‘আল্লাহ শেখ হাসিনাকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য’

  23-11-2017 02:09AM

পিএনএস ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিএনপি মানে হাওয়া ভবনের দুর্নীতি ও লুটপাট আর অগ্নিসন্ত্রাস। এই দলটি আবারও যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে দেশ আবারও অন্ধকারে পড়বে। বাংলার মানুষ আর বিএনপির অন্ধকারে ফিরে যাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আলোর পথে রয়েছে। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো আরও উন্নত হবে।'

বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শক্তিপুর 'নূরজাহান ভবন' চত্বরে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মযহারুল ইসলামের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিন একথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী কাদের আরও বলেন, 'দেশবাসী ২০০১-০৬ সালের রক্তাক্ত ইতিহাস আর ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাসের কথা ভুলে যায়নি। ক্ষমতায় থাকতে তারা সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া, মঞ্জুরুল ইমাম, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।

মা-বোনদের ধর্ষণ করেছে। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্ত ঝরিয়েছে। রক্তের নদী আর কান্নার দরিয়ায় ভাসিয়েছে বাংলার মানুষকে। এখন তারা আবার লোক দেখানো মায়াকান্না করছে।'

শেখ হাসিনাকে 'মানবতার নেত্রী' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মহান আল্লাহপাক বঙ্গবন্ধুকে সৃষ্টি করেছেন বাংলার স্বাধীনতার জন্য আর শেখ হাসিনাকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য।

শেখ হাসিনা এখন সারা বিশ্বের বিস্ময়। সোয়া ৬ লক্ষ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাদ্য দিয়ে তিনি উদারতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন; যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের তা চোখে পড়ে না।'

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, 'ফটোসেশনের জন্য তিনি (খালেদা জিয়া) একবার বিশাল গাড়িবহর নিয়ে কক্সবাজার গিয়ে শো-ডাউন করেছেন। তার দলের মহাসচিবও একবার গিয়েছিলেন। অথচ আমি ২৫ দিন রোহিঙ্গাদের পাশে ছিলাম। কোনটা মন থেকে আর লোক দেখানো তা মানুষ এখন বোঝে।'

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি নেত্রী লন্ডনে চলে গেলেন, আন্দোলন থাকল তার ভ্যানিটি ব্যাগে। এই বছর না সেই বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর! পেট্টলবোমা মেরে মানুষ হত্যা, গাড়ি পোড়ানো, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও গাছ ধংস করার আন্দোলনের সাথে বাংলার মানুষ আর নেই।'

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দলের ভেতরে প্রতিযোগিতা থাকবে, সেটা যেন অসুস্থ বা কলুষিত না হয়। যারা উন্নয়ন করবেন আর সকলের সাথে ভালো আচরণ করবেন আগামী নির্বাচনে তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।

দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের কাছে টেনে নিন। দলে অনুপ্রবেশকারী আগাছাদের ঠাঁই দিবেন না। দল ক্ষমতায় না থাকলে পাঁচ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।'

প্রয়াত প্রফেসর মযহারুল ইসলাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর রক্তভেজা বাংলায় আমরা যখন এতিম, তখন অনেক সিনিয়র নেতাদের দরজায় কড়া নাড়লেও তারা দরজা খোলেনি।

অথচ সেই সময়েও মযহারুল ইসলাম আমাদের সাহস জুগিয়েছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য তিনি চোখের জল ফেলেছেন। এটা ভোলার নয়।'

'প্রফেসর মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের' উদ্যোগে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা ইসলাম কবিতা, সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, হাসিবুর রহমান স্বপন এমপি প্রমুখ।

সভার আগে সেতুমন্ত্রী প্রয়াত প্রফেসর মযহারুল ইসলামের মাজার জিয়ারত করেন ও প্রফেসর মযহারুল ইসলাম স্মৃতিস্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন