জনাব মেনন কি যখন যেমন তখন তেমন!

  21-10-2019 04:26PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।তিনি মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক। অনেকদিন ছিলেন দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।তখন তেমন কিছু অর্থাৎ মিন্ন মত তার মুখ থেকে শোনা যায়নি। যদিও বর্তমানে বোমা ফাটাচ্ছেন। তার বক্তব্য নিয়ে সরকার ও ১৪ দলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি- গত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি’, ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের এই বক্তব্য তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। জনাব মেননের এই বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রিত্ব পেলে কি মেনন নির্বাচন নিয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্য করতেন?

অন্যদিকে বিএনপির মুখপাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নিশিরাতের ভোট নিয়ে মহা সত্যটা বলে দিয়েছেন মেনন। ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদও একদিন এই সত্য স্বীকার করবেন।’ জনাব মেননের বক্তব্য নিয়ে রাজপথে ব্যর্থদের অনেকেই মজা লোটার চেষ্টা করছে বৈকি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও হালে বেশ লুফে নিচ্ছে ব্যাপারটি।

জনাব মেনন তার আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে বলেছেন, মিডিয়া নাকি তার বক্তব্য ভুলভাবে তুলে ধরেছে। আসলে তিনি তা বলেননি বা বলতে চাননি। তিনি অন্য নির্বাচন সম্পর্কে বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন, তিনি নিজেই মন্ত্রী হতে চাননি। যদিও তার দল এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছে। দল থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মন্ত্রীত্ব নেওয়া এবং কাকে নেয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপির বিরুদ্ধে ক্যাসিনোর টাকার সঙ্গে জড়িত হওয়ার অভিযাগ উঠেছে। তিনি যে এলাকার এমপি, ক্যাসিনোর সাম্রাজ্য সে এলাকাজুড়ে।একটি ক্লাবের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা তিনি নিজেই বলেছেন।এমপি হিসেবে সেখানে তিনি যেতেই পারেন।তবে অভিযোগ যারা এনেছেন, সেটা প্রমাণের দায়িত্ব একান্তই তাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জনাব মেননের বক্তব্য প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, এক ও অভিন্ন বক্তব্য ও মন্তব্য অনেকেরই।এ বক্তবের পর ১৪ দলের এমনকি তার নিজ দলের অনেকেই জনাব মেননকে বাঁকা চোখে দেখার চেষ্টা করছেন। আবার বক্তব্য প্রত্যাহারের পর একসময়ের উৎসাহীরা বিরূপ মন্তব্য করছেন।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ মহলের মতে, আওয়ামী লীগ নিজের দল থেকে জুয়াড়ি, অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, দখলদার, অস্ত্রবাজ ও মাদকের হোঁতাদের গ্রেফতারের পর অন্য দলের যারা টার্গেট আছে, জনাব মেনন নাকি তাদের মধ্যে অন্যতম। তাই তিনি সোরগোল করছেন। ধরা পড়লেও বলতে পারেন, ভিন্নমতের কারণে তাকে ধরা হয়েছে। এরকম গল্প মাঠে আছে।

যে যা বলুক না কেন, আগুন কখনো চাপা দিয়ে রাখা যায় না। সত্যও লুকিয়ে রাখার বিষয় নয়। এ দুটি নিজের অবস্থান সব সময় নিখুঁত রাখে। জনাব মেনন বনেদি রাজনীতিক পরিবারের সদস্য।তার মুখে দুই ধরনের কথা বেমানান। যে যেখানেই থাকুন না কেন, দেশবাসীর তাদের কাছে সদা-সর্বদা সত্য ও সঠিক বক্তব্যই একান্ত চাওয়া। সত্যিকার রাজনীতিকদের যে, যখন যেমন তখন তেমন মানায় না।

প্রতিবেদক : সাবেক সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)

(এই প্রতিবেদনটি লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত, এর জন্য পিএনএস দায়ী নয়)

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন