বাংলাদেশের পক্ষে সেমিফাইনাল খেলা সম্ভব?

  18-02-2020 03:30PM

পিএনএস ডেস্ক : বাংলাদেশের মানুষের আবেগের আরেক নাম ক্রিকেট। টেস্ট স্ট্যাটাসের প্রায় কুড়ি বছর হলেও বড় কিছু পাওয়ার আক্ষেপ ছিল দীর্ঘ সময়। অবশেষে যুবা টাইগারদের হাত ধরে সে আক্ষেপ কিছুটা হলেও ঘুচেছে বাংলাদেশের। বিশ্বজয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে লাল-সবুজ। এ অনুপ্রেরণাকে সঙ্গী করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রমাণ করতে চায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।

নিজেদের এ আকাশসম প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পারবে বাংলাদেশের নারীরা? কেমন হয়েছে প্রস্তুতি? এবার কতটাই বা আশা করতে পারবে সমর্থকরা? চলুন সেগুলো মিলানোর চেষ্টা করি।

পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হয় ২০০৭ সালে। তবে নারীদের প্রথম আসর মাঠে গড়ায় ২০০৯ সালে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেবার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। ভাগ্যের শিকে ছিড়েনি পরের দুই আসরেও। তবে ২০১৪ সালে স্বাগতিক হওয়ার সুবাধে বিশ্বকাপে লড়াইয়ে নামে নারীরা।

প্রথম বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে ঘরের মাঠে জয়ের দেখা পায় নারীরা। সিলেটে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয় ৩ রানে। বাংলাদেশের করা ১১৫ রানের জবাবে লঙ্কান নারীরা থামে ১১২ রানে। পরবর্তী ৩ ম্যাচে পরাজয়ে থামতে হয় গ্রুপ পর্বে। এরপর আরো দুই আসরে যোগ্যতার বিচারে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। তবে জয় ধরা দেয়নি নারীদের ভাগ্যে।

প্রতিবারের তুলনায় এবার যথেষ্ঠ ভালো প্রস্তুতি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে সালমা-রুমানারা। এবারের বাংলাদেশ নারীরা অন্যবারের চেয়ে থাকবে অনেক বেশি চাঙা-অনুপ্রাণিত। কারণ, এবার নারী ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপের মঞ্চ মাতাবেন সাফল্যকে সঙ্গী করে।

আগের কোনো বিশ্বকাপের পূর্বে বাংলাদেশ নারী দল কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল জিততে পারেনি। তবে এবার অস্ট্রেলিয়াতে পাড়ি দিয়েছে এশিয়া কাপের সুখস্মৃতি সঙ্গী করে। যেখানে ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছে নারীরা। যাদের বিপক্ষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পার্থে মুখোমুখি হবে এসএ গেমস নারী ক্রিকেটে স্বর্ণজয়ীরা। এ ম্যাচের আগে নারীদের অনুপ্রেরণা জোগাবে ভারতের মাটিতে চার দলের ক্রিকেটে তাদের হারানোর সুখস্মৃতিও।

এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ জিতেছে ২০১৯ সালের নভেম্বরে। নারী ক্রিকেটাররা তাই বেশ উজ্জীবিত। অধিনায়ক সালমা খাতুন বলেন, ‘এশিয়া কাপের শিরোপা জয়টা ছিল আমাদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা। তবে আমরা এখন বিশ্বকাপে মনোযোগ দিতে চাই। আমরা নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার দিকে মন দিতে চাই।’

অধিনায়কের সুরে সুর মিলিয়ে সমর্থকরাও তাই চাইবে। কারণ বাংলাদেশের গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ছাড়া আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। যাদের বিপক্ষে সম্প্রতি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই ট্রান্স-তাসমানিয়ার বাকি দুই দলের একটার বিপক্ষে জয় পেলেই শেষ চারের টিকিট মিলে যেতে পারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের।

এদিকে বাংলাদেশ নারী দলের রুমানা আহমেদ গেলো বিগ ব্যাশে ব্রিসবেন হিটের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে জয়ের নায়িকাও ছিলেন তিনি। তাই তার দিকে চোখ থাকবে সমর্থকদের। বিবিএলের অভিজ্ঞতা নিয়ে রুমানা বলেন, ‘আমি বিগ ব্যাশ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তারা কিভাবে জিমে কাজ করে। তাদের ফিটনেস সচেতনতা। আমার জন্য বিগ ব্যাশ দারুণ সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে।’

গত এক বছরের পারফরম্যান্সে চোখ বুলালে দেখা যাবে দারুণ উন্নতি করেছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা। আগে যেখানে টি-টোয়েন্টিতে রান তুলতে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে করেছেন দারুণ উন্নতি। গত এক বছরে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০৯ রান করেছেন নিগার সুলতানা, তাও ৪৪ গড়ে। দুইশোর অধিক রান আছে সানজিদা ও ফারজানার। এছাড়াও বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন নাহিদা। নিয়েছেন ১৯ উইকেট। কম যাননি জাহানারা (১৬) ও সালমাও (১০)। তাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে ক্রিকেট অনুরাগী সমর্থকরা।

এবারই সবচেয়ে পরিণত এবং অভিজ্ঞ দল নিয়ে বিশ্বমঞ্চে নামছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তারা স্বপ্ন দেখছেন শেষ চারের। আর মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়। বড় কিছুর আশা করতে ক্ষতি কি? জানাই তো আছে, ‘আশাই জীবন, জীবনের শ্রী।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন