‘ছাত্রশিবিরকে বাদ দিয়ে সন্ত্রাস-দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব নয়’

  25-05-2017 12:58AM

পিএনএস ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ বরকত আলী বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অযুত সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু যোগ্য মানুষের অভাবে আমরা আমাদের বিদ্যমান সম্পদ যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। পৃথিবীর ধনী দেশগুলো সুযোগ সুবিধার আড়ালে নানা প্রলোভন দেখিয়ে এদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে।

যার দরুন প্রত্যেক বছরই মেধার শীর্ষে থাকা মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঐ সকল দেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে দেশে ফিরে না আসায় আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমিকে তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তাছাড়া দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে সম্ভাবনাময় মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে গিয়ে বিপদগ্রস্থ হয়ে তাদের মা বাবার আজন্ম লালিত স্বপ্ন বিনষ্ট করে দিচ্ছে।

দেশের বর্তমান বিরাজিত পরিবেশে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঠিক পথ নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিমুক্ত- সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য ছাত্রশিবির নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আজ মেধাহীন ও সন্ত্রাস নির্ভর ছাত্র রাজনীতির বিপরীতে এ ছাত্র সংগঠনটি এদেশের ছাত্র সমাজের কাছে সন্ত্রাসমুক্ত মেধাবীদের প্রিয় ঠিকানা হিসেবে পরিণত হয়েছে।”

স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে যারা আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ছাত্রশিবিরকে বাদ দিয়ে এদেশে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।”

একই সাথে তিনি সম্ভাবনার বাংলাদেশকে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নিতে মেধাবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবির’র উদ্যোগে এসএসসি/দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (২৪ মে) এসব কথা বলেন।

নগর উত্তর শিবির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম’র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী এস কে সিকদার ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ, শিবির নেতা সালেহ রায়হান, কামাল উদ্দীন, জসিম মানিক, কুতুব উদ্দীন, আহসান উল্লাহ, আমান উল্লাহ, সাইফুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ। কৃতি ছাত্রদের মধ্যে সায়েম হোসাইন, আশরাফ মাহবুব ও জায়েদ হিজবুল্লাহ তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেন।

প্রধান বক্তা মু’তাসিম বিল্লাহ বলেন, “দেশের প্রশাসনের প্রত্যেকটি টেবিল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তার উপর ক্ষমতাসীন সরকার দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ বানাতে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে জাতিকে ধর্মহীন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যার দরুন শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামী ভাবধারার লেখকদের প্রবন্ধ-কবিতা উঠিয়ে দিয়ে তার পরিবর্তে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা চালু করেছে।

রাষ্ট্র ক্ষমতায় জোর পূর্বক চেপে বসা অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে শিক্ষাঙ্গনে সেশন জট, সরকার দলীয় ক্যাডারদের সন্ত্রাস ও সীমাহীন দুর্নীতি, বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র-খাতা ফাঁসসহ নানা অপতৎপরতায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছে। এর ফলে দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের হার। পরিকল্পিত ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মহীন করার সুগভীর চক্রান্তের ব্যাপারে আমাদের সজাগ ও সচেতন থেকে নৈতিকতা বিরোধী ও জাতি বিনাশী শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মেধাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মেধাবী ছাত্রদের এগিয়ে আসার কোন বিকল্প নেই। দেশকে কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মেধাবীর জন্যে যা যা করণীয় তা করতে ছাত্রশিবির সাধ্য মতো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সে সাথে নিজেদের পড়ালেখার পাশাপাশি আদর্শিক জ্ঞান অর্জন করে সমাজে নিজেকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গঠন করার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ মেধার স্বীকৃতি হিসেবে উপস্থিত কৃতি ছাত্রদের হাতে ক্রেস্ট, ফুল ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন