শাসকগোষ্ঠীর অবিচার মানুষ আর সহ্য করবে না: রিজভী

  02-03-2021 01:54PM

পিএনএস ডেস্ক: ক্ষমতার উন্মাদনায় নিষ্ঠুর মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা এই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে সকল নির্যাতন সহ্য করেই ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘এই অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর রক্তমাখা হাত এদেশের জনগণের দ্রোহাগ্নির তাপে পুড়ে যাবে। তাদের নির্মিত সন্ত্রাসের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার জন্য ছাত্র-জনতা রাজপথেই অবস্থান নেবে, গৃহে ফিরে যাবে না। যারা প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখে তাদের পতন অবশ্যম্ভাবী। বহুদিন ধরে চলে আসা এই হিংস অবিচার মানুষ আর সহ্য করবে না। সকল নির্যাতন সহ্য করেই ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকবে।’

মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘গত রাতে (সোমবার) গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে পুলিশ ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সদস্য সজীব রায়হানকে বাসায় না পেয়ে তার তিন ভাই জুয়েল, সোহেল ও সুমনকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে গেছে। এই ঘটনা আওয়ামী গেস্টাপো বাহিনীর আরেকটি নির্মম ও দুঃসহ দৃষ্টান্ত। এ ঘটনা ২৫ মার্চের পর হানাদার বাহিনী এবং স্বাধীনতার পর রক্ষীবাহিনীর বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এ সমস্ত ঘটনা নিশিরাতের সরকারের ক্রোধপরায়ণতা ও উৎপীড়নের এক ভিন্ন ও গভীর দৃষ্টান্ত।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একদিকে বিক্ষোভ বানচাল করার জন্য উন্মত্ত পুলিশের বেপরোয়া লাঠিপেটায় রক্তাক্ত করা, অন্যদিকে গ্রেফতার করে রিমান্ড নামক টর্চারিং মেশিনে ঢুকিয়ে ছাত্রদল নেতাদের ওপর নির্যাতন চলছে। ভয়াবহ এ দুর্ভোগ নজীরবিহীন। ক্ষমতার উন্মাদনার মধ্যে থাকতে চায় বর্তমান আওয়ামী সরকার। বোধ-বুদ্ধি, বিবেচনা, মানবিকতা সকল কিছু বিসর্জন দিয়ে এক নিষ্ঠুর মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছে তারা। আওয়ামী সরকার মাফিয়া সরকার হিসেবে বিশ্বজোড়া নামডাক হওয়াতে তারা খুশি, সে কারণে লাঠি ও বন্দুকের ভাষা ব্যবহার করছে নির্দ্বিধায়।’

বিএনপির এ শীর্ষনেতা বলেন, ‘সজীব রায়হানকে বাসায় না পেয়ে তার ভাইদের ধরে নিয়ে যাওয়া নাৎসিবাদের চরম বহিঃপ্রকাশ। এতে নাৎসিবাদের ভয়ঙ্কর দমণের প্রবণতাই ফুটে উঠেছে। গত পরশু দিন প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যেন পুলিশের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তারা রক্তাক্ত করার পর এখন চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে ছাত্রনেতাদের বাসায় বাসায়। আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রের গলা টিপে মনুষ্যবিহীন বিরান ভূমিতে রাজত্ব করতে চাইছে।’

রিজভী বলেন, ‘গত পরশু দিন (২৮ ফেব্রুয়ারি) লেখক ব্লগার মুশতাক আহমেদের সরকারি হেফাজতে মৃত্যু ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের অতর্কিত হামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সহ-সভাপতি মামুন খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, আক্তার হোসেন, ফারুক হোসেন, সানজিদা আক্তার তুলিসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। এই বর্বরোচিত আক্রমণের পরেও পুলিশ থেমে নেই। এখন শুরু করেছে বেধড়ক মামলা, গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে অকথ্য অত্যাচার।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ছাত্রদলের ১৩ জন নেতাকে গ্রেফতার করে তাদেরকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে গত পরশু দিন সন্ধ্যার পর তিনজন ছাত্রদল নেতা যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য আনিসুর খন্দকার অনিক, এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার জিসান এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রদলের কর্মী আতিক মোর্শেদকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘসময় অস্বীকার করেছে, শুধুমাত্র তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করার জন্য।’

এসময় তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদল নেতাদের রিমান্ড বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি জানান। সজীব রায়হানের ভাই জুয়েল, সোহেল, সুমন যাদের রাজনীতির সাথে কোনই সম্পর্ক নেই তাদেরও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান রিজভী।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন