ইউপি নির্বাচন ও জঙ্গি উত্থান

  17-08-2016 04:39PM

পিএনএস (মো. রুহুল আমীন চৌধুরী) : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০১৬ কিছুদিন পূর্বে দলীয় প্রতীকে বিভিন্ন ধাপে ও তারিখে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। দলীয় কাউন্সিল প্রথায় প্রার্থী বাছাই নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দলীয় উচ্চ পর্যায়ের কতিপয় নেতৃবৃন্দের স্বজন প্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে প্রার্থীর মনোনায়ন চুড়ান্ত করা হয়েছে।

অধিকাংশ আসনে দলীয় প্রতিকের বাহিরে একাধিক বা ততোধিক বিদ্রোহী প্রার্থী সৃষ্টি করেই থেমে থাকেনি, দলীয় কর্মীরা ও ততোধিক ভাগে বিভক্ত হইয়া ক্ষমতার অপব্যাবহারের মাধ্যমে মারা-মারি, রহাজানি, খুন খারাবি এমনকি নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ভোট নেওয়া ও প্রশাসনকে ব্যাবহার করে ফলাফল পক্ষে নিতে কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনাও ঘটেছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে।

এমন পরিস্থিতিতে সংসদে বিরোধী দল অসন্তোষ প্রকাশ করলেও সংসদের বাহিরে বিরোধী দল বিএনপি শেষের কয়েক ধাপে নির্বাচনে অংশ নেয়নি অর্থাৎ নির্বাচন বয়কট করেছেন। তার পরেও নির্বাচন থেমে থাকেনি। যথারিতিতে নির্দিষ্ট সময় মতো নির্বাচন হয়ে গেছে। প্রায় ত্রিশ শতাংশ আসনে বিরোধী দলের প্রার্থী না থাকায় সরকার দলীয় একক প্রার্থী থাকায় কিংবা নিরাপত্তার অভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী না হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বনদিতায় নির্বাচিত হয়েছে।

একটি উচ্চ মানের প্রবোচন আছে। যেমন-“আত্তরত দৌলত আর হুকুমত কে না চায়?”সব সময় আমরা দেখে আসছি সরকার দলীয় কর্মীদের মাঝেই বেশির ভাগ এইরূপ প্রবণতা বেশী দেখা
যায়। দলীয় বলয়ে কোন না কোন উপায়ে নির্বাচিত হতে পারলেই বাজিমত। আমরা লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন সময়ে দলীয় একাধিক প্রার্থী বিদ্রোহী হওয়ায় কর্মীরাও একাধিক বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছে। এই অবস্থায় নির্বাচন পরবর্তী প্রতিশোধের ঝাল মেটাতে গিয়ে দাঙ্গামা-হাঙ্গামা, জ্বালাও পোড়াও ও খুন খারাপির মাধ্যমে কর্মীদের মাঝে বিভক্তি আরও চরম আকারে ধারন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংশতায় গুলি গুলির মাধ্যমে কোথায়ও হতাহত হতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও বাদ পরেনি।

সরকার যখন নির্বাচিত বিদ্রোহীরদেরকে বরণ করে নিয়েছেন, পাশা পাশি বিভক্ত কর্মী বৃন্দেকে অচিরেই বরণ করে নিয়ে সৃষ্টি হওয়া দলীয় অসন্তোষের দাবানল মিটিয়ে ফেলা প্রয়োজন। নতুবা বেশী দিন এই অবস্থা বিরাজ করলে ভবিষ্যতে দলের মধ্যেও ধস নেমে আসবে। একদিকে তথা কথিত ধর্মীয় উম্মাদনায় জঙ্গিরা মাথা চারা দিয়ে একাধিক ঘটনায় অনেক খুন খারাপি করে চলছে। অপরদিকে নির্বাচন পরবর্তী উম্মেদনা এ যেন “মরার উপর খাড়ার ঘা”। এখনই সরকারেকে দলীয় বিশৃংঙ্খলা মিটিয়ে দেশে শৃংঙ্খলা ফিরিয়ে আনা উচিৎ।

ইতিমধ্যে দেশে জঙ্গি উথ্যানের প্রেক্ষিত্তে সরকার ও সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যে বলে চলছেন দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকার করার জন্য বি.এন.পির মদদে ও জামাতের সংশ্লিষ্টতায় বা জামাত বি.এন.পি জঙ্গি নামে নিরহ মানুষ ও বিদেশীদের জিম্মি করে হত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে পরা শাক্তি নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, ইউপি নির্বাচনে সরকার দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিভাজনের মাধ্যমে নির্বচিত হওয়ার রেশ ধরে আত্মরক্ষার জন্য দৃষ্টিকটুর জঙ্গি সংশ্লিষ্টদের বিজয়ীদের অনেকেই না বুঝে বা অজ্ঞতার কারনে সামান্য অর্থ ও স্বার্থের বিনিময়ে সেই চিহ্নিত ও অসুভ ব্যক্তিদের দলে ভিরিয়ে রাজনীতিকে আরো আতংকিত করেছে।

সারাদেশে সকল ইউনিয়নে এরুপ সরকার ঘোষিত বি দলীয় জঙ্গি সংশ্লিষ্ট চক্রান্ত কারীদের দলে ভিরানোকে বা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করায় ব্যার্থ হলে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা দেখা দিবে। এমন কি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রাসাদ সরযন্ত্র অপ্রতিরোদ্ধ হয়ে দাড়াবে।

আসল কথায় আসা যাক যুগযুগ ধরে আমরা দেখে আসছি জনগন জাতীয় পর্যায়ে দলীয় ভাবে নিজ দলীয় প্রার্থীকে নির্বচিত করতে গিয়ে দলের মাঝে একটা বিভক্তি সৃষ্টি হতো ও অসন্তোষের মনোভাব গরে উঠত। সেই বিভক্তিও অসন্তোষ স্থানীয় নির্বাচনে এসে পরস্পর পরস্পরের সাথে মিটিয়ে যেত। এই একটি জায়াগায় এসে জনগন তার নিজের পছন্দ মতো নির্দলীয় একজন প্রার্থীকে দলের উর্ধে উঠে নির্বচিত করার সুযোগ পেত। ইচ্ছার বিরুদ্বে চাপিয়ে দেওয়া এই পদ্বতি পরিবর্তন করত একটি সর্বজন স্বীকৃত পন্থা অবলম্বনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সহজ ও স্বাবলীল করে জনগনের ইচ্ছার প্রতিফলন প্রতিষ্ঠিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আপমর বেশীর ভাগ জনগনে দাবি।

[লেখক : মো. রুহুল আমীন চৌধুরী, এই লেখাটির দায় একান্তইলেখকের ]

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন