বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ আটক

  28-11-2019 01:49PM

পিএনএস ডেস্ক: সরকারি কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে হাইকোর্টের গেট থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শেখ মো. শামীম বলেন, ‘সরকারি কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার মামলায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাশকতার ওই মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে এক এক করে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।’

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গেল মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচির এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এসময় বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করতে দেখা যায় বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের।

এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেয়া, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে ১৫-২০ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৫০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতেই জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে পরে ওই মামলা তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

ইতোমধ্যে পুলিশের করা ওই মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে সরকারি কাজে বাধা দেয়া, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর ও নাশকতার ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে হাইকোর্টের মূল ফটকের সামনে থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। যদিও শাহবাগ থানায় পুলিশের করা ওই মামলায় শুরুতে খোকনের নাম ছিল না বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছিল।

খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দেশনেত্রী বেগম জিয়ার জামিন আদেশের শুনানিকে কেন্দ্র করে আমি ও খোকন একই গাড়িতে আদালতে যাচ্ছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের গেট থেকে তাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কেন তাকে আটক করা হয়েছে আমার জানা নেই।’

একই দিন দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দলের অঙ্গসংগঠনের দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দাফতরিক দায়িত্ব পালনকারী ফারুক হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের কার্যালয়ের দাফতরিক দায়িত্ব পালনকারী মঞ্জু।

উল্লেখ্য, পুলিশের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘‘সমাবেশ করতে আর কখনও বিএনপি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি চাইবে না। আমরা আমাদের যখন খুশি তখন সমাবেশ করবো। এটা আমাদের অধিকার, সংবিধান অনুযায়ী অধিকার। তাই সকলকে দল-মত নির্বিশেষে সামনের দিনগুলোতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’

মির্জা ফখরুলের ওই ঘোষণার ৪ ঘণ্টার মধ্যে গত মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করেই বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিশাল মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের সামনে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেয় বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। পরে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন