পিকারের কাছে পদত্যাগ করেন তিনি। পরে ৩ সেপ্টেম্বর শূন্য আসন বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। এরপর ইসি এ আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সে মোতাবেক ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর এখানে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

ওই শূন্য আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেন লতিফ সিদ্দিকীর ভাই কাদের সিদ্দিকী। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঋণ খেলাপের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে তা ১৮ অক্টোবর খারিজ হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টও বহাল রাখেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন কাদের সিদ্দিকী। কিন্তু সুপ্রিমকোর্টও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। ফলে ওই আসনে নির্বাচন আয়োজনে আর কোনো সমস্যা নেই।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন