‘অবাধ চলাফেরার দোষ দিয়ে কি হবে? ধর্ষকগুলো জানোয়ার’

  14-05-2017 06:19PM

পিএনএস ( রুমেল আহমেদ) : বাড়ছে ধর্ষণ, আতঙ্কে নারী! দেশে ধর্ষণ বেড়েছে ভয়াবহ হারে। রাজধানীর বনানীতে দুই তরুণীর ধর্ষণ নিয়ে আলোচনায় ঝড় বইছে সারা দেশে। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণে ধর্ষণ হয়েছে তা দেশের ইতিহাসে বিরল। শিশু, তরুণী, বৃদ্ধা এই ভয়াবহ ছোবল থেকে কেউই রক্ষা পাননি।এক জরিপে দেখা যায়, অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ধর্ষণ মামলার ৯০ শতাংশ আসামি খালাস পেয়ে যায়!

সারাদেশেই শিশুর ওপর এমন যৌন সহিংসতার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১৪৪ শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, এ সংখ্যা চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১৪৫। এ হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে ধর্ষিত হচ্ছে ৪৮ শিশু। ২০১৬ সালে ধর্ষণের শিকার শিশু ছিল ৪৪৬ জন। এ সংখ্যা ২০১৫ সালে ৫২১, ২০১৪ সালে ১৯৯, ২০১৩ সালে ১৭০ এবং ২০১২ সালে ৮৬। পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, উদ্বেগজনক হলেও দেশে শিশু ধর্ষণ থামছে না কিছুতেই।

এনিয়েও দেশের সাধারণ মানুষের মনে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। আর এ ক্ষোভগুলো প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। দেশের তরুণ প্রজন্মের মনে প্রশ্ন, অবাধ চলাফেরার দোষ দিয়ে কি হবে? ধর্ষণ মামলার আসামিদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এথেকে কিছুটা রক্ষা পেতে পারে। দেশের এই পরিস্থিতিতে এখনও যদি এর সঠিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এর ভয়াবহতা আরো ছড়িয়ে যাবে দ্রুতগতিতে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রুমেল আহমেন নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণ নিয়ে মনে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা পিএনএস পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলোঃ


[পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চা মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে। হিজাবী মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে। ঘরের মধ্যে মা-মেয়ে একসাথে ধর্ষিত হচ্ছে। স্কুলে ধর্ষিত হচ্ছে। মাদ্রাসায় ধর্ষিত হচ্ছে। কলেজে ধর্ষিত হচ্ছে। বাসে ধর্ষিত হচ্ছে। খারাপ পোশাকের দোষ দিয়ে কি হবে?

অবাধ চলাফেরার দোষ দিয়ে কি হবে? ধর্ষকগুলো জানোয়ার।তাইতো পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চা মেয়ে থেকে বৃদ্ধা, এমনকি ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না।ঐ নরপশুদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিলেই সমাজ ঠিক হয়ে যাবে। কি দরকার যুবতি মেয়ে বা মহিলাদের শালীন পোশাক পরার?শালীন পোশাকধারীরা, বাচ্চা মেয়ে ধর্ষিত হওয়া কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা?

একটা বাচ্চা মেয়ে। যে এখনো শিশু। যার মধ্যে যৌনতার কোন চিহ্ন প্রকাশ পায়নি। সে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা থেকে কি এই সিদ্ধান্ত নিবেন ধর্ষক ঐ বাচ্চা মেয়ে দেখে উত্তেজিত হয়ে ধর্ষণ করেছে। ঐ ধর্ষক কি জন্মগতভাবে ধর্ষক ছিল? নাকি কয়েক মহুর্তের ব্যবধানে ভালো মানুষ থেকে ধর্ষক হয়ে গেছ? যদি কেউ জন্মগত ধর্ষক না হয়। তবে কি হঠাৎ করে ধর্ষক হয়ে গেছে? এটা কখনো সম্ভব না। এর পেছনে দীর্ঘদিনে লুকায়িত কামনা দায়ী। যা অশ্লীল সিনেমা, অশ্লীল পত্রিকা, স্বাধীনতার নামে নারীর অশ্লীল পোশাক পরা, নারী পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ, ইসলামি ও নৈতিক শিক্ষার অভাব থেকে তৈরি হয়েছে।

কুমিরের লেজ খাঁজ কাটা গল্পের মতো বারবার অশালীন পোশাক, অবাধ মেলামেশা, অশ্লীলতার কথা বলছেন কেন?কয়েকটাকে ধরে ফাঁসি দিয়ে দিলেই হয়।

অশ্লীল সিনেমা, অশ্লীল পত্রিকা, স্বাধীনতার নামে নারীর অশ্লীল পোশাক পরা, নারী পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ, ইসলামি ও নৈতিক শিক্ষার অভাব, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই সবগুলো কোন না কোন টার প্রভাবে ধর্ষক তৈরি হচ্ছে। এগুলোর নিয়ন্ত্রণ না করে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব না। কয়েকটা ধর্ষক ধরে ফাঁসি দিয়ে দিলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না। ধর্ষক তৈরি কারখানা বন্ধ করতে হবে। আর না হয় শিকড় কাটা গাছে পানি ঢেলে পণ্ডশ্রম করা হবে, গাছটি কখনো সজিব হবেনা। তাই ইসলামি ও নৈতিক শিক্ষার প্রসার, সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়ন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করার কোন বিকল্প নাই।]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন