ড.কামালের গাড়িতে হামলাকারীদের শাস্তির দাবি ঐক্যফ্রন্টের

  15-12-2018 05:23PM

পিএনএস ডেস্ক :গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড.কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।

শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) জোটের পক্ষ থেকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসিচব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে এ সংক্রান্ত লিখিত দাবি জানান।

পরে মোয়াজ্জেম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড.কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেছেন, উনারা নাকি অবহিতই না। এটা খুব আশ্চর্য লাগে আমাদের কাছে। খুব কষ্ট লাগে। এটা আমাদের কাছে খুব বিস্ময়কর লাগে। এটা কীভাবে সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘সচিব বলেছেন, উনারা জানতেন না এবং টিভিতেও দেখতে (ড. কামালের ওপর হামলা) পারেননি। পরবর্তীতে উনারা ঘটনাটি শুনেছেন অফিস আওয়ারের পর। উনারা কোনও ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেননি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, (অন্য এক অনুষ্ঠানে বলেছেন) তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে বের হওয়ার পথে ড.কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা হয়। তিনি অক্ষত ফিরলেও তাঁর এবং জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের গাড়িসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ৭-৮ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এসময় আহত হন অন্তত ২৫-৩০ জন কর্মী-সমর্থক।

এক প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি প্রচণ্ডভাবে সরকারের প্রতি অনুগত থাকে, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নিজেরা সাবোটাইজ করে, প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেয় তখন সেটি নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত স্পর্শ করেছে কি না- একটা প্রশ্ন থেকে যায়। না হলে একই সুরে কথা তো আমরা আশা করি না।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সব জায়গায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ। এই তিন বাহিনীর মোকাবিলা করা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া। এই তিন বাহিনীকে মোকাবিলা করতে তো আমরা পারবো না। তারা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এগুলো করছে।’

আলাল সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘গতকাল সারা দেশে বিভিন্ন আসনে যে হামলা ও সহিংসতা হয়েছে, সে বিষয়গুলো আমরা ইসিকে জানিয়েছি। আক্রমণ বন্ধ করতে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করছি।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘পুলিশের দায়িত্বশীল আচরণে আমরা আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারি। যেসব পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা যত অভিযোগ করেছি, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে একজন পুলিশকেও বদলি বা ক্লোজ করা হয়নি। এসব বিষয় আমরা কমিশনকে বলেছি। আমরা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু তারা তো এই সুযোগে দ্বিগুণ উৎসাহে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের স্ত্রী ও বিএনপি প্রার্থী রোমানা মাহমুদের নির্বাচনী প্রচারণায় গুলি করা হয়েছে। তিনি (রোমানা) আহত এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। তার কর্মীরাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা মামলা করতে গিয়েছি, পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন পর্যন্ত অন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু দাউদকে প্রত্যাহার করতে বলেছি।’

আলাল বলেন, ‘বড় কিছুই চাইনি নির্বাচন কমিশনের কাছে। তাদের ক্লোজ করার জন্য বলেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ক’দিন আগে বললেন, নির্বাচনের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমরা তো জীবন নিয়েই বাঁচতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জেনেছেন, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাতীয় ঐকফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। কেননা নির্বাচন কমিশন আমাদের বক্তব্য শুনেন, কিন্তু প্রতিকার তো পাই না। তাই সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে আমরা উনার (রাষ্ট্রপতি) কাছেও বলবো। তাও কাজ না হলে জনগণের কাছে বিচারের দাবি ছেড়ে দেবো।’

এসময় প্রতিনিধিদলের আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসেনর উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন