রাজপথে ব্যর্থদের মহড়ায় যারা উদ্গ্রীব, তারাও সুহৃদ নয়

  17-06-2019 04:54PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : বয়সসীমা নির্ধারণ না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে সোমবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ১১ থেকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে পূর্বঘোষিত প্রতীকী অনশনে বসে ছাত্রদলের একাংশ। প্রশ্ন উঠছে, প্রকৃত অর্থে ছাত্রদল হলে তারা কি বিএনপি অফিসের সামনে হাঙ্গা করতে পারত? বুঝতে হবে এরা অন্যকিছু, অন্য এজেন্ডা। এককথায় ডালমে কুচ কালা হায়।

মূলত এরা বাপের বেটা সাদ্দাম গং। নিরাপদে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিতে সক্ষম কথিত ছাত্রদল নেতারা বিনা বাধায় বিএনপির চৌদ্ধগোষ্ঠী উদ্ধারের কর্মসূচি পালন করছে বৈকি। দুর্দিনে যা করণীয় সেটা না করে, দলের স্থায়ী কমিটির দুজন আর মহাসচিব হতে পাগলপারারা এক বকোয়াজ নেতার ইন্ধনে এসব অপরিণামদর্শী কাজ চলছে বলে চাউর আছে।

অবাক কাণ্ড, যেখানে বিএনপি অথবা এর কোনো অঙ্গসংগঠন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অহিংস কর্মসূচি মানববন্ধন, এসি রুমে আলোচনা সভা আর সংবাদ সম্মেলন ছাড়া কোথাও কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারছে না, সেখানে কথিত ছাত্রদলের এই বীরেরা কীভাবে এসব করে পুলিশি তাড়া খায় না, সেটা বুঝতে কারো জজ-ব্যারিস্টার হওয়ার প্রয়োজন নেই।

এরা যদি এতটাই যোগ্য, অভিজ্ঞ, ত্যাগি ও দলঅন্তপ্রাণ হয়ে থাকে, তাহলে ছাত্রদলে থাকার জন্য এতটা ব্যাকুল কেন? কী মধু আছে এখানে। ছাত্রদলের পরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ অনেক সংগঠন আছে। যোগ্যদের সেখানে ঠাঁই হয়, এটাই স্বাভাবিক। আগে তা-ই হতে দেখা গেছে। টাকার বিনিময়ে কমিটি করা আর পদ বিক্রির জন্যই নাকি তারা এতটা মরিয়া।

এককালের আন্দোলনের দাবানল খ্যাত ছাত্রদল বর্তমানে কতটা শক্তিশালী রাজপথে এবং ডাকসুতে তা অনেক আগেই প্রমাণ হয়ে গেছে। এরা যে লিঙ্গহীন পুরুষ এটা বুঝতে কারো বাকি নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারন দেশনেত্রী দীর্ঘদিন জেলে। রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করলে যার মুক্তি দিতে আজকের ক্ষমতাসীনরা কেন, যেকোনো সরকারই বাধ্য। বাধ্য করার মতো শক্তি দেখাতে হয়, যা দেখাতে চরম ব্যর্থ মূল সংগঠনের পাশাপাশি ছাত্রদলও।

রাজপথের ব্যর্থরা নেত্রীকে জেলে রেখে যখন নির্লজ্জ-বেহায়ার মতো ঠুনকো অজুহাতে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে একদিকে লোক হাসায়, অন্যদিকে নিজেরা হাসির পাত্র হয়, তখন তাদের পেছনে কারা কীড়নকের ভূমিকা পালন করে, তা সহজেই বোধগম্য। দেশপ্রেমিক জাতিয়তাবাদী শক্তির তা বুঝতে মোটেও কষ্ট হয় না।

দলের দুর্দিনে-দুঃসময়ে যারা ছাত্রদলের নামে দলীয় কার্যালয়ের সামনে হাঙ্গামা করছে, তারা সত্যিকার অর্থে শহীদ জিয়ার সৈনিক হলে, দল ও দেশনেত্রীর প্রতি সত্যিই আন্তরিক হলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে কর্মসূচি দিয়ে শক্তি প্রদর্শন করছে না কেন? এ শক্তি ও মহড়া আসল কাজে ব্যবহার না করে, তা্রা যা করছে এটাকে যারা আমলে নিচ্ছে; তারাও বিএনপির সুহৃদ নয়।

২০০০ সালের পর যারা এসএসসি পাস করেছে তাদের নিয়ে ছাত্রদলের কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। যার প্রতিবাদে ১১ জুন ছাত্রদলের একটি অংশ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বিএনপির এ সিদ্ধান্তটি সময়ের চাহিদা পূরণে শতভাগ সঠিক। চাঁদাবাজ, একাধিক সন্তানের জনক এই বুড়ো খোকারা কতটা বীর, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা তাদের সে বীরত্বে অনেক আগেই হতাশ।

অভ্যন্তরীণ চাঁদাবাজিতে তারা নকি বেশ দক্ষ। যে কারণে অনেক আগেই এদের ঝেটিয়ে বিদায় করা দরকার ছিল। আর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে,দল এবং দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি যারা শ্রদ্ধাশীল নয়, ওরা কারা? যখন দলীয় যেকোনো সিদ্ধান্তকে বিনাবাক্যে মেনে নিয়ে ইস্পাতকঠিন ঐক্য সৃষ্টি অতীব জরুরি, তখন কতিপয় অর্বাচিনের লেলিয়ে দেওয়া বক্র পথে যারা হাঁটছে, সিনিয়র নেতার নামে তাদের সঙ্গে যারা আলাপচারিতা করছে, সে নেতাদের সম্পর্কেও বিএনপিকে অধিক সতর্ক থাকা সময়ের দাবি।

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন