নৌকা-ধানের শীষের শোডাউনে কাঁপছে গাজীপুর

  25-04-2018 01:00AM

পিএনএস ডেস্ক:প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই পুরোদমে প্রচারণা শুরু করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। গলায় প্রতীক সম্বলিত কার্ড ঝুলিয়ে ও হাতে লিফলেট নিয়ে মিছিল করে গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় শোডাউন করেন দুই মেয়র প্রার্থী।

এর আগে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বিতরণ করেন।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে যান। এর আধ ঘণ্টার পর দলীয় নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম যান। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রথমে মেয়র প্রার্থী পরে সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন।

মেয়র পদে প্রতীক পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)। এর মধ্যে ছয় প্রার্থী তাদের দলীয় নির্ধারিত প্রতীক পেয়েছেন। একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তার পছন্দের প্রতীক টেবিল ঘড়ি দেয়া হয়েছে।

এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই প্রতীকে একাধিক প্রার্থীর পছন্দ থাকলে সেখানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।

বিভিন্ন প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্ধে পর রিটার্নিং কর্মকতার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় শ্লোগান দিতে দেখা যায়। এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রিটানিং কর্মকতার কার্যালয় থেকে বের হয়ে টঙ্গী থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার প্রতীক বরাদ্দের পর দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

নির্বাচনী প্রতীক হাতে পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর জনগণের কাছে এখন আমার প্রতীকটি উপস্থাপন করব। প্রতীক নিয়ে ভোটারের কাছে যাব। নৌকা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির প্রতীক, নগরবাসীর মুক্তির প্রতীক। আধুনিক এবং পরিকল্পিত নগর গঠনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাজে শরিক হতে ভোটারদের আহ্বান জানাবো। নৌকা প্রতীক বিজয়ী হলে গাজীপুর মহানগর হবে দেশের একটি অন্যতম আধুনিক মহানগর।’

এরপর জাহাঙ্গীর আলম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়ার বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। সেখানে জাতীয় পার্টির নেতারা পূর্ণাঙ্গভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন।

এ সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদিন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকসেদ আলী, মহানগর যুব সংহতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক দুলাল মৃধা, গাজীপুর সোসাইটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম বাবুল, মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল প্রমুখ।

এদিকে, বিএনপি মনোনীত দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকটি গাজীপুর নগরবাসীর পরিচিত একটি প্রতীক। এ প্রতীক উন্নয়নের প্রতীক। এ প্রতীকে ভোটদানে গাজীপুরবাসী ভুল করবে না।’

হাসান সরকার বলেন, ‘তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাস দমনসহ সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সর্বদা কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সব প্রার্থীর জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়নে সর্বদা তৎপর থাকতে হবে। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নিরপেক্ষ পরিবেশ সৃষ্টি এবং কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে তা বন্ধ করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে সাত মেয়র, ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার। এতে ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও মহিলা পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫টি। ভোটকক্ষ দুই হাজার ৭৬১টি।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন