টাইগাররা প্রমাণ করেছেন তারা পারেন

  18-06-2019 05:37PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : গতকাল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেশবাসীকে দ্বিতীয় বিজয় উপহার দিয়েছেন আমাদের সন্তানেরা। আলহামদুলিল্লাহ, মারহাবা, মাশাল্লাহ। বাংলার দামাল ছেলেদের অভিনন্দন। তাদের প্রতি যারপরনাই কৃতজ্ঞতা। এই বীরত্ব আমরা শেষ খেলাটি পর্যন্ত দেখতে চাই। ইংল্যান্ডের মাঠে ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ স্লোগান আর লাল সবুজের পতাকার অবিরাম কসরত পুরো খেলায় দেশতে চায় ক্রীড়ামোদি দেশবাসী।

দলমত নির্বিশেষে গতকাল দেখা গেছে, দেশের প্রায় সর্বস্তরের মানুষ বেলা সাড়ে ৩টার আগে টিভি সেটের সামনে বসে গেছে। এ সময় রাজধানী ঢাকার রাজপথ অনেকটাই ছিল যানজট মুক্ত। যানবাহনেও তখন উপস্থিতি ছিল নগণ্য। যারা যানবাহনে ছিলেন, তাদের অনেককেই দেখা গেছে কারা ব্যাট করছে, কত রান; ক্রিকেট গেছে কিনা- খবর নিতে।

খেলা শুরুর পর ব্যস্ত সড়কের পাশে, বিশেষ করে টিভি বিক্রি করা শোরুমগুলোর সামনে ছিল পথচারিদের ভিড়। যেমনটা এক সময় ছিল ভয়েস অব আমেরিকার খবর জানার জন্য মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গতকালের টিভি শোরুমগুলোর সামনের ভিড় সে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো টিভি সেটের প্রতি দর্শকদের দৃষ্টি কোনোমতেই সরেনি। এমনকি ৩২১ রান প্রতিপক্ষ করার পরও নিজেদের দলের প্রতি ন্যূনতম আস্থাহীন হননি দর্শকরা। বরং ঝিম ধরে বসে ছিলেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

আমি ফুটবলের প্রতি ব্যক্তিগতভাবে দুর্বল। সুযোগ পেলে ছোটবেলায় খেলতাম। এমনকি প্রতিদিন এক আনা, দুই আনা, এমনকি চার আনা দিয়ে খেলতে হতো। পয়সার পার্থক্য নির্ভর করত গলি, কর্নার না মাঝ মাঠে খেলব। আমাদের গ্রামের রফিক মামাকে এই পয়সা দিয়ে খেলতে হতো। আজকের দিনে এসব শুনে অনেকেই হাসবেন।

গতকালের বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ক্রিকেট খেলাটির বড় অংশ দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সে সুবাদে মাঠে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দর্শকদের বাঁধভাঙ্গা বিজয়ের উল্লাস দেখেছি। উইন্ডিজকে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারানোর এ আনন্দে দেশের সর্বস্তরের মানুষও শরিক হন। ক্রীড়া নৈপণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে টাইগাররা নিজের নামের সার্থকতার প্রমাণ রেখেছেন ক্রীড়ামোদী বিশ্ববাসীর সামনে। তারা যে পারেন এবং ভবিষ্যতেও পারবেন, সে স্বাক্ষর তারা রেখেছেন।

আমাদের সাকিবের 'ব্যাক টু ব্যাক ' সেঞ্চুরি ও লিটনের 'শিল্পীর তুলিতে আঁকা' ব্যাটিংয়ে দেশবাসীর পাশাপাশি রীতিমতো মুগ্ধ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাইগারদের বিজয়ের সুখর ছড়িয়ে দিচ্ছেন উল্লুসিত সমর্থকরা। মূলত শক্তিশালী ব্যাটিং পারফরম্যান্সে দারুণ করেছেন বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা। বিজয়ের এই আনন্দে ভাসছে যেন পুরো দেশ।

ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে, ৩২২ রান তাড়া করা সহজ কথা নয়। তার ওপর বিজয় অর্জন বীরত্ব বৈকি। এই বীরত্ব যারা এনে দিয়েছেন, তাদের সবাইকে লাল সালাম। তাদের জন্য নিরন্তর শুভ কামনা। তাদের হাত ধরেই ক্রিকেট বিশ্বকাপ আমাদের হবে, হবে বাংলাদেশের। আমাদের তারকা খেলোয়াড়রা দেশবাসীকে বিশ্বকাপ এনে দিয়ে নিজেরা এবং আমাদের, সর্বোপরি দেশকে গৌরবের অংশীদার করবেন- সে প্রত্যাশা দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠীর।

প্রতিবেদক : বিশেষ প্রতিনিধি- পিএনএস

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন