সাইফুলের পুরুষাঙ্গ কেটে তাকে বাঁচিয়ে রাখার দাবী’তে উত্তাল সামাজিক মাধ্যম

  29-10-2016 01:26PM

পিএনএস ডেস্ক: অসভ্য যুগে যে কুকীর্তির স্বাক্ষী হতে হয়নি ধরাবাসীকে তেমন কুকীর্তি এই সভ্য যুগে অহরহ ঘটছে। যে শিশুটি বুঝতেই শিখলো না মানুষের জৈবিক চাহিদা বলে কোন তাড়না আছে, তেমন শিশুদেরকে ধর্ষণের চিত্র দেশের আনাচে-কানাচে প্রকাশ পাচ্ছে নিয়ত। শুধু কি শিশুদের ধর্ষণ? ধর্ষণ বলতে যা বোঝায় তা কোন দৃষ্টিকোনে এদের ওপর ঘটানো যায়? ওহে মানুষ ! তোমরা পশুর পাশবিকতাকেও হার মানালে তবে?

পার্বতীপুরে শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে দিনাজপুর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষক সাইফুলকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল হয়ে ওঠে। ফেসবুকে সাইফুলের ছবি প্রকাশ করে তাকে ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ফেসবুকে ছবি প্রকাশের পরই মুলত এই ধর্ষকের আত্মগোপনে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে ।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় চলছে হাজারো ক্ষোভ । মুলত ফেসবুকের কল্যানেই অনেকটা ভাইরাল হয়ে পড়ে অসহায় শিশুটির উপর পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহ বিষয়টি। খুব দ্রুতই ধর্ষক ধরাও পড়েছে পুলিশের আন্তরিকতায়। তবে এখন সবার একটাই দাবী এই ভয়ানক পিশাচ যেন কোনভাবেই আইনের ফাঁক- ফোকর গলিয়ে না বাচতে পারে। অদুর ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটাতে যেন অন্য কেও সাহস না পায় সেজন্য খুব দ্রুত আইনের মাধ্যমেই ব্যতিক্রমি দৃস্টান্তের কোন বিচার আশা করছেন সকলেই।

নাহ ভয়াবহ শাস্তি বলতে ‘মৃত্যুদন্ড” চাচ্ছেননা সচেতন মহল। তারা চাইছেন ভয়াবহ কোন শাস্তি! যা শুনেই আতকে উঠবে যে কেওই ।

দিনাজপুরের পার্বতীপুরের অবুঝ এক শিশু, নাম পূজা। বয়স সবে মাত্র পাঁচ বছর। পুতুল খেলার বয়স। এই বয়সে দিনে একাধিক বার পুতুলকে কাপড় পড়িয়ে অন্য এক পুতুলের সাথে বিয়ে দিবে আর কনের সাথে আসা অতিথি আপ্যায়ন করাবে মাটি দিয়ে ভাত বানিয়ে এটাই স্বাভাবিক। এই শিশুটিও ভিন্ন নয়, অন্য আর দশটা শিশুটির মতোই। তাই সেদিন বাড়ির পাশে পুতুল নিয়ে খেলতেও গিয়েছিল। কে জানত আজ ঘটবে বিপর্যয়? খেলতে গিয়েই মানুষ নামের অমানুষের হাতে শিশুটিকে হতে হবে ধর্ষিত।

গত ১৮ অক্টোবর উপজেলার জমিরহাট এলাকার তকেয়াপাড়া গ্রামে সকাল ১১ টার দিকে বাড়ির পাশে পুতুল খেলতে গিয়েই মুহূর্তের মধ্যেই হয়ে গেল নিখোঁজ। শিশুটিকে খুঁজতে শুধু পরিবারই নয় পুরো গ্রামের মানুষই ছিল এককাতারে। না, তবুও কোথায় পাওয়া যাচ্ছে না, পশ্চিম আকাশে চলে গেছে সূর্য, বাবা-মা বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন।

অবশেষে মাইকিং, মসজিদে ঘোষণা দেওয়াসহ নানাভাবে শিশুটির খোঁজ করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে শিশুটিকে সে দিন না পেয়ে সেদিনই রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা। পরদিন ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ির পাশের একটি হলুদক্ষেত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরই তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা জানান, ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুটি।


রুখসানা কাজল লিখেছেন,

আমি এমনিতে খুব নতজানু মানুষ। নিজেকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছি আমার ভেতরে ঢ্যাঁড়স স্বভাবের আদিখ্যাতা প্রকট প্রবল। ঘৃণা করলেই ফুরিয়ে যায় ঘৃণার পাগাঢ় ! আমি ভালবাসায় বাঁচি, ভালবাসায় মরি।
পাঁচ বছরের মেয়েটার জন্যে মায়া হচ্ছে। হারিয়ে গেছে তনু,মিতা আরো অনেকেই। আমি প্রবল কঠিন কঠোর ভাষায় বলতে চাইনা শাসক আপনি গদি ছাড়ুন। শাসক তো বলেনি , ধর্ষণ কর, খুন কর, লুটিয়ে দাও, লোপাট কর।
ধর্ষকের বিচার হোক, খুনিরা শাস্তি পাক এই দাবীতে আমিও অনড়।
কিন্তু আমার খুব ইচ্ছে করে ধর্ষক স্বামি, পুত্র, ভাই , পিতার পরিবারগুলোকে দেখতে । ধর্ষকের মা তার ছেলেকে খেতে দিয়ে কি বলে, খা বাবা খেয়ে খেয়ে আরো সুদৃঢ় করে তোল তোর পুরুষদন্ড। ধর্ষকের স্ত্রী কতখানি গলে গিয়ে বলে, ওগো বিছানায় আমার জন্যেও কিছুটা ভাগ রেখো। ধর্ষকের ভাই বোন কি বলে এটা কততম রে ভাইয়া ! কিম্বা ধর্ষক পিতার সন্তানরা কি বলে, বাবা এই দেখো রেজাল্ট আমিও তোমার মত মানুষ হচ্ছি !
একজন ধর্ষক খুনির চেয়ে এই পরিবারগুলো কতটা ভালো ? কেবল এরাই জানে এই ধর্ষক, খুনিদের। এরাই ছায়া দিয়ে ঢেকে রেখেছে । এদের প্রশ্রয়েই আইনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে পালিয়ে যাচ্ছে এই শয়তানরা। আমার ঘৃণা ধর্ষক খুনিদের সাথে পরিবারের এই সদস্যদের উপরেও।

ফেসবুকে হাজারো মানুষ জানিয়েছেন একইরকমের আহব্বান

৫ বছরের পূজা দাশ’কে ধর্ষন করার সময় ধর্ষক
সাইফুল ইসলাম ব্লেড দিয়ে তার যৌনাঙ্গ কেটে ধর্ষন করছে…….
বাংলাদেশ মহামান্য বিচারপতির কাছে একটাই অনুরোধ,,,,,
ধর্ষক সাইফুল ইসলাম’এর পুরষাঙ্গ কর্তন করে
বাঁচিয়ে রেখে শাস্তি দেওয়া হোক…..
এটাই হবে পুজার প্রতি ন্যায় বিচার……
এবং প্রতিটা ধর্ষন মামলাতে ধর্ষককে এই
শাস্তীটাই দেওয়া হোক…..

ধর্ষক সাইফুল ও তার সহযোগীর যৌনাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে লবন লাগিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে এতো জঙ্গিদের তো ক্রসফায়ার দেন প্রধানমন্ত্রী, ওইসব জঙ্গিদের থেকেও নরপশু এই সাইফুলরা। এদের কেন ক্রসফায়ার দেন না


শাহরিয়ার পিউ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন,

যদি একটা দৃষ্টান্ত আমরা দেখাতে পারতাম কোন ধর্ষকের বাবা-মা পরিজন তাকে জনসম্মুখে পাথর ছুড়ে অর্ধমৃত অবস্থায় ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছে তবে অন্তত অনেকজন র্ধষিত হবার আগে ধর্ষকের হাত থেকে বেঁচে যেতো … আর যদি এমন দৃষ্টান্ত ১০০জনের হয়? হোলি আটিসনের জঙ্গিদের বাবা-মারা তাদের সন্তানের লাশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে ফেলে রাখতে পারলে ধর্ষকদের বাবা মায়েরাও পারবে! পারতেই হবে!


আসিফ এন্তাজ রবি লিখেছেন,

মেয়েটি তাকে ”বড় বাবা” বলে ডাকতো। এই ”বড় বাবা”-ই মেয়েটিকে ধর্ষণ এবং এইভাবে নির্মম নির্যাতন করেছে। ধর্ষক সাইফুল গ্রেপ্তার হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কিন্তু আমার একটি প্রস্তাব আছে। সাইফুলকে কেবল আইনের হাতে ছেড়ে দিলে চলবে না। সাইফুল একা নয়, সাইফুলের যে সমাজ, সেই পুরো সমাজের বিচার আমি দাবী করছে। সাইফুলের শিক্ষক কে ছিলেন, তিনি তার ছাত্রকে কি শিক্ষা দিয়েছেন যে সাইফুল এমন হলো? সাইফুলের শিক্ষককে সেই প্রশ্ন করতে হবে। সাইফুলের মা তার সন্তানকে কীভাবে মানুষ করেছেন, ছোটবেলায় তিনি কি সাইফুলকে ঘুম পাড়ানি গান শোনাতেন, সাইফুলের মা-কেও সামনে আনা হোক। সাইফুলের যারা ঘনিষ্ট বন্ধু, তাদেরকে সবার আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। সাইফুল সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসি কেমন, মেয়েদের সম্পর্কে সে কী আলোচনা করতো, এটা জানা খুব জরুরি। একইভাবে সাইফুলের স্ত্রী, তার বাবা, তার ঘনিষ্ট প্রতিবেশি সবাইকে ধরা হোক। সমাজবিজ্ঞানী, আইনবিদ, মনোবিদ, শিক্ষাবিদ সবাই এবার দয়া করে সাইফুলকে নিয়ে বসুন। সাইফুল কোনো একক ধর্ষকের নাম নয়, এটা একটা ভয়াবহ অসুখের নাম। যে অসুখে একজন মানুষ পাঁচ বছরের একটা বাচ্চাকে ধর্ষক, কামড় এবং সিগারেটের দাগ দিতে পারে। একজন সাইফুলকে আইনের আওতায় এনে একজন অসুস্থ মানুষের বিচার করা সম্ভব, কিন্তু রোগটা ধরা সম্ভব নয়। সমাজে যদি রোগটা থেকেই যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও সাইফুল জন্মাবে। আমরা তার লক্ষণ ইতিমধ্যে দেখতে পারছি। ধর্ষক এখন নিত্যদিনকার ঘটনা। কাজেই, আসুন সবাই দেশ থেকে ”সাইফুল রোগ” তাড়াই। অলরেডি অনেক দেরী হয়ে গেছে। সমাজ বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সমাজ সংস্কার, গায়ক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক- আসুন সবাই এক হই। পুরো ঘটনা বুঝতে চেষ্টা করি। এই দেশে এমন নৃশংস ঘটনা কেন বার বার ঘটছে। আমাদের সকলেরই ব্যর্থতা
আছে। কোথায় সেই ব্যর্থতা, কেন সমাজে সাইফুলরা জন্মাছে। বিতর্ক বাদ দিন, পরস্পরের হাত
ধরুন। বাংলাদেশকে বাঁচান।



ইমতিয়াজ মাহমুদ, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, লিখেছেন ,

পার্বতীপুরের ঘটনা। ওর পিতা একজন গাড়িচালক। ধর্ষক সম্ভবত দুইজন। এদের একজন মো. সাইফুল ইসলাম পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। দুর্গা গুরুতর অসুস্থ। ওকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

একজন বন্ধু খবরটা জানিয়েছেন সোমবার সকালে। তারপর আরেকজন। একজন বলেছেন ‘এই ঘটনা নিয়ে একটা কিছু বলেন ভাই।’ একজন জানিয়েছেন দুর্গার পিতার আর্থিক সামর্থ্য নাই যে মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করাবে। আমি কি কোন সাহায্যের ব্যবস্থা করতে পারি?

কাজের মধ্যে ছিলাম, বিস্তারিত ঘটনা জানতে জানতে একটু সময়ে লেগেছে। পুরো ঘটনা জানার পর স্তব্ধ হয়ে গেছি। কি করবেন আপনি? এটা নিয়ে কি ফেসবুকে জ্বালাময়ী পোস্ট লিখতে হবে? কিভাবে লিখবেন? সাহায্য করবেন? না ঠিক আছে, কিছু টাকা পয়সা আপনি জোগাড় করতে পারবেন। কত টাকা জোগাড় করবেন? এক লাখ? দুই লাখ? তেত্রিশ লাখ? বা ধরলাম তেত্রিশ কোটি টাকাই আপনি জোগাড় করলেন আপনি দুর্গাকে সাহায্য করতে। সেটা দিয়ে এই শিশুটির ক্ষতিপূরণ হবে? যে ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে শিশুটি সেটি মুছে ফেলতে পারবেন? হাজার কোটি দিয়ে পারবেন?

পাঁচ বছরের একটা শিশু! ভাবেন তো? আপনার ডানে বাঁয়ে তাকান। ঘরের ভিতর তাকান। ঘরের বাইরে তাকান। আপনার আশেপাশের একটা চার পাঁচ বা ছয় বছরের নারী শিশুর দিকে তাকান। কল্পনা করেন তো! কল্পনা করেন দুইটা চল্লিশ বিয়াল্লিশ বছরের শক্ত পুরুষ ওকে আটকে রেখেছে একটা ঘরে; কল্পনা করেন!


একটা শয়তানকে পুলিশ ধরেছে। ওর নাম মো. সাইফুল ইসলাম। আরেকটাকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। ঐটার নাম কি কবিরাজ যেন। আপনি কী করবেন একটা সাইফুলকে ধরে বা একটা কবিরাজকে ধরে। কী করবেন এইরকম একটা দুইটা বা দুইশটা পুরুষকে ফাঁসি দিয়ে? ওরা কাজটা কী করেছে সেটা একবার কল্পনা করেন আর ভাবেন এদেরকে কী শাস্তি দিতে চান। আপনার কল্পনার সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তিটি দিলেও কি মনে করেন দুর্গার প্রতি যে অন্যায় হয়েছে তার বিচার হয়ে গেল? ভাবেন তো; ভেবে বলেন!

ভেবে বলেন এইরকম দুইটা বা দুইশ শয়তানকে ফাঁসিতে ঝুলালে এই অত্যাচারের বিচার হবে? আমি কন্যা সন্তানের পিতা, আমি একজন সুস্থ স্বাভাবিক দায়িত্বশীল নাগরিক। আমি ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে চিন্তে বলছি। এই দুই শয়তানকে কুচিকুচি করে কেটে যদি কুকুরকে দিয়ে খাওয়ান, তবুও তো দুর্গার এক ফোঁটা চোখের জলের বিচার হবে না। ভাববেন না আমি আবেগের বশে বলছি। চব্বিশ ঘণ্টার চেয়ে বেশী সময় আমি ভেবেছি। আমার কল্পনার যন্ত্রণাক্লিষ্ট একটি শিশুর মুখ ভেসে আসছে এখনো। কল্পনায় কী সব আসে বুঝতে পারেন। এই অত্যাচারের কী শাস্তি হতে পারে? কী শাস্তি দিবেন?

শাস্তি তো আপনি কেবল ঐ সাইফুলকে সাজা দেওয়ার জন্যে দিবেন না। শাস্তি দেওয়ার একাধিক উদ্দেশ্য থাকে। একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ শাস্তির ভয়ে অন্যরাও যাতে অপরাধ থেকে বিরত থাকে। আপনার কি মনে হয় আপনি যদি ভয়ঙ্করতম শাস্তিটিও দেন ঐ মো. সাইফুল ইসলামকে তাইলেই এইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না?

লক্ষ্য করে দেখেন, দুর্গা নামের শিশুটি কে? সে একজন নারী শিশু, সে একটি হিন্দু নারী শিশু, সে একটি দরিদ্র ঘরের নারী শিশু এবং সে একটি হিন্দু দরিদ্র ঘরের নারী শিশু। বাংলাদেশে ভালনারেবল হওয়ার যতরকম বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন সবই তার আছে। আপনি যতদিন নিশ্চিত করতে না পারবেন যে এইসব বৈশিষ্ট্যের কোনটাই একজন মানুষের অস্তিত্বের জন্যে বা মর্যাদার জন্যে বিপদজনক হবে না ততদিন পর্যন্ত এইরকম অত্যাচার চলতে থাকবে।


আমরা তো আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে শিশুর বিশেষ অধিকার শিখাই না। আমরা তো আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে নারীকে মানুষ বিবেচনা করা শিখাই না। ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক সংখ্যালঘুদেরকে সমান মর্যাদা দিতে শিখাই না। পিতামাতার বৈষয়িক অবস্থার কারণে শিশুদের অধিকার ও সুযোগের বৈষম্য করাকে আমরা স্বাভাবিক বলে শিখাই। এইসব যতদিন চলতে থাকবে এইরকম ঘটনাও ঘটতে থাকবে। থামবে না।

আপনি আপনার চারপাশে খুঁজলে এমন লোক পাবেন যে মনে করে যে ধর্ষণের জন্যে নারীরাই দায়ী। আমি এমন লোক দেখেছি যে বলেছে যে, ‘না, পাঁচ বছরের শিশুকে করা ঠিক হয়নাই, তবে হিন্দু মেয়েকে…’ ইত্যাদি। আপনি চেনেন না এরকম কাউকে? খুঁজলেই পাবেন; আপনার আশেপাশেই পাবেন।

কিন্তু এইসব কথা আর বলতে ইচ্ছা করে না। আপনারা সকলেই বুদ্ধিমান মানুষ। মানুষ এতো কিছু জানে। আওয়ামী লীগ বুঝে, বিএনপি বুঝে। বামরা কেন যুগের পর যুগ ব্যর্থ রাজনীতি করছে তার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করে দেওয়া লোক হাটে-মাঠে-ঘাটে গিজগিজ করে। নারী আর পুরুষ যে সমান, নারীও যে মানুষ এই কথাটা বুঝতে আপনাদের এতো জটিল লাগে কেন? কেন মানুষকে এইসব বাগাড়ম্বর করে বুঝাতে হবে যে নারীর সম্মতি ছাড়া নারীকে স্পর্শ করা অন্যায়। না মানে যে না, এই কথাটা কি এতোই জটিল?

না। আমি জানি কেন লোকেরা এইটা বুঝতে পারেনা যে নারীর সম্মতি প্রয়োজন। আমি জানি কেন আপনারা বুঝতে পারেন না যে না মানে না। কেন আপনারা নারীকে সম্পূর্ণ মানুষ বিবেচনা করেন না। কারণ আপনি যে বিশ্বাসকে নৈতিকতার ভিত্তি মনে করেন, সেই বিশ্বাস আপনাকে শিখায় না যে নারীও মানুষ। ঐসব শিক্ষা যদি ডি-লার্ন করতে না পারেন, তাইলে হবে না।


এই আমার মাথায় বার বার হানা দিচ্ছে দৃশ্যটা- একটা ফুটফুটে ফুলের মত শিশু হলুদ খেতের মাঝখানে পড়ে আছে মৃতপ্রায়- এ যেন আমার কন্যা কি আপনার কন্যা পড়ে আছে সেইখানে ব্রুট্যালি ভায়োলেটেড- এটা হচ্ছে পুরুষবাদী ধর্মাক্রান্ত শোষণমূলক সমাজের প্রচ্ছদ। এইটা একটা সত্য দৃশ্য, বাস্তব দৃশ্য। এইটা আমার কল্পনা না দুঃস্বপ্ন না। এটাই আমার সমাজ; আমার রাষ্ট্র।


অঞ্জন লিখেছেন ,

শিশু পূজার ধর্ষক সাইফুল ইসলাম ওরফে কালা সাইফুইল্যা ৭ দিনের রিমান্ডে। It’s not enough to take him 7days remand. We strongly demand his death sentence so that in future any one can not think to commit such as crime in Bangladesh against kids and women. Hundred Thousands of Saiful Islam are doing such as crimes in our present society.To reduce the percentage of serious crime our honorable Lower and High Court should be taking a Historical step about their Judgment.

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন