শেখ হাসিনার নির্দেশ মতো না চললে, কেউ রক্ষা করতে পারবে না: সেতুমন্ত্রী

  23-04-2017 01:08AM

পিএনএস, চট্রগ্রাম: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সকলকে দলের নিয়ম নীতি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। দলে কোনো প্রকার বিভেদ ও কোন্দল সহ্য করা হবে না। যারা দলে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত এবং খারাপ আচরণ করছেন, তাদেরকে সংশোধন হতে হবে, এটি করতে না পারলে এবং আমাদের নেতা শেখ হাসিনার নির্দেশ মতো চলতে না পারলে, কেউ আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না।

তিনি শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্রগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের ব্যক্তি স্বার্থে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্মীদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার না করতেও আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ব্যক্তি স্বার্থে কখনোই ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যবহার করবেন না। ব্যবহার করলে আপনি এবং ছাত্রলীগ উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কখনোই এক ঘরের মধ্যে আরেক ঘর বানানোর চেষ্টা করবেন না। তিনি দলের কোন্দল ভুলে যেয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে ঐক্যবদ্ধ হতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।

এদিকে বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, গুলশান, আশকুনা, সীতাকুন্ড, মিরসরাই, সিলেট এবং শোলাকিয়ার জঙ্গি ঘটনাসহ দেশে সকল গোলযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের প্রধান হোতা হচ্ছে বিএনপি। বিএনপি’র আচরণ হচ্ছে বেপরোয়া গাড়ি চালকের মতো। তারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি অতীত থেকে শিক্ষা না নিলে ভবিষ্যতে তাদেরকে আরো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

সেতু মন্ত্রী বলেন, বিএনপি জাতীয় নিবার্চনে সকল আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ, কুমিল্লার নির্বাচনে জয়লাভ করে তারা মনে হচ্ছে বিশ্ব জয় করে ফেলেছে। অথচ আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরও আমরা কোনো আনন্দ উল্লাস করি নাই। তিনি বিএনপিকে একটি ইস্যু ভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তারা এখন ভারত বিরোধী ইস্যুকে পুঁজি করছে। এর আগেও তারা অনেক ইস্যু সৃষ্টি করেছে। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সমর্থন দেয়নি।

বিএনপি এখন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ইস্যু সৃষ্টি করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে এবং একটি ব্যর্থ দল হিসেবে পরিগনিত হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের এক বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কোন ব্যক্তির আচরণের কারণে এই সুনাম যেন নষ্ট না হয়। এ জন্য তিনি দলের নেতা কর্মীদের সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অর্জন মানে বাংলাদেশের অর্জন, এ কারণে আমরা সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে দিব না। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের প্রত্যেক নেতা কর্মীর কর্মকান্ড ও আচরণ সম্পর্কে অবহিত।

অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তি হচ্ছে দেশের জনগণ এবং বিএনপির প্রধান শক্তি হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিকভাবে নিজামী ও মুজাহিদসহ পাকিস্তানের দোসরদের পুনর্বাসিত করে প্রমাণ করেছেন, তারা পাকিস্তানের গুপ্তচর।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ এমপি, মুস্তাফিজুর রহমান মিতা এমপি, দিদারুল আলম এমপি, পৌরসভা চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান এবং চট্রগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামূল হক শামিম এবং মহিবুল হাসান নওফেল এবং দলের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
বাসস অবলম্বনে

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন