মেঘের কান্না থামেনি-সাদিক, তামান্নার কান্না শুরু

  09-02-2017 12:20PM


পিএনএস ডেস্ক: ভাষার মাস চলছে, নতুন বইয়ের গন্ধে সবাই ছুটে চলেছে বই মেলায়। ভাষা সৈনিকদের নিয়ে কারাকারি শুরু হয়েছে। দুদিন পর ১৩ই ফেব্র“য়ারী পহেলা ফাগুন তার পরের দিন ভালবাসা দিবস কিন্তু মেঘ ও সাদিক পরিবারের বসন্তের ছোয়াও নেই ভালবাসার মানুষ নেই। পাঁচ বছর আগে এই ভাষার মাসের ১১ই ফেব্র“য়ারী ২০১২ সালের সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে নৃসংশ ভাবে হত্যা করেছিল ঘাতকরা। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করার অঙ্গিকার করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাড. সাহারা খাতুন। বছরের পর বছর পার হয়ে যাবার পরও ৪৮ ঘন্টা শেষ হয়নি। শিশু মেঘের দাত্বিয় নিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

তিনি দায়িত্ব কতটুকু পালন করেছে তা দেশবাসী অবলকন করেছেন। গত পাচ বছরে একদিনও মেঘের পাশে প্রধানমন্ত্রীকে কেউ দেখেনি। অথচ তিনি আমাদের দাত্বিয়শীল প্রধানমন্ত্রী। শিশু মেঘ এখন একটু একটু করে বড় হয়েছে আর তার হৃদয় জমে থাকা ছোট ছোট ঘৃনাগুলো বড় আকার ধারন করেছে। মা বাবার কবরের পাশে হয়ত চিৎকার করে বলছে, আল্লাহ তুমি ঘাতকদের ক্ষমা করনা। মেঘের কান্নার কথা যখন বলছিলাম ঠিক পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালে ভাষার মাসের ২ ফেব্রুয়ারী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার দৈনিক সমকাল প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল (৪২) কে পেশাগত দাত্বিয় পালনকালে নৃসংশভাবে হত্যা করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহজাদপুর পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু। মিরুর শটগানের গুলিতে সাংবাদিক শিমুলের মাথা থেঁতলে যায়। মৃত্যুর স্বাদ তাকে গ্রহন করতে হয় অকালে অসময়ে। শাহজাদপুরবাসী অত্যন্ত প্রিয় মানুষ ছিল শিমুল। সহজ-সরল জীবন যাপন, সৎ ও নির্ভিক কলম যোদ্ধা হিসাবে তার জুরি মেলা ভার ছিল। ছোট বেলায় শিমুল বাবাকে হারিয়ে নানি রোকেয়া বেগমের পুত্র স্নেহে বড় হয়েছিল।

শিমুলের মৃত্যুর খবরে শোক সইতে না পেরে নব্বই বছরের বৃদ্ধা শিমুলের নানি স্টোক করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহজাদপুরবাসী কেদে উঠেছে। হত্যার প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল পালন করেছে। শিমুলের জানাযায় হাজার-হাজার মানুষের অংশগ্রহন বলে দিয়ে ছিল সে কতটা প্রিয় মানুষ ছিল। নাতি নানিকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। শিমুল ডিগ্রি পাশ করেই সাংবাদিক পেশা বেছেনিয়ে ছিল। বিবাহ সুত্রে জীবন সঙ্গী করেছিল কামরুন্নাহারকে তাদের ঘরে আলোকিত করে সাদিক ও তামান্না জন্ম গ্রহন করেছে। সাদিক এখন শাহজাদপুর উপজেলার পাইলট হাই স্কুলের ষষ্ট শ্রেণির ছাত্র। তার ছোট বোন তামান্না কেজি শ্রেণিতে পড়ে। সাদিকের ইচ্ছা ছিল সে এবার ক্যাডেট স্কুলে ভর্তি হবে সেভাবেই তার প্রস্তুতি চলছিল। কালবৈশাখি ঝড়ের মতো সব কিছু তচনছ করে দিল একটি বুলেট। এখন সব আধরা ও স্বপ্ন। বাবার কবরের পাশে অজস্র চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই সাদিক ও তামান্নার। ইতি মধ্যে সাদিকের মা কামরুন্নাহারের চাকরি হয়েছে ঢাকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোঃ নাসিম তার কথা রেখেছেন। ঘাতক মিরু ও তার ভাইরা গ্রেফতার হয়েছে, ১৩ই ফেব্র“য়ারী রিমান্ডের শুনানী। ঘাতক কি শাস্তি পাবে নাকি মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পাবে? কারণ লক্ষ্মীপুরের বহুল আলোচিত এ্যাড. নুরুল ইসলাম হত্যার আসামীরা শাসক দলের কর্মী হবার কারনে মুক্তি পেয়েছিল। মিরুতো শাসক দলের নেতা। বছরের পর বছর পার হয়ে যাবার পর আজও সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি। ১১ই ফেব্র“য়ারী আবার এসেছে আজও মেঘের কান্না থামানি নতুন করে কান্না শুরু হয়েছে সাদিক ও তামান্নার। সমকাল সহ অনেকেই শিমুলের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শিমুলের শেষ ইচ্ছা ছিল তার সন্তান মানুষের মত মানুষ হবে। ক্যাডেট কলেজে ভর্তির মধ্যে দিয়ে সেই নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিল। ঘাতকের নির্মম বুলেট সবকিছু থামিয়ে দিল। প্রধানমন্ত্রী আপনি কি শিমুলের শেষ ইচ্ছা পূরণ করবেন।

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
Email:[email protected]

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন