ক্ষমতার চেয়ারে বসে যা খুশি তা করা যায় না: সেলিম

  13-08-2017 04:01AM

পিএনএস ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ইতিহাস বিকৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। আজকে অনেকেই অনেক রকমভাবে আকারে ইঙ্গিতে ইতিহাস বিকৃতি করতে চায়। এরাও একই গ্রুপের লোক, তা বলতে আমার দ্বিধা নেই।’

শনিবার বিকালে কৃষিবিদ ইস্টটিটিউট মিলনায়তনে যুব মহিলা লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, কার্যনির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা জাহান, যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি জাকিয়া পারভীন মনি, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোদেজা নাছরীন, জেদ্দা পারভীন খান রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক সালমা ভূঁইয়া চায়না, শারমিন সুলতানা লিলি, শারমীন সুলতানা শরমী, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ঝুমা প্রমুখ।

‘সময়ে এদেরও বিচার হবে’-এমন মন্তব্য করে শেখ সেলিম বলেন, ‘ক্ষমতার কোনো চেয়ারে বসে যা খুশি তাই করবেন-তা করা যায় না। এ দেশের জনগণ সময় মত সঠিক উত্তর দেবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় তার বাড়িতে আক্রমণের পর ফোন করার পরও সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা সেদিন এগিয়ে আসেনি, সেই প্রশ্ন ‍তুলেন সেলিম। এই রহস্য উদঘাটনে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভোরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ করে সেনাবাহিনীর বিপথগামী কিছু সদস্য। তারা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির বাড়িতেও আক্রমণ করে তাদেরকে হত্যা করে।

এই আক্রমণের পর বঙ্গবন্ধু সহায়তা চেয়ে সে সময়ের সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহকে একাধিকবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর দল বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। আর বিদেশে থাকা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে খুন করে আক্রমণকারীরা।

১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে (শেখ ফজলুল হক মণি ও আরজু মণি) হত্যার পর খুনিদের বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যেতে অনেক সময় লেগেছিলো। সে সময় বঙ্গবন্ধু বেশ কয়েক জায়গায় ফোন করেছিলেন। আর্মি চিফ সফিউল্লাহকেও ফোন করেছিলেন। কর্নেল জামিলকে ফোন করার সাথে সাথে সে গণভবনের দিকে ছুটে গিয়েছিল।’

‘সফিউল্লাহকে একবার নয়, দুইবার ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন সফিউল্লাহ তোমার সেনাবাহিনী আমার বাড়ি আক্রমণ করেছে। সফিউল্লাহ উত্তরে বলেছিলেন আপনি একটু পাশে কোন জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেন না। কেন এ নীরবতা? কেন সেদিন সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে আসে নাই।’

শেখ সেলিম বলেন, ‘সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ, ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ এবং সাফায়াত জামিল কেন আসেন নাই। এ রহস্য এখনও উন্মোচন হয়নি। ১৪ জন সেনাকর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও আর তারা সেটা নীরবে দেখলো। তারা বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে আসলে তিনি বেঁচে যেতেন। এর রহস্য কী? তা বের করতে একটা কমিশন গঠন করা দরকার।’

‘বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে। এখন সত্যিকার রহস্য বের করার জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে যারা বেঈমানি করেছে কেউ বাঁচে নাই। এ জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফও ওইভাবে চলে গেছে। সফিউল্লাহ তো আজকে জীবত মৃত্যু। মানুষ তাকে ঘৃণা করে।’

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন