কাদের ও মওদুদের বিকল্প নেই, স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন ফখরুল

  18-10-2017 06:17PM

পিএনএস ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নোয়াখালী-৫ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে দলীয় প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত। এখানে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

অপরদিকে বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বড় দুই দলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর নির্বাচন করাটা প্রায় নিশ্চিত। তবে আওয়ামী লীগ থেকে ওবায়দুল কাদেরের বিকল্প কোনো প্রার্থী না থাকলেও বিএনপির স্থায়ী কমটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ভোট করতে হবে তাদের ঘরানার (২০ দলীয় জোট) স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

বিএনপি থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রার্থী হলে ফখরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন এটি অনেকটা নিশ্চিত। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি ও জাসদ থেকেও প্রার্থী হতে পারে বলে জানা গেছে।

সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একক প্রার্থী এটি নিশ্চিত হলেও সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রয়েছেন বিভ্রান্তিতে। কারণ নোয়াখালী-৫ সংসদীয় আসনে দু’উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটে বিএনপির বিরোধ এখন তুঙ্গে।

এখানকার বিএনপির একটি অংশ পদপদবীর জন্য মওদুদ আহমদের পাশে থাকলেও দলের বিশাল একটি অংশ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ইতিমধ্যে ফখরুল ইসলামও এলাকায় দান অনুদান, ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতা দিয়ে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশের মন জয় করে নিয়েছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে ওবায়দুল কাদের রয়েছেন খুবই শক্ত অবস্থানে। প্রথমত, তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। দ্বিতীয়ত, দল ক্ষমতায় থাকার সুবাদে সারা দেশের ন্যায় নোয়াখালী-৫ আসনেও তিনি ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন। তৃতীয়ত, সাংগঠনিকভাবে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট) বেশ সক্রিয়।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক যোগ্যতা, সততা, কাজ করার আগ্রহ ও সাংগঠনিক দক্ষতায় অন্য প্রার্থীরা ওবায়দুল কাদেরের চাইতে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। নোয়াখালী-৫ আসনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক ও রাজনৈতিক জৌলুস রয়েছে বলে যে কথাটি প্রচলন ছিল, সময়ের পালাবদলে তা এখন আর নেই। সেই স্থানটি এখন দখল করে নিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

এলাকা ঘুরে জানা যায়, সাংগঠনিক শক্তি খর্ব, দলীয় কোন্দল, দীর্ঘদিন দল ক্ষমতার বাইরে থাকা, নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে ফখরুল ইসলামের আবির্ভাব সব কিছু মিলিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ মাঠের রাজনীতিতে তেমন ভাল অবস্থানে নেই। রাজনীনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মওদুদ আহমেদকে প্রথমে লড়তে হবে ফখরুল ইসলামের সঙ্গে। তার পর ওবায়দুল কাদের।

বিএনপির একটি বড় অংশ দাবি করেন, এ আসনে নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি হবে টাকার খেলা। যে খেলায় অনেকটা পিছিয়ে আছেন মওদুদ। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে দলের যে চাঙ্গা ভাব থাকা দরকার তা নেই। এক্ষেত্রে ফখরুল ইসলামের মতো একজন উদার ও দানবীর নির্বাচন করলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। নেতা-কর্মীরাও থাকবেন উজ্জীবিত।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মতে, নোয়াখালী-৫ আসন আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে এত শক্ত অবস্থানে আসার পেছনে মূল কাজ করে যাচ্ছেন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ও কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান।

ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ ৩ নেতা দিন রাত কাজ করে দলকে আজ এ অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। তা ছাড়া ওবায়দুল কাদের এলাকায় ঘনঘন যাতায়াত করেন এবং এলাকার খোঁজখবর নেন। অপরদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগকে সাংগঠনিকভাবে চাঙ্গা রেখে এ আসনকে শক্তিশালী করে রেখেছেন ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত।

অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জের উপকূলীয় এলাকায় নদীভাঙন রোধে ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে মুছাপুর ক্লোজার প্রকল্প বাস্তবায়ন, ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী জেলার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরারগঞ্জ সড়ক ও সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বড় বড় কাজের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ও সোলার প্যানেল স্থাপনসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক কাজ করার কারণে ওবায়দুল কাদের এ আসনে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়।

এ ছাড়া পদ্মা বহুমুখী সেতু, মেট্রোরেল, ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেন সড়কের মতো বড় বড় প্রকল্প ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হওয়ায় সাধারণ মানুষ মনে করছে এলাকার উন্নয়নে তিনিই উপযুক্ত। ফলে ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয়।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওবায়দুল কাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরো সংগঠিত করার জন্য তিনি নিজে ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন। দলীয় নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে প্রচারণার মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরছেন। ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সংগঠনকে গুছিয়ে নির্বাচনমুখী করতে দিন রাত কাজ করলেও বিএনপি মাঠের রাজনীতিতে অনুপস্থিত। তারা পুড়ছে দলীয় কোন্দলের আগুনে। যে কারণে সাংগঠনিকভাবেও দলটি এখন বেশ পিছিয়ে রয়েছে। এসব সমস্যা নিরসনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদেরও কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

ওবায়দুল কাদের তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট উপজেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাল আচরণ, ত্যাগী কর্মীদেরকে মূল্যায়ন করা, যারা রাগ-ক্ষোভে দল থেকে দূরত্বে আছে, তাদেরকে দলে নিয়ে সক্রিয় করা, সরকারের দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরে নৌকায় ভোট চাওয়ার আহ্বান জানান।

এ আসনে স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৩ সালে আবু নাছের চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওবায়দুল কাদের ১৯৯৬ সালে প্রথম এ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৮ সালে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ১ হাজার ৩৭২ ভোটে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এবং সফল মন্ত্রী হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদেরের বিকল্প আর কেউ নেই। তিনি এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন। বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জবাসীর দুঃখ হলো নদী ভাঙন, সেই ভাঙন রোধে ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে মুছাপুর ক্লোজার বাঁধ নির্মাণ করেন।

জলাবদ্ধতা নিরসনে নোয়াখালী খালসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ৩৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এবং নোয়াখালী-চট্টগ্রাম যাতায়াতে সহজ করার জন্য সোনাপুর-জোরালগঞ্জ সড়ক নির্মাণ ও একটি ব্রিজ নির্মাণসহ ২৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ও বসুরহাট মুজিব কলেজে অনার্স কোর্স চালু ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন।

কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন। এ আসনে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় জনগণের আস্থা অর্জন করে নিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তাই আমরা আশাবাদী আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করবো।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, প্রার্থী হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের তুলনা হয় না। তিনি শুধু এ আসনে নয়, সমগ্র বাংলাদেশে জনপ্রিয়। বিগত ৯ বছরের উন্নয়ন অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে জনপ্রিয়তার অনন্য উচ্চতায় এখন ওবায়দুল কাদের। তার ব্যাপক উন্নয়নের ফলে আগামী নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মাঠে গিয়ে নির্বাচন করাই দুষ্কর হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে অনার্স কোর্স ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে সম্প্রতি চালু হওয়ার ঘোষণায় এ এলাকার শিক্ষার্থীদের পরিবার এখন ওবায়দুল কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞ।

কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘদিন যারা ক্ষমতায় ছিলেন এবং বিভিন্ন দল থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বার বার নির্বাচিত হন, কিন্তু সদর পূর্বাঞ্চল বা কবিরহাট উপজেলা অবহেলিত থেকে যায়। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন সাধিত হয়। ২০০১-২০০৬ সালে চারদলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থগিত হয়ে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ওবায়দুল কাদের ২য় বার এ আসনে এমপি হিসাবে নির্বাচিত হন। কবিরহাট উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত নোয়াখালী খালের জন্য ৪৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে কাজ শুরু করা ওবায়দুল কাদেরের সবচেয়ে বড় সাফল্য। নোয়াখালীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন সোনাপুর টু জোরালগঞ্জ সড়কটি বাস্তবায়ন করায় এটিও একটি উন্নয়নের বড় মাইল ফলক। বিএনপি কবিরহাটকে উপজেলা ঘোষণা করেই ক্ষান্ত, কিন্তু বাস্তবায়নটা করেন ওবায়দুল কাদের।

কবিরহাট পৌরসভা প্রতিষ্ঠাও ওবায়াদুল কাদেরের অবদান। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মান, শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়ন, সাব স্টেশন নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্থাপন, খাদ্য গুদাম নির্মাণ করেন। কবিরহাটে গত ৯ বছরে ৫শ’ কিলোমিটার নতুন রাস্তা পাকাকরণ, বসুরহাট টু মাইজদী সড়ক উন্নয়ন, উপজেলা সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন ভবন নির্মাণ, কবিরহাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, কবিরহাট কলেজে অনার্স কোর্স চালুও ওবায়দুল কাদেরের অবদান।

একই অভিমত ব্যক্ত করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. নুরুল করিম জুয়েল, কবিরহাট উপজেলা আওয়াম লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রুমি, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

নোয়াখালী-৫ আসনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে নেই। অতি সম্প্রতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মানিকপুর গ্রামে তার নিজ বাড়িতে কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট উপজেলার পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে বেশ কয়েকটি সভা করেন।

এসব অনুষ্ঠানে তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নেতাকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বসুরহাটকে পৌরসভায় উন্নীত করেন, মুজিব কলেজ, কবিরহাট কলেজ, বসুরহাট হাই স্কুল, মাকসুদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন। কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন, মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর নির্মাণ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা, ফায়ার সার্ভিস স্থাপন, নোয়াখালী জেলা জজ কোর্ট ভবন, কবিরহাটকে উপজেলা ও কবিরহাট থানা স্থাপন করেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। এ ছাড়াও তার সময়ে ব্যাপক গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করার বিষয়ে নেতাকর্মীদের অবহিত করেন।

তিনি সরকারের নানা অনিয়ম, ব্যার্থতা, ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কল্পে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব বাধা উপেক্ষা করে সাধারণ জনগণের কাছে গিয়ে ধানের শীষে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানান।

১৯৭৭-৭৯ সালে ব্যারিস্টার মওদুদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ সালে এ আসনে প্রথম এমপি নির্বচিত হন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করার পর ১৯৮৫ সালে নির্বাচনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আবার এমপি নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

এক বছর পর ১৯৮৬ সালে তাকে আবার উপপ্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপরাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ এ মওদুদ আহমদ আবার এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন।

তিনি তখন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচবার ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ নোয়াখালী-৫ আসনে নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে মওদুদ আহমদ নির্বাচিত হওয়ার পর এ আসন ছেড়ে দিলে এখানে উপনির্বাচনে তার সহধর্মীনী বেগম হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লে. কর্নেল (অবসর প্রাপ্ত) এএসএম এনামুল হক এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সেলিম বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ আসনে একমাত্র প্রার্থী। তার বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। তিনি নিয়মিত এলাকায় এসে দলের কার্যক্রম তদারকি করছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।

অপরদিকে এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যপক আ. ন. ম শাহজাহান ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসেন আজাদের এর নাম শুনা যাচ্ছে। তারা মনোনয়নের জন্য দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলেও জানা যায়।

জামায়াতে ইসলামী এ আসনে জোটবদ্ধ নির্বাচন না হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জেলা জাসদ (ইনু) সাবেক সভাপতি মাকছুদুুর রহমান মানিক ও সহসভাপতি অ্যাড. আজিজুল হক বকশি, জেলা জেএসডি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাউছার মিয়াজীসহ ছোট খাটো দলগুলোরও অনেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন