ইনজুরিই হারালো বাংলাদেশকে

  16-01-2017 12:13PM

পিএনএস ডেস্ক: কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে এসেছে শতক। এটি তার ক্যারিয়ারে ১৫তম টেস্ট শতক। সঙ্গী রস টেলরও করেছেন অর্ধশতক। এই দুইজনের রানের দেয়াল ভাঙ্গতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাসকিন শুভাশিষদের।

২০২ রানের সময় শুভাশিষের বলে অফসাইডে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেছেন তরুণ মিরাজ। বিদায় নিলেন টেলর। ততক্ষণে তার উইলো থেকে এসেছে ৭৭ বলে ৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।

শুরুতেই জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ। উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন তরুণ এই অল রাউন্ডার। ওপেনার জিত রাভালকে (১৩) ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে পাঠান তিনি। তার পরের ওভারেই টম ল্যাথামের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নেন এ ডানহাতি স্পিনার। প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রান করা এ ওপেনার ১৬ রানে বোল্ড হন।

মেহেদী হাসান মিরাজ জোড়া আঘাতের পরও ভালো আশা দেখাতে পারেনি পরবর্তী বোলাররা। বাধ সাধলো কেইন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের অর্ধশতাধিক রানের জুটি। আর তাতেই ভেস্তে যায় টাইগারদের মিট মিট করে জ্বলতে থাকা জয়ের আশা। ফলাফল- বাংলাদেশ হেরে গেল ৭ উইকেটে। এ জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড।

প্রথম ইনিংসটা যতটা দুর্দান্ত ছিলো দ্বিতীয় ইনিংসটা ঠিক ততটাই বিভীষিকার মতো ছিলো মুশফিক কিংবা ইমরুলদের জন্য।

পঞ্চম দিনে খেলতে নেমে মোটেই সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। না পেরেছেন সাকিব, না পেরেছেন মুমিনুল। মুমনিুল যদিও ২৫ রান নিয়ে তুষ্ট থেকেছেন কিন্তু আগের ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান ফিরেছেন মাত্র শুণ্য রানে!

ওই ধাক্কা সামাল দিতে মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমান ভালো প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু টিম সাউদির একটি শর্ট বল মাথায় লেগে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। ক্রিজে সময় পার করার ভালো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি ৫৩ বলে ১৩ রান করে।

সাব্বির রহমানের টানা হাফসেঞ্চুরি শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার আশা জাগায়। কিন্তু টানা দুই ওভারে দুই উইকেট হারালে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯৭ বলে ৯ চারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি করেন সাব্বির। কিন্তু আর ৪টি বল খেলে ইনিংস সেরা ৫০ রান করে বোল্টের বলে বিজে ওয়াটলিংয়ের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। আগের ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বী ১ রানে সাউদির শিকার হন। এখানেই শেষ হতে পারত ইনিংস। কিন্তু চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠলেও ক্রিজে নামেন ইমরুল কায়েস।

২৮ রানে আগের দিন রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া ইমরুল ব্যক্তিগত রানের ঝুলিতে আরও ৮ রান যোগ করেন। ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অপর প্রান্তে শুভাশীষ রায় নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলে ৯ উইকেটেই শেষ হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। কারণ মুশফিকের আর নামা হয়নি। ২১৬ রানে লিড নেয় বাংলাদেশ।

ধকলটা শুরু হয়েছিলো চতুর্থ দিনের বাংলাদেশ ইনিংসের শুরু থেকেই। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ৫৯৫ রানের টার্গেটে খেরতে নেমে কিউইরা করে ৫৩৯ রান। তবুও এগিয়ে থাকে টাইগাররা।

দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তামিম-ইমরুল জুটি ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু ১৪ ওভারের সময় রান নিতে গিয়ে উরুতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ইমরুল। তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। তারপর আর রূপকথা লিখা হলো না টাইগারদের।

আর ঘুরে দাঁড়াতেই পারনি বাংলাদেশ। এরপর পঞ্চম দিনে এসে মুশফিকের ইনজুরি হারের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এরপর পুরো টিমটাই যেন অগোছালো হয়ে গেছে।

মোস্তাফিজকে দিয়েই নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দলের চোট-জর্জর হওয়ার শুরু। মুশফিক, মাশরাফি, তামিম, ইমরুল হয়ে সেটা যেন মহামারির মতোই ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশ শিবিরে। কাল সকালে ওয়েলিংটন থেকে ক্রাইস্টচার্চ যাওয়ার বিমানে তাই একটা প্রশ্নও সঙ্গী হবে দলের—এরপর কে?

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন