ফের মকবুল আহমাদকে রিমান্ডে নেওয়ায় জামায়াতের তীব্র ক্ষোভ

  14-11-2017 02:14AM

পিএনএস ডেস্ক: ২০১২ সালের একটি মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদকে পুনরায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ প্রায় ঊনাশি বছর বয়সের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে ব্যথা ইত্যাদি নানা রোগে তিনি ভুগছেন। অসুস্থ এ বয়োবৃদ্ধ নেতাকে একের পর এক রিমান্ডে নিয়ে মানসিকভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এটি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।

তিনি আরো বলেন, রিমান্ডে ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। ইতোপূর্বে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেয়া হলে উচ্চ আদালত তার শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনা করে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়।

অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ একজন রাজনীতিবিদকে এভাবে বারবার রিমান্ডে নেওয়ায় তার পরিবার-পরিজন দারুণভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। আমি সরকারের এহেন চক্রান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে এই বয়োবৃদ্ধ নেতাকে মুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসার সুব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় তার কিছু হলে সরকারকেই এর দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ পরবর্তী এক সমাবেশে জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে জনদুর্ভোগ এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারের পতনের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে এই জামায়াত নেতা বলেন, অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখী হতে হবে।

তসলিম আরো বলেন, সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষের দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ না করে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই ব্যস্ত রয়েছে। তারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করছে না।

তিনি বলেন, সরকার গণপ্রতিনিধিত্বশীল নয় বলেই তারা জনগণের কল্যাণে কোনো কাজ করে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অগণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে গণদুর্ভোগ আরো বাড়বে বলেো মন্তব্য করেন জামায়াতের এই নেতা।

বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তর বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেরুল বাড্ডা গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মিজানুর রহমান, নিয়ামুল করিম, জামায়াত নেতা এ আর সরকার, জিল্লুর রহমান ও ছাত্রনেতা জামিল প্রমূখ।

এছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর যেমন: বগুড়া, যশোর, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, টাঙ্গাইল, ফেনী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, জামালপুর, ফরিদপুর, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা ও নারায়নগঞ্জে, অনুরূপ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী ২৬ নভেম্বর দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়।
কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েই জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করছে এবং ঠাণ্ডা মাথায় সারাদেশে নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম ও অন্যায়ভাবে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের জেলখানায় পাঠিয়েছে।’

শফিকুর বলেন, জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতনের কারণে স্বৈরশাসনের পতন ঘটবে। জালেম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন