‘শিগগিরই আসছে খালেদা জিয়ার নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা’

  10-03-2017 02:18AM

পিএনএস: নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই রূপরেখা দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা অগ্রিম বলেন যে, শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে এসব কথা বলে বলে তারা আমাদের জনগণকে, দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। আগামী নির্বাচনের সরকার সম্পর্কে ‘দেশনেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়া রূপরেখা দেবেন অতি শিগগিরই। সেই রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আগামী নির্বাচন পরিচালনা করবে, ইনশাআল্লাহ।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে যুবদল এ আলোচনাসভার আয়োজন করে।

সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, দেশনেত্রী যে রূপরেখা দেবেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের, তা যদি বর্তমান সরকার তাকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে ২০১৪-এর নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করতে চায়, তাহলে এ দেশের মানুষ আগের মতো প্রতারিত হয়ে মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। ইনশাঅল্লাহ; খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এ দেশের মানুষ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কায়েম করবে। সেই সরকারের অধীনেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে এ দেশের জনগণ ক্ষমতায় বসাবে ইনশাআল্লাহ।

অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে গায়ের জোরের সরকার একইভাবে টিকে থাকার জন্য নানারকমের ফন্দি-কৌশল-ষড়যন্ত্র করছে। এই ফন্দি- কৌশল-ষড়যন্ত্র আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। তারা (সরকার) চেষ্টা করছে, নানাভাবে নানা কথা বলে আমাদের কর্মীদের বিভ্রান্তি করতে। এসব করে তারা আমাদেরকে নেতিবাচক রাজনীতির দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি বলতে চাই, আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি, জাতীয়তাবাদী দল ইতিবাচক রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা আশাবাদী যতই ষড়যন্ত্র করেন, যতই বিদেশীদের ক্রীড়নক হিসেবে, সম্প্রসারণবাদীদের ক্রীড়নক হিসেবে দেশের মানুষের ওপর জোর করে আপনারা বসে থাকবেন, তা অতীতেও সম্ভব হয়নি, আগামীতেও হবে না। তিনি বলেন, এই সরকার সহজে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মানবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। অতত্রব দাবি মানানোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আমি আশা করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে প্রত্যাশা নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদল গঠন করেছিলেন, আগামী দিনে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, জনগণের ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য এবং একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে আন্দোলন হবে, সেই আন্দোলনে যুবদল-ছাত্রদল নির্বিশেষ সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই আন্দোলনকে সফল করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে প্রত্যাখান করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে তাই আওয়ামী লীগের যে যাই বলে থাকুন, আগামীদিনে শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।

‘বিএনপি মনে করে ১/১১ সরকারের ধারাবাহিক সরকার হচ্ছে বর্তমান এই শাসকগোষ্ঠী। তারা এখন গায়ের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে স্বৈরচারী ও ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে। বেছে নিয়েছে গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলা’ যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতির কান্ডারী এবং জাতীয়তাবাদের দিশারী তাই ১/১১ সরকারের মত বর্তমান এই সরকার তাদের নীল নকশা বাস্তবায়নে আদালতকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক নূরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন উপস্থিত ছিলেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন