ইসির সিদ্ধান্তে খুশি বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী

  19-01-2020 07:44AM



পিএনএস ডেস্ক: সরস্বতী পূজার কথা বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করায় নির্বাচন কমশিনের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিএনপি দলীয় দুই মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের ঘোষণা পাওয়ার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

শনিবার রাতে (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর গোপীবাগে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, ‘আমি খুশি যে নির্বাচন কমিশন একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি, যখন তফসিল ঘোষণা করা হয় তখনই বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত ছিল। তবে যেহেতু এখন সবার দাবির মুখে উনারা সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন, তো এটি একটা ভালো পদক্ষেপ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করছি, আমাদের হিন্দু ধর্মালম্বী যারা আছেন, তারা হয়তো আরেও আনন্দিত হবেন। ভবিষ্যতে যাতে তাদের এই বিষয়গুলো আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় সেটাতে আমি জোর দেব।’

আপনি এই তারিখ মেনে নিয়েছেন, প্রশ্ন করা হলে ইশরাক বলেন, ‘অবশ্যই মেনে নিয়েছি। এটা তো আমার দাবিই ছিল। আমি তো দাবি করেছি যে, এটা একদিন হলে আগানো হোক বা পেছানো হোক। যাই করা হোক পূজার দিনটা কেন? এটা তো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান তাদের জন্য। আপনারা জানেন, একটা বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে, আমাদের পুরান ঢাকায় বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। তাদের দাবি ছিল, তারাও আমার সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন, আমাকে বলছে যে, মিডিয়ার সামনে কথা বলার জন্য। আমি সেটা করেছি।’

নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে গুলশানের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমি খুশি। আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি, জনগণের পক্ষে বা জনগণের দাবিতে নির্বাচন কমিশন একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেটা উচিত ছিল আরও আগে নেয়া। আগে না নেয়া বলেই কিন্তু আবারও নির্বাচন কমিশন তার ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছেন, তাদের অযোগ্যতার প্রমাণও আবার দিয়েছেন।'

তিনি বলেন, ‘বিগত ২২ ডিসেম্বর যখন তফসিল ঘোষণা হয়েছিল তখনই কিন্তু আমরা নির্বাচন কমিশনকে সর্তক করে দিয়েছিলাম। উনার একটা তারিখ নির্ধারণ করেছেন, যেটা অবশ্যই বির্তক সৃষ্টি করবে। কারণ এই তারিখটা (৩০ জানুয়ারি) আমাদের হিন্দু ধর্মের পূজার সঙ্গে ক্ল্যাশ করে। বিশেষ করে সরস্বতী পূজাটা বিভিন্ন স্কুল সেন্টারে ব্যবহার করে উদযাপনের জন্য।’

তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘ওই তারিখ ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন বলতে পারেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক প্রতিক্রিয়া এসেছিল। উনার কিন্তু কোনো কিছুই আমলে নেনি। এখন যখন উনারা বাধ্য হয়েছেন বিভিন্ন প্রেসারে, দেশে তো এই ব্যাপারে ঐক্য আছে। এখন নির্বাচনটা উনার পিছিয়েছেন।’

এখন সকলে মিলে পরিবর্তনের পক্ষে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাবিথ ।

নির্বাচনের তারিখ পেছানোর পাশপাশি এসএসসি পরীক্ষাও পেছানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের বলছি যে, তাদে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। একই সঙ্গে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি যে, মনে যদি কোনো কষ্ট এই মর্মে হয়ে থাকে আমাদের নির্বাচনের জন্য, আমি দুঃখিত সেটার জন্য।’

তাবিথ বলেন, ‘ঢাকার উত্তরের বাসীকে বলছি, ১ ফেব্রয়ারি নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য আমি প্রস্তুত। উনারা যেন প্রস্তুত থাকেন। অবশ্যই নিজের ভোট নিজেরা দেবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে। সবাই প্রস্তুতি নিন।’

আগামী ৩০ জানুয়ারি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা থাকায় বিভিন্ন মহলের চাপে নতুন তারিখ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। পূজার কারণে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এমনকি গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনেও বসেন শিক্ষার্থীরা। ভোট পেছানোর ক্ষেত্রে সরকার বা আওয়ামী লীগের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। ভোট পেছানোর দাবির বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ায়।

পিএনএস/হাফিজ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন