আদালতে যাবেন নেতারা, তারপরেই কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত!

  14-09-2019 07:41PM

পিএনএস ডেস্ক:মাসখানেকের বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক, পরের দিন সকালে হবে ভোটগ্রহণ, এতে নির্বাচিত হবেন শীর্ষ দুই নেতা। অনুকূল পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চেয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

কিন্তু হঠাৎ ভোটের আগের দিন আদালতের একটি আকষ্মিক আদেশে ভেস্তে গেল অনেক কাঙ্খিত ও আলোচিত ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। আটকে গেছে ‘ভোটের মাধ্যমে’ নেতা নির্বাচনের সবপথ। এতে বিস্মিত ছাত্রদল ও বিএনপির নেতারা, তাদের সন্দেহের তীর সরকারের দিকে।

তবে তারা এখনই থামছে, বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে ফয়সালা হলে সংগঠনটির জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের দায়িত্ব থাকা নেতারা।

এদিকে কাউন্সিলের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেয়াতে বিক্ষুব্দ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদের প্রার্থীরা। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের নিয়ে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ করে দিনভর নয়াপল্টন উত্তপ্ত করে রেখেছেন।

নেতাকর্মীরা ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গেল মোড় পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে ‘মুক্তি চাই, মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে’, ইত্যাদি শ্লোগানের পাশাপাশি ছাত্রদলের জাতীয় কাউন্সিল-২০১৯ শুভেচ্ছা, স্বাগতম শ্লোগান দেন।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা অফিসে কেউ আসেনি। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদু তার কার্যালয়ে আসেন বেলা সাড়ে ১১টায়।

স্থগিতাদেশের পর করণীয় ঠিক করতে শুক্রবার সাবেক ছাত্রনেতারা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে যৌথ বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে নিম্ন আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় কাউন্সিলের আপিল কমিটির প্রধান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমরা আদালত যাবো-এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থগিতাদেশের বিষয়টি ফয়সালা হলে কাউন্সিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

আদালতের এমন সিদ্ধান্ত ক্ষুব্দ দলের কর্মীরা। কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত ঢাকা দক্ষিণ ছাত্র দলের কর্মী সোহরাব হোসেন বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে আমরা ১৪ সেপ্টেম্বরের দিকে তাঁকিয়ে ছিলাম- নির্বাচন হবে, আনন্দ করব। সব কিছুই ওলট-পালট হয়ে গেলো।’

সরকারের যোগসাজসেই আদালত এই স্থগিতাদেশ দিয়েছে। কিন্তু এতে ছাত্র দলের কোনো ক্ষতি হয়নি বরং সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন ছাত্রদলের এই কর্মী।

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের কর্মী রিজভী নেওয়াজ বলেন, ‘কাউন্সিল কবে হবে তা নিয়ে আমরা অনিশ্চিত। যে মামলা করা হয়েছে তার ফয়সালা সহসা হচ্ছে না। তাহলে কী হবে? স্থগিতাদেশ ব্রেকেন্ট হলে কাউন্সিল অনুষ্ঠানে কোনো বাঁধা থাকার কথা নয়। কিন্তু সেটা সহসা হবে কিনা তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন।’

তবে একাধিক সাবেক ছাত্র নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আদালতে যে স্থগিতাদেশ দিয়ে তার বিরুদ্ধে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে যাবেন। স্থগিতাদেশে উঠে গেলেই খুব শিগগিরই কাউন্সিল হবে। প্রার্থী ও ভোটার তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ হয়ে গেছে। এখন শুধু ভোটগ্রহণই বাকী। ফলে এটা সম্পন্ন করতে তেমন কোনো অসুবিধা হবে না। সব প্রস্তুতি নেয়া আছে।

ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ৫৩৩ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন