মুহূর্তেই এত অস্ত্র পেল কোথায় ছাত্রলীগ!

  03-07-2019 08:32PM

পিএনএস ডেস্ক : গায়ে ধাক্কা লাগা থেকে কথা-কাটাকাটি, কথা-কাটাকাটি থেকে মারধরকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে লাঠি, রামদা, পিস্তল হাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দুই হলের শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়েন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে।

বুধবার জাবি’র মাওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে দুই হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় দুপুর সোয়া ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নিয়ে ২ ঘন্টব্যাপী এ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ অন্তত ৬৫জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে বটতলার বেলালের দোকানে মাওলানা ভাসানী হলের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী সৌরভ কাপালীর সঙ্গে ধাক্কা লাগে বঙ্গবন্ধু হলের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী দ্বীপ বিশ্বাসের। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে দ্বীপ ও তার বন্ধু আলিফ হাসান দীপুকে চড়-থাপ্পড় মারে সৌরভ। এ খবর বঙ্গবন্ধু হলে পৌঁছালে শতাধিক শিক্ষার্থী লাঠি, চাপাতি, রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বটতলা এলাকায় আসে। ভাসানী হলের শিক্ষার্থীরাও মারামারির প্রস্তুতি নিয়ে বটতলায় আসলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে বঙ্গবন্ধু হলের দিক থেকে ৮-১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, দুই হলের দায়িত্বরত শিক্ষকরা চেষ্টা করেও কোন পক্ষকে নিবৃত্ত করতে পারেননি। পরে পুলিশ এসে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইটের আঘাতে আহত হন সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল ও বঙ্গবন্ধু হলের ওয়ার্ডেন মেহেদী ইকবাল। সংঘর্ষের ভিডিও করতে গেলে দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জোবায়ের কামালকে বঙ্গবন্ধু হলের ৪৪ ব্যাচের সিয়ামমহ (নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) কয়েকজন মারধর করে।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক লিখন চন্দ্র বালা জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৬৫ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০ জনের ভর্তি রয়েছেন।

বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আমরা হলে ফিরিয়ে দিয়েছি। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে থাকা অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

জাবি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনকেও বলব জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৫০ কোটি টাকার মেগা প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়েছে গত রবিবার। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন উন্নয়ন প্রকল্পকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করতে সংঘর্ষে বিভিন্ন সুবিধাভোগী পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন