গাজীপুরে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়ে গেছে

  24-06-2018 06:40PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২৬ জুন।এই নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।দুই দলই বেশ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আনছে। বিএনপির আশা, অতীতের মতো গাজীপুরবাসী তাদের পাশে থাকবে। আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষে সর্বোশক্তি নিয়োগ করে মাঠ কাঁপাচ্ছে।তারাও মনে করে বিজয় নিশ্চিত।

একটি পক্ষ ব্যাপাক প্রচারণা চালালেও অন্যপক্ষ ঢিমেতালে চালাচ্ছে। একপক্ষের ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেলেও অপর পক্ষের ভোটাররা কিন্তু নীরব। সরেজমিন গাজীপুর ঘুরে দেখা গেছে, বড় একটা অংশ মুখ খুলছে না। আর এই নীরব ভোটাররাই নির্বাচনের মাঠে ফলাফল নির্ধারণ করবেন বলে পর্যবেক্ষণ মহলের অভিমত।

বিএনপির প্রার্থীর স্পষ্ট বক্তব্য, অনিয়ম না হলে তার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিশ্বাস, তার বিজয় নিশ্চিত। বর্তমান মেয়রের লোকজন নাকি শুরুতে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে সোচ্চার ছিল না, তবে এখন সবাই মাঠে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি ভোট না চাওয়া সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ ও একজন মন্ত্রীর ভূমিকা বিতর্কিত থাকলেও সেটা নাকি কেটে গেছে। তারাও এখন মাঠে।


এদিকে মাঠে চাউর আছে, মিল-ফ্যাক্টরির মালিকদের বড় অংশ ক্ষমতাসীনদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ভিন্ন চিন্তা করছে। তারা ভিন্ন কিছু চিন্তা করলে বিএনপি প্রার্থীর সোনায় সোহাগা হবে বৈকি। অন্যদিকে শ্রমিক অধ্যুষিত টঙ্গীর বেশির ভাগ মানুষ ব্যক্তি হাসান উদ্দিন সরকারের প্রতি দুর্বল। তার ওপর অতীতের নির্বাচনী ফলাফলের দিক দিয়ে এলাকাটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে স্বীকৃত। পাশাপাশি টঙ্গী পৌরসভা ও গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং সাবেক এমপি হিসেবে তার নানামুখী উন্নয়ন কার্যক্রম নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বয়সে তরুণ। ছাত্র রাজনীতি কারিয়ার তার রয়েছে। তরুণরা নাকি তার প্রতি বেশ ঝুঁকেছে। কারো কারো মতে, দানবীর হিসেবে তার স্বীকৃতি নাকি কম নয়। স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের প্রভাবশালী একটি অংশের নেক নজরও নাকি তার প্রতি বেশ আছে। তার জন্য সব রকম প্রচারণার সুযোগ একধরনের অবারিত। ফলে প্রচার-প্রচারণার দিক দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এগিয়ে।

কেন্দ্র থেকে বিএনপিসহ ২০দলীয় জোটের লোকজন প্রচারণায় যাচ্ছেন। প্রার্থীর প্রচারণার চেয়ে বেশির ভাগ নেতা ছবি তোলায় বেশি ব্যস্ত দেখা গেছে। সেখানে পিকনিক পরিবেশটা বেশ জমে বৈকি। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে স্থানীদের ব্যস্ততা এই মূল্যবান সময়ে কাম্য হতে পারে না। এই সময়টা স্থানীয় নেতারা কর্মী-সমর্থকদের দিলে আরো ভালো হতো মনে করে অভিজ্ঞ মহল।২৩ জুন গাজীপুর নৌকার পোস্টারের পাশাপাশি বেইচধারী নৌকা সমর্থকদের সংখ্যায় বেশি দেখা গেছে, আগে যা ছিল অকল্পনীয়। হঠাৎ এই সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারটি রহস্যজনক বৈকি। অনেকের মতে, এর বেশির ভাগই নাকি বহিরাগত।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বহিরাগত আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মনে নানা ধরনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সবার চাওয়া। কিন্তু এ নিয়ে আগে থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে বিএনপি শঙ্কা ও ভীতি ততই বাড়ছে।যদিও বিএনপির প্রার্থী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তিনি শেষ না দেখা ছাড়বেন না। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, দেখে-শুনে-বুঝে দেব’- এই স্লোগানটার সফল বাস্তবায়ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেখতে চায় গণতন্ত্রকামি সচেতন দেশবাসী।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন