আমার দলের এমপি মসজিদের টাকা খেয়ে ফেলেছে: শামীম ওসমান

  17-11-2018 04:56PM

পিএনএস ডেস্ক :নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি টাকা দিয়ে এবং মানুষকে ধোকা দিয়ে ধান্দাবাজি করে নির্বাচনে ভোট চাইবো না। আমি অভয় দিচ্ছি, না বুঝে কাউকে সমর্থন করবেন না। নির্বাচন আসছে অনেকেই এসে নাটক করবে, মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা অনুদান করবে। কিন্তু আমি বলছি কারো ধোঁকাবাজিতে পা দিবেন না। মনে রাখবেন আপনার এলাকার জনপ্রতিনিধি ভুল ব্যক্তি হলে সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে এবং উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি বেড়ে যাবে। দেখেন আমার দলের এমপি মসজিদের টাকা খেয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ হলে যে কেউ ভালো হবে তা আমি বলতে পারবো না। ভালো মন্দ সবার মধ্যে রয়েছে। প্রতীকের চিন্তা না করে আগে ব্যক্তিকে চেনেন। মন থেকে ধানের শীষের কথা বাদ দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও শান্তিতে বসবাসের কথা ভাবেন।

শনিবার (১৭ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাইলট স্কুল মাঠে একাদশ নির্বাচন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের পর বিএনপির লোকজন আমার অনেক নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে এবং হত্যা করেছে। এছাড়াও আমার ভাই হওয়ার অপরাধে সেলিম ওসমানের ফ্যাক্টরিতে হামলা করা হয়েছিল। খামারের গরুর বান কেটে ফেলা হয়েছিল। এমনকি আমার বাড়ি হীরা মহলে আগুন দেয়া হয়েছিল। ঐ সময় আমার দলের অনেক নেতাকর্মীদের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করেছিল। তাদের অত্যাচারে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেনি। তারপরও আমি বিএনপির কাউকে কিছু বলিনি। আমাদের সরকারের আমলে বিএনপির লোকজন শান্তিতে বসবাস করছে এবং এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্য করছে। কারণ নেত্রী আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে ভালোবাসা দিয়ে সবার মন জয় করতে হয়। আঘাতের বিনিময়ে আঘাতকারীদের ভালোবাসা দিয়ে মন জয় করেছে ওসমান পরিবার।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) যদি অতীতের মত কর্মকান্ড করে তাহলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। এমন কিছু করার চিন্তা করবেন না। ভোটের সময় ভোট চাইবেন কোন সমস্যা নাই। বিএনপির অনেকে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করছে। উল্টা পাল্টা চিন্তা মাথায় আনবেন না। আমরা কিন্তু বিএনপির কাউকে একটা ফুলের টোকা দেই নাই। কারো সাথে খারাপ আচরণ করিনি বরং বিএনপির লোক নিয়ে কাজ করেছি।

আ’লীগ নেতা বলেন, বিএনপির চেয়ারম্যান আমার সাথে মিলে মিশে কাজ করে গেছেন। তারপরও ভিন্ন চিন্তা করবেন না। পুরনো কথা মনে করাবেন না। পুরনো বুকের জ্বালা তুলবেন না। যদি পুরনো জ্বালা বুকে তুলে দেন তাহলে পরিণতি ভাল হবে না। আমার কাছে খবর আছে অস্ত্র কেনার জন্য চেষ্টা করছেন। এমন কিছু কইরেন না, জনগণ আপনাদের ছাড় দিবে না। তখন কিন্তু আমাকে দায়ী করতে পারবেন না।

এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা ইবলিশ শয়তানের চেয়ে ভয়ঙ্কর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যান, নতুবা পুলিশের বন্দুকের গুলির বারুদ রেডি হয়ে আছে। মাদক ব্যবসায়ী আমার দলের হলেও ছাড় পাবে না। সন্ত্রাস আর মাদক ব্যবসায়ী হলে আমার দরকার নাই। খারাপ লোক নিয়ে আমি রাজনীতি করতে চাই না। খারাপ লোক একশ' না হয়ে ১০ জন ভাল মানুষ আমার দরকার।

ফতুল্লা ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় নির্বাচনী আলোচনা সভায় ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ লিটনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সানাউল্লাহ, সাংগঠনিক সস্পাদক মীর সোহেল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর শিরিন আক্তার, জেলা জজ কোটের পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমএ আউয়াল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, থানা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সস্পাদক আনোয়ার হোসেন, থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সস্পাদক এমএ মান্নান, আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেন প্রমুখ।

আলোচনা শেষে ফতুল্লা ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় গণসংযোগ করেন শামীম ওসমান। তিনি প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী-পুরুষের সাথে কুশল বিনিময় করে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন