পিলখানা ট্রাজেডির দায় ক্ষমতাসীনরা এড়াতে পারে না: জামায়াত

  26-02-2017 01:10AM

পিএনএস ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, পিলখানা হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দেশের চৌকস, দেশপ্রেমী ও মেধাবী সেনাকর্মকর্তাদের হত্যা করে দেশের স্বধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্র্রীয় নিরাপত্তা ও জাতিস্বত্বাকে মারাত্মক হুমকীর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

দেশ, জাতি এবং দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই আধিপত্যবাদী অপশক্তির মদদে ইতিহাসের এই রক্তাক্ত অধ্যায়ের সৃষ্টি করা হয়েছিল।

তিনি নিহতদের শাহাদাত কবুলিয়াত ও পিলখানা শহীদ পরিবারকে ধৈর্যধারণ এবং নির্মম হত্যাকান্ডের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে ও দেশ-জাতির কল্যাণ কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করেন।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত পিলখানা শহীদদের স্মরণে ‘আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল’ এ সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইবনে কারীম আহমদ মিঠু, মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও এ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন সুজা প্রমূখ।

সেলিম উদ্দীন বলেন, মূলত পিলখানা ট্রাজেডির মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল ও রাষ্ট্রীয় সীমান্তকে অরক্ষিত করা হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়তই সীমান্তে নিরপরাধ মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে নিজেরাই জননিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।

সরকারের জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সকল সময়ের সীমা অতিক্রম করেছে। কিন্তু জনগণ সরকারের দলন-পীড়ন ও সীমহীন ব্যর্থতার বিরুদ্ধে যাতে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে সে জন্যই দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংশ করে দিয়েছে এবং জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে প্রকারান্তরে একদলীয় শাসনকে চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ ও জাতির আবেগ-অনুভূতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করতেই প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে প্রহসন করে দেশপ্রেমী জাতীয় নেতৃবৃন্দ সাবেক সফল মন্ত্রী ও সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে।

দেশপ্রেমী ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতেই সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মাধ্যমে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণ সরকারের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিপন্থী কোন কার্যক্রমকে মেনে নেবে না বরং এ ধরনের অন্যায় ও অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, পিলখানা ট্রাজেডির দায় ক্ষমতাসীনরা কোন ভাবেই এড়াতে পারে না। হত্যাকারীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের হত্যা ও নির্মম নির্যাতনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। রাজধানীর উপকন্ঠে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যা ও নিধনযজ্ঞ চালালেও সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি ।

এমনকি হত্যাকান্ড নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টগুলোও আজও আলোর মুখ দেখেনি। তিনি ঘটনার নেপথ্যের মূল নায়কদায়ীদের বিচার আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন