সংলাপ ব্যর্থ হলে রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে : গোলাম মোস্তফা ভুইয়া

  22-01-2017 02:21PM



পিএনএস: রাষ্ট্রের সকল অর্জনের কৃতিত্ব একব্যাক্তি ও একদলকে দিতে গিয়ে আজ ইতিহাস বিকৃতি করা হচ্ছে। বৃহত রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাভোগি তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নিজের স্বার্থে ইতিহাস বিকৃতি করছে বলে অভিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাপ‘র স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভাসানীকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস নির্মিত হবে না।

রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে “মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস স্মরণে” বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণ সভায় ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক সৈয়দ শাহজাহান সাজু’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এনডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ সম্পাদক মোঃ কামাল ভুইয়া, নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু, নগর নেতা আবদুল্লাহ আল কাউছারী, যুব ন্যাপ যুগ্ম সমন্বয়কারী জিল্লুর রহমান পলাশ, জাতীয় ছাত্র কেন্দ্রের যুগ্ম সমন্বয়কারী সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপের ফলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে বলে জাতি আশা করছে। কিন্তু, সরকারের একগুয়েমীর কারণে যদি রাষ্ট্রপতির সংলাপ ব্যর্থ হলে দেশের রাজনীতিতে আবারো অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। যা কল্যাণ কামী রাষ্ট্রের জন্য শুভ লক্ষন নয়। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে জনগণের চোখের ভাষা বুঝে রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করবেন বলে আশা করি। যার মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া মজলুম জননেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে তার অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, মওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কোন ইতিহাস নির্মান করা সম্ভব নয়। ৪৭, ৪৯, ৫২, ৫৪, ৫৭ কাগমারী সম্মেলনে ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারনের মধ্য দিয়ে প্রথম স্বাধীনতার মন্ত্র উচ্চারন, ৬৯ ও ৭০, ৭১ মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ৭৬ সালে ফারাক্কা লংমার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বীজ বপন কোথায় নেই মওলানা ভাসানী ? তাকে বাদ দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতীয়তাবাদের কথা বলে মুখে ফেনা তোলেন তারা মূলতঃ আত্ম প্রবঞ্চক। ইতিহাসের গতিধরায় মওলানা ভাসানী টিকে থাকবেন।

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেছেন, মওলানা ভাসানীকে নিয়ে ভাবতে গেলে নুতন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতি চোখ বন্ধ রাখলে চলবে না। তার সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করে গণতন্ত্র হত্যাকারী শক্তির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। চার দিকে আজ ষড়যন্ত্রকারীরা উৎপেতে আছে। শুকুনীর কালো থাবা বাংলাদেশের মানচিত্র খাবলে ধরেছে। এই শুকনীর বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে আমাদের অনেক বড় মাসুল দিতে হতে পারে। শাসকগোষ্টি ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদলেহনে যখন ব্যস্ত তখন জাতি হিসাবে আমরা আতংকিত।

মোঃ শহীদুননবী ডাবলু মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান এবং তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় ভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মওলানা ভাসানীকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার প্রক্রিয়া কখনো সফল হবে না। যতদিন শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চলবে ততদিন মওলানা ভাসানী থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহজাহান সাজু বলেছেন, শাসকদল আওয়ামী লীগ যেমন মওলানা ভাসানীকে তারা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চাচ্ছে তেমনই তাঁর নাম ব্যবহারকারীরাও বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলেও তাঁকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেছেন, মওলানা ভাসানীকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার প্রক্রিয়া কখনো সফল হবে না।

ভাসানীর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন : স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, মুক্তিযুদ্ধকালে প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাপ‘র উদ্দ্যোগে যাদু মিয়া মিলনায়তনে মজলুম জননেতার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর, ভাসানী সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিষদ, বাংলাদেশ যুব ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র কেন্দ্র-সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন