বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ন্যাপের

  15-08-2017 01:04AM

পিএনএস ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে অতি বৃষ্টি, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারতের গজলডোবা বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ায় সৃষ্ট দুর্যোগ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাহায্যে দেশের বিত্তবান সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

সোমবার দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এক বিবৃতিতে দেশে অবনতিশীল বন্যা পরিস্থিতি ও পানিবন্দী মানুষের চরম দুর্ভোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উজানে অতিবৃষ্টি ও হঠাৎ করে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ খুলে দেয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, পলিমাটি ও আবর্জনায় নদীসমূহ ভরাট হয়ে গেছে। আর এরই কারণে ভাটির নদী সমূহ বন্যার অতিরিক্ত পানি ধারণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ কারণে পানি উপকূল ছাপিয়ে জনবসতিকে প্লাবিত করছে। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী ‘মমতা ব্যানার্জি’র প্রতিনিধি বর্ষাকালে বাংলাদেশকে পানি দেয়া হবে বলে যে ব্যাঙ্গোক্তি করেছিলেন, তা আজ সত্যে পরিণত হয়েছে।

তারা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকালে বহু প্রতিক্ষিত ও আকাঙ্খিত তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি হয়নি। ফলে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি সম্বলিত বাংলাদেশের দাবি আবারো ভারতের আশ্বাসের প্রাচীরে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সম্পর্কে ভারতের সর্বশেষ আশ্বাস বাংলাদেশের জনগণের প্রতি বিদ্রুপতা ও নিষ্ঠুর পরিহাস ছাড়া অন্য কিছুই নয়। ভারত আন্তর্জাতিক সকল আইন, কনভেনশন ও প্রটোকলকে পদদলীত করে দু’দেশের মধ্যে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে প্রায় সকলটির উজানে ড্যাম, ব্যারেজ ও গ্রোয়েন নির্মাণ করে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে চলেছে।

এসব বাঁধের মাধ্যমে অভিন্ন নদীসমূহের পানি একতরফা প্রত্যাহারের ফলে শুষ্ক মওসুমে পানির অভাবে বাংলাদেশের হাওর, বিল, নীচু জলাভূমি শুকিয়ে যায় এবং এ কারণে কৃষি, মাছ, খাবার পানি, নৌ চলাচল ইত্যাদি দারুণভাবে ক্ষুন্ন হয়, জীব-বৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। আর বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশের জনপদ, ফসলের জমি, বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস হয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। শুধু বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরাই নন, আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞানীরাও ভারতের পানি আগ্রাসন বাংলাদেশের নদী-প্রকৃতি ও পরিবেশ হত্যার নীল নকশা বলে মনে করেন।

নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় লাখ লাখ পানিবন্দী মানুষ অত্যন্ত ঝুকি ও কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। বন্যাদুর্গত মানুষ ক্ষেতের ফসল, মাঠের শাক-সবজি, গোলার ধান, গরু-বাছুর হারিয়ে সর্বস্বান্ত। এরকম নাজুক পরিস্থিতিতে বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে নামমাত্র ও লোক দেখানো ছাড়া তেমন কোনো ত্রাণ কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বহীনতার প্রমাণ।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বন্যা দুর্গত এলাকায় পানিবন্দী মানুষের কাছে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী সরবারহের জোর দাবি জানান। একই সাথে বাংলাদেশ ন্যাপ'র নেতা-কর্মী ও সমাজের সামার্থ্যবান লোকদেরকে বন্যাদুর্গত মানুষের সাহায্যে ত্রাণ তৎপরতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বণ্যার কারণে সারা দেশে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন