বিএনপিকে সংসদে চায় ক্ষমতাসীন জোট!

  21-06-2017 09:25PM

পিএনএস ডেস্ক : সংসদনবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে দীর্ঘদিন সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিকে ফের সংসদে দেখতে চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট। আগের বারের ভুল এবার আর দলটি করবে না এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে অহেতুক মাঠ গরম করার মিথ্যে চেষ্টা না করে মাঠকে ভোটের উপযুক্ত করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তারা। সেইসঙ্গে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার নিন্দা জানিয়ে এটি নিয়ে রাজনীতি না করার জন্যও দলটির নেতাদের আহ্বান জানান।

বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলার ঘটনার পরপরই আমাদের সাধারণ সম্পাদক বিবৃতি দিয়েছেন। নিন্দা জানিয়েছেন। এই নিন্দনীয় কাজ নিয়ে রাজনীতি করবেন না। ঘটনার তদন্ত হলে রহস্য বেরিয়ে আসবে মন্তব্য করে বিএনপিকে ‘আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার’ কথা বলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসের রাজনীতি বিএনপিই করে। একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কারা করেছিল? আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা কে করেছিল? শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে কে হত্যা করেছিল?

হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যাওয়ার কথা ছিল রাঙামাটি রোড হয়ে। পুলিশকে সেরকমই জানিয়েছিল। পরে তারা রুট পরিবর্তন করলেও সেটা প্রশাসনকে জানায়নি।

সাবেক এই বনমন্ত্রী বলেন, ইছাখালীতে তাদের গাড়ির ধাক্কায় দুজন আহত হন। সেখানে জটলা হয়। মানুষের ওপর দিয়ে গাড়ি চালাতে চান। তখন জনতা তাদের ওপর চড়াও হয়। ঘটনার পরপর তাদেরকে পুলিশ রাঙামাটি যাওয়ার জন্য নিরাপত্তা দিতে চায়। তারা না গিয়ে চট্টগ্রাম ফিরে প্রেস কনফারেন্স করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে খালেদা জিয়ার হাতে দলটির মৃত্যু ঘটবে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, গতবার নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি আইসিইউতে চলে গিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির মৃত্যু ঘটবে। আমরা চাই না খালেদা জিয়ার হাতে বিএনপির মৃত্যু ঘটুক। আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুক। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হোক।

এদিকে আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না এলে বিএনপি জীবনের শেষ ভুল করবে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর পরই নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপি তাদের চরিত্র অনুযায়ী ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে উঠেছে। তারা বলা শুরু করেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। নির্বাচন কার অধীনে হবে? সংবিধানে সহায়ক সরকারের কোনই বিধান নেই। অবশ্যই নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। যদি বিএনপি সেই নির্বাচনে না আসেন, তাহলে তারা তাদের জীবনের শেষ ভুলটি করবেন। বিএনপি যে দল, সেই দল মুসলিম লীগে পরিণত হয়ে যাবে।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন প্রতিরোধ? আমরা আগেও শুনেছি, এখনও শুনছি। খালেদা জিয়া অবরোধ দিয়েছিলেন নির্বাচন প্রতিরোধ করার জন্য। সেই অবরোধ এখনও পর্যন্ত প্রত্যাহার না করলেও সে কথার ফানুস রয়ে গেছে। তাই নির্বাচন প্রতিরোধ করার বিষয় কথার ফানুস থাকবে বলে আমি মনে করি। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঘোষণার পর একই সঙ্গে বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সাহেব, হিলারী নিজেরাই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেখানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে এসে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করার পরামর্শ কিভাবে দেন আমরা জানি না? কোন নৈতিক শিষ্টাচার হিসেবে আজকে তাদের উচিত হবে আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, আমরাও সবার অংশগ্রহণে স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। কিন্তু সেটা হতে হবে আইনের অধীনে, সংবিধানের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশন যেভাবে পরিচালনা করবে সেভাবে সেটা হতে হবে। রাজনীতিতে এক নতুন প্রক্রিয়া লক্ষণীয়। জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও বিএনপির ছত্র-ছায়ায় অংশ নেয়ার চেষ্টা করছে। অন্য দিকে হেফাজতসহ দলগুলো নড়াচড়া শুরু করেছেন। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে ৫ মের পুনরাবৃত্তির কথা বলেন। এই ঔদ্ধত্য অতীতেও গ্রহণ করা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি পুন:প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই। আগামী নির্বাচনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।

পিএনএস/জে এ/মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন